Advertisement
E-Paper

লেডিজ ম্যান

কঙ্গনার সঙ্গে তাঁর আইনি লড়াই ক্রমশ খারাপ দিকেই বাঁক নিচ্ছে। হৃতিক রোশনের বহু দিনের ‘গুড বয়’ ইমেজ কি তা হলে এতদিনে ভাঙল? লিখছেন পারিবারিক বন্ধু শালিনী মলহোত্রসমস্যা থেকে আর নিষ্কৃতি নেই হৃতিক রোশনের! বছর কয়েক হল বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে সুজানের সঙ্গে। সেই সম্পর্কছেদের তিক্ততা মিটতে না মিটতেই এসে পড়ল কঙ্গনা-পর্ব।

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২১

গ্রিক দেবতার মতো শরীরের ভাস্কর্য! তেমনই পৌরুষের টান।

হৃতিক রোশন মানেই দুর্নিবার আকর্ষণ। একের পর এক নারী তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন। প্রেমে পড়েন, প্রেমে হাবুডুবু খান। তার পর সেই মোহও ভঙ্গ হয়। প্রতিটা প্রেমই রেখে যায় কিছু সমস্যা।

সমস্যা থেকে আর নিষ্কৃতি নেই হৃতিক রোশনের!

বছর কয়েক হল বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে সুজানের সঙ্গে। সেই সম্পর্কছেদের তিক্ততা মিটতে না মিটতেই এসে পড়ল কঙ্গনা-পর্ব।

২০১৩ সালে ‘কৃশ থ্রি’র শ্যুটিংয়ের সময় থেকেই কঙ্গনা– হৃতিক প্রেমপর্ব শুরু হয়। হৃতিক নাকি বিয়েও করতে চেয়েছিলেন কঙ্গনাকে। তখনও সুজানের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। কিন্তু সময় যত গড়াল কঙ্গনা বুঝলেন সুজানকে ডিভোর্স করার কোনও পরিকল্পনাই নেই হৃতিকের। ঝামেলা আরও বাড়তে থাকে। আইনি নোটিসে হৃতিকও এই সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। এর পর কঙ্গনার দিক থেকে উকিলের চিঠি পেতেও দেরি হয়নি হৃতিক রোশনের।

শুধু কি তাই? তিন দিন আগে কঙ্গনার বোন রঙ্গোলির নামে এফআইআর করে আরও ফ্যাসাদে পড়েছেন হৃতিক। ঘনিষ্ঠ মহলে কঙ্গনা বলেছেন বোনের এই অপমান তিনি কোনও মতেই সহ্য করবেন না। তাঁর উকিল রিজওয়ান সিদ্দিকিকে হৃতিকের বিরুদ্ধে আরও আঁটঘাঁট বেঁধে নামতে নির্দেশও দিয়েছেন।

কিন্তু এত সবের পর একটাই ব্যাপার প্রমাণ হচ্ছে বারবার। যখন সুজান আঙুল তুলেছিলেন হৃতিকের দিকে তখন অনেকেরই মনে হয়েছিল সেটা ভুল। কিন্তু আজকে দাঁড়িয়ে অবশেষে মনে হয় সুজান যেন এ বার একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবেন।

হৃতিক-সুজানের ডিভোর্সের পিছনে লোকের অভিযোগের আঙুল ছিল সুজানের দিকেই। অনেকের মতে অর্জুন রামপালের সঙ্গে সুজানের সম্পর্কই ওঁদের নিয়ে গিয়েছিল কোর্টে। সুজানের পরিবার যতই অর্জুন-সুজান সম্পর্ক ধামাচাপা দিতে চান না কেন, সবাই জানত অর্জুনের দিকে ঝুঁকেছেন সুজান।

অনেকে সেই সময় দ্বিধাবিভক্ত ছিলেন। তাঁদের প্রশ্ন ছিল বিবাহিত পুরুষ হিসেবে হৃতিক একটার পর একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছিলেন যখন, তখন সবাই তা মেনে নিয়েছিল। কিন্তু সুজান প্রেম করার সঙ্গে সঙ্গেই ‘মরালিটি’র প্রশ্ন উঠতে থাকে। এবং এখান থেকেই এই কপির সূত্রপাত।

কোনও মতেই কিন্তু হৃতিক ধোয়া তুলসী পাতা নন। বিয়ের প্রথম দিন থেকেই হৃতিকের জীবনে আসা নারীদের নিয়ে ভাবতে হয়েছে সুজানকে। করিনা অধ্যায় (অনেকের মতে যেটা চলেছিল বিয়ের পরেও) শেষ হওয়ার পর শুরু হল জোয়া আখতার-পর্ব। শোনা যায়, ‘লাক বাই চান্স’ থেকে শুরু হয়েছিল প্রেমপর্ব। সে খবর মিডিয়ার সামনে আসতেও সময় লাগেনি। হৃতিক যতই ভাল মানুষ সেজে অস্বীকার করুন না কেন, যতই বলুন না কেন ‘জোয়া শুধু ভাল বন্ধু’... হৃতিক-সুজানের বৈবাহিক সম্পর্কের শেষের শুরু কিন্তু সে দিন থেকেই হয়েছিল।

কিছু দিন যেতে না যেতেই হৃতিকের জীবনে প্রবেশ আর এক নায়িকার, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। সিঙ্গাপুরে ‘কৃশ ২’‌য়ের শ্যুটিং থেকেই দানা বাঁধতে শুরু করে হৃতিক-প্রিয়ঙ্কার সম্পর্ক। অন্য সবগুলোর মতোও এই সম্পর্কও চাপা থাকেনি। প্রিয়ঙ্কারও সময়টা ভাল যাচ্ছিল না। বাবা ডা. চোপড়ার ক্যানসার ধরা পড়েছে। বাবার চিকিৎসা নিয়ে দিশাহীন প্রিয়ঙ্কা। এগিয়ে এল হৃতিকের চওড়া কাঁধ। শ্যুট বন্ধ রেখে প্রিয়ঙ্কার বাবাকে নিয়ে অপারেশনের জন্য আমেরিকা উড়ে গেলেন তিনি। প্রিয়ঙ্কা নিজেও অনেকবার সে কথা বলেছেন, প্রকাশ্যে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রোশনদের।

অন্য নায়িকার বিপদে স্বামীর এগিয়ে যাওয়াকে খারাপ চোখে দেখার মেয়ে নন সুজান, তবু প্রিয়ঙ্কা-হৃতিকের কাছাকাছি চলে আসাকেও মেনে নিতে পারেনি তিনি।

সেই সময়ই প্রথমবার, হৃত্বিকদের বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যান সুজান।

তখন হৃতিকের রাগ গিয়ে পড়ল মিডিয়ার ওপর। ওঁর বক্তব্য ছিল, যত সব বানানো গল্প ফাঁদে মিডিয়া। সুজানের প্রতি তাঁর প্রেমে নাকি এতটুকু ভাঁটা পড়েনি।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এর পর হৃতিকের জীবনে এলেন স্প্যানিশ অভিনেত্রী বারবারা মোরি। এই অধ্যায়ের শুরুও শ্যুটিং থেকেই। ‘কাইটস’ ছবির সেটে হৃতিক মজে গেলেন বারবারায়। ‘কফি উইথ কর্ণ’য় হৃতিক যখন বারবারা মোরিকে ‘সেক্সি কো-স্টার’ বলেন, লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলেন সুজান। অবাক হয়েছিলেন রাকেশ আর পিঙ্কি রোশনও। এ বার আর চুপ করে বসে থাকেননি সঞ্জয় আর জরিন খান। মেয়ের সমস্যায় এগিয়ে আসেন তাঁরাও। সমস্যা বুঝে হৃতিক নতুন প্রেমিকার জন্য জায়গাটা বদলে ফেললেন। প্রেমপর্ব চলতে থাকল ইউরোপে।

অনেকে বলেন, জোয়া আখতারের ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’র লোকেশন শ্যুটিংয়েও নাকি হৃতিক নিয়মিত দেখা করতেন বারবারার সঙ্গে। কিন্তু বাড়িতে তত দিনে সমস্যা আরও জটিলতর হয়েছে। বারবারার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া হৃতিকের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছিল না।

ব্যস... প্রবেশ ঘটল ক্যাটরিনা কইফের। এ বারও আলাপ সেটে। আর সেই আলাপ ঢলে পড়ল মুগ্ধতায়। ক্যাটরিনার কাছে নাকি ছিল হৃতিকের সব সমস্যার সমাধান। এ সম্পর্কও চাপা থাকল না...

হঠাৎই একদিন না বলে কয়ে স্পেনে হাজির হলেন সুজান। সঙ্গে ছেলে হৃদান আর হৃহান। আশা ছিল, ছেলেদের দেখে যদি স্বামীর সম্বিৎ ফেরে। হয়তো এটাই ছিল সুজানের দিক থেকে বিয়ে টিকিয়ে রাখার শেষ চেষ্টা। কিন্তু সেটা আর হওয়ার নয়। হৃতিক-সুজানের সম্পর্কের ফাটল চওড়া হয়ে গিয়েছিল অনেকটাই। ও দিকে মুম্বইয়ে রাত তিনটেয় সমুদ্রসৈকতে হৃতিককে দেখা গেল ক্যাটরিনার সঙ্গে। যে ক্যামেরাম্যান ছবিটা তুলতে গিয়েছিলেন, তাঁকে ফিরতে হল ভাঙা ক্যামেরা আর হুমকি নিয়ে।

হৃতিকের জীবনে আসা মহিলাদের ভিড় যদি সুজানের সমস্যার একটা দিক হয়, তবে আর একটা ব্যাপারও অসহ্য করে তুলেছিল সুজানকে। সেটা হল, হৃতিকের পরিবার। তাঁদের সঙ্গে থাকা বা তাঁদের দাবির সঙ্গে নিজেকে আর মেলাতে পারছিলেন না সুজান। হৃতিকের বোন সুনয়না তখন সদ্য ডিভোর্সের পর ফিরে এসেছেন বাপের বাড়িতে। সুনয়নার খামখেয়ালিপনা সহ্য করতে অসুবিধা হচ্ছিল সুজানের। হৃতিক তখন বাড়ি নেই, শ্যুটিংয়ের কাজে সবসময় বিদেশে।

‘কৃশ ৩’ও খুব একটা ভাল খবর নিয়ে এল না হৃতিক-সুজানের জীবনে। হৃতিকের জীবনে প্রবেশ ঘটল কঙ্গনার। আর সে খবর পেতেও সময় লাগল না সুজানের।

আর পারলেন না সুজান। ছেলেদের নিয়ে অবশেষে রোশনদের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এলেন তিনি। উঠলেন বাপের বাড়িতে। এই সময় সুজানের জীবনেও এসে পড়েন অর্জুন রামপাল। সম্পর্ক গড়ে উঠতেও সময় লাগেনি, কারণ বন্ধুত্বটা আগে থেকেই ছিল জোরালো। সুজানের সম্পর্কের গুজবে হৃতিক অবহেলার মুখভঙ্গি করতেই পারেন, কিন্তু সুজানও কি অনেক সহ্য করেননি!

হৃতিক যতই চেষ্টা করুন না কেন কঙ্গনার সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করতে। অথবা বলার চেষ্টা করুন না কেন, তিনি কঙ্গনার গোপনীয়তা রক্ষা করতে চান, দেওয়ালের লেখা কিন্তু পরিষ্কার।

hritik roshan bollywood entertainment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy