কলকাতার ট্রপিকাল মেডিসিন হাসপাতালের আউটডোর বিভাগে এক চিকিৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে। হাসপাতালের এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছিলেন কাঞ্চন। নিজের ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা করেন। হুমকি দেন। চিকিৎসককে বদলির হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসক মেহবুবার রহমান জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাই স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। তবে সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ খুবই ক্ষিপ্ত এই ঘটনায়। বুধবার সন্ধে নাগাদ এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করে কাঞ্চন এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ীর সঙ্গে।
কাঞ্চন বলেন, “দিদিশাশুড়ির রক্তচাপ মাপার কথা বলেছিলাম আমি। তাতেই খুব রূঢ় ভাবে জবাব দেন চিকিৎসক। আমায় বলা হয় ‘আপনি আমায় নির্দেশ দিচ্ছেন!’, তাতে আমি ‘সরি’ বলি। এই হাসপাতালের চিকিৎসকেরাই শ্রীময়ীর দিদাকে সারিয়ে তুলেছিলেন। সেখানে ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে এমন রূঢ় ব্যবহার পাব ভাবিনি।”
শ্রীময়ী জানান, গত ১০ দিন ধরে কলকাতার ট্রপিকাল মেডিসিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাঁর দিদা প্রভারানি মণ্ডল, চর্মরোগজনিত সমস্যার কারণে। তার পর সময় মতো ছাড়াও পেয়ে যান। এ দিন আবারও চেকআপ করানোর জন্য দিদাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন শ্রীময়ী এবং তাঁর স্বামী তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। আউটডোরে দেখানোর সময় নাকি চিকিৎসকের সঙ্গে বচসায় জড়ান কাঞ্চন। চিকি়ৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে অভিনেতা তথা বিধায়কের বিরুদ্ধে। তবে কাঞ্চন ও শ্রীময়ী দু’জনেই জানান, এ রকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। উল্টে ওই চিকিৎসক তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।
এ দিন ঠিক কী ঘটেছিল? আনন্দবাজার ডট কমকে শ্রীময়ী বলেছেন, “গত ১০ দিন ধরে আমার দিদা ভর্তি ছিলেন ট্রপিক্যাল হাসপাতালে। আজ রিপোর্ট দেখাতে গিয়েছিলাম। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখানোও হয়ে গিয়েছিল। উনি বলেছিলেন মে়ডিসিন বিভাগে দেখানোর জন্য।” অভিনেত্রী শ্রীময়ীর দিদার বয়স এখন ৮৬ বছর। হুইলচেয়ারে বসিয়ে তাঁকে নিয়ে যেতে হয়েছিল। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক রহমান আগেও শ্রীময়ীর দিদাকে দেখেছেন। অভিনেত্রী বললেন, “উনি তখনই বলেন চর্মরোগ বিভাগের বিষয় এটা। আমি কী করব দেখে? তখন আমরা বললাম, ওখান থেকেই আমাদের আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে।” এই কথাবার্তার পরেই তৈরি হয় অস্বস্তিকর পরিস্থিতির। শ্রীময়ী যোগ করেন, “আমি জানতে চেয়েছিলাম, দিদা এখন যে ওষুধটা খাচ্ছেন সেটাই খাবেন কি না। তাতেই আমায় বলা হয় আমি কি ডাক্তারি পাশ করেছি নাকি।” এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে তা আশা করেননি কাঞ্চন, শ্রীময়ীর কেউই। তাঁদের দাবি, আর পাঁচজনের মতো টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখানোর পরে এমন ঘটনা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না।