মঞ্চে অনিন্দিতা, ইশা, সৌরসেনী
বড় পর্দা আর ডিজিটালের সহাবস্থানের পাশাপাশি দুই মাধ্যমের একটা তর্কও বেধে রয়েছে। সেই বহুচর্চিত বিষয়টি নিয়েই সরগরম হয়ে উঠল কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বিতর্ক-মঞ্চ। উৎসবের দ্বিতীয় দিন রবিবার সন্ধেয় নন্দনের একতারা মুক্তমঞ্চ জমে উঠেছিল ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কি সিনেমার ভাষা বদলে দিচ্ছে’ শীর্ষক আলোচনায়। বড় পর্দার হয়ে কথা বললেন ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়, আবীর চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন চক্রবর্তী, হরনাথ চক্রবর্তী, অরিজিৎ দত্ত, ঋদ্ধি সেন। ডিজিটালের পক্ষে সৌরভ চক্রবর্তী, অনিন্দিতা বসু, ইশা সাহা, সৌরসেনী মৈত্ররা। সঞ্চালনায় সৌরভ দাস। দুই পক্ষে ভাগ করা হলেও শেষ পর্যন্ত সকলে সিনেমার হয়েই কথা বললেন। আর বিতর্ক-শেষে দর্শকের উদ্দেশে মোদ্দা কথাটা বলে উঠলেন উৎসবের চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী— ‘আপনারা সবাই হলে গিয়ে সিনেমা দেখবেন তো?’
অতিমারির পরিস্থিতিতে আগল খুলে দিলে আমজনতা কী করতে পারে, রবিবার বিকেলের নন্দন চত্বরে তা দেখা গিয়েছে। মঞ্চের উপরেও সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বিধিনিষেধ ছিল না তেমন। টিম ‘গুপ্তধন’, অর্থাৎ আবীর, অর্জুন, ধ্রুব বসেছিলেন পাশাপাশি। মঞ্চে কারও মুখে মাস্ক ছিল, কারও মুখে ছিল না। অর্জুন, আবীর এবং পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীর মুখে মাস্ক দেখা গিয়েছে। তবে অতিমারি নয়, এই সন্ধ্যায় ঘণ্টাখানেকের জন্য সকলেই ডুবে গিয়েছিলেন সিনেমা, তার বদলে যাওয়া ভাষা ও ভবিষ্যতের আলোচনায়। আবীরের কথায়, ‘‘এই ধরনের আলোচনায় আগে অনেক বার যোগ দিয়েছি। এই প্রথম দেখে ভাল লাগছে যে, তরুণ প্রজন্মের এত জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছে।’’ আবীরের বক্তব্যে উঠে এল সিনেমায় লগ্নি ও ঝুঁকির প্রসঙ্গ। আলোচনার পুরো সময়টাই খুনসুটি চলল আবীর আর সঞ্চালক সৌরভের। আবার কখনও সঞ্চালকের খুঁত ধরলেন রাজ।
স্যানিটাইজ়েশনে মন অর্জুন-আবীরের ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মুঠোফোনে ছবি দেখার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর বড় পর্দায় একসঙ্গে দুশো জনের হাসি-কান্না-করতালির ম্যাজিক যে আলাদা, সে কথাই স্পষ্ট হয়ে উঠল আলোচনায়। পরিচালক সৌরভ যেমন আর্কাইভের দিক থেকে ওটিটি-র উপযোগিতার কথা তুলে ধরলেন, তেমনই আর এক পরিচালক ধ্রুব ‘গুগাবাবা’র মতো ছবি বহুবার দেখেও পুরনো না হওয়ার উদাহরণ তুলে আনলেন। ঋদ্ধি মনে করিয়ে দিলেন, সিনেমার ভাষা ওটিটি পাল্টাতে পারে না, পাল্টেছে শুধু মাধ্যম। ওটিটি-তে সেন্সরশিপ প্রসঙ্গে পরিচালক সৌরভের প্রতি হরনাথের সরাসরি অভিযোগ, ‘‘তুমি যা সব রক্তারক্তি দেখাও... আমি দেখতে পারি না।’’ ডিজিটালের অভিনেত্রী অনিন্দিতার একটাও সিনেমা না করার আক্ষেপ ধরা পড়ল। আবার টিভি-ওটিটি-বড় পর্দা— তিনটি মাধ্যমেই কাজ করা ইশা বললেন, তাঁর কাছে সবটাই কাজ, মাধ্যম নিয়ে বাছবিচার তিনি করেন না।
‘সিনেমা দীর্ঘজীবী হোক’, এই বার্তা দিয়েই শেষ হল সভা। সেখানেই বড় এলইডি-তে শুরু হল ‘দাদার কীর্তি’। কানায়-কানায় না হলেও আসন কিন্তু তখনও পূর্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy