Advertisement
E-Paper

উলভারিন সিরিজের সেরা ছবি

তিনিও বৃদ্ধ হলেন। সুপারহিরোদের দুনিয়ায় মাঝবয়সি হিরো খুব একটা চোখে পড়ে না। ‘লোগান’ সে অর্থে ব্যতিক্রম। সুপারহিরোর ছবি দেখতে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল, এমনটাও সচরাচর হয় না! এ ছবি সে দিক থেকেও আলাদা।

অরিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০০:২৭

তিনিও বৃদ্ধ হলেন।

সুপারহিরোদের দুনিয়ায় মাঝবয়সি হিরো খুব একটা চোখে পড়ে না। ‘লোগান’ সে অর্থে ব্যতিক্রম। সুপারহিরোর ছবি দেখতে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল, এমনটাও সচরাচর হয় না! এ ছবি সে দিক থেকেও আলাদা।

‘উলভারিন’ সিরিজের শেষ ছবি ‘লোগান’। প্রেক্ষাপট ২০২৯ সালের অরাজক আমেরিকা। সেখানে নিষিদ্ধ মিউট্যান্ট। প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বয়সের ছাপ পড়েছে লোগানের (হিউ জ্যাকম্যান) শরীরে। এখন থাকে মেক্সিকোয়। প্রোফেসর এক্সের (প্যাট্রিক স্টুয়ার্ট) সঙ্গে। প্রোফেসরও অসুস্থ, মাঝেমধ্যে পাগলের মতো হয়ে ওঠে। তার ওষুধ কেনার টাকা জোগাড় করতে গাড়ি চালায় লোগান।

স্পাইডারম্যানকে মোপেড চেপে পিৎজা ডেলিভারি করতে দেখে খটকা লাগে না। সে ঠান্ডা মাথার লালুভুলু ছেলে। তা বলে মাথাগরম লোগান লিমুজিন চালিয়ে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের প্রম পার্টিতে নিয়ে যাবে! হ্যাঁ, এতটাই বদলে গিয়েছে সে। নিজের নখেই এখন আরথ্রাইটিস।

এমন সময় লোগানের জীবনে আসে আরেক সমস্যা। গ্যাব্রিয়েলা বছর এগারোর এক মেয়েকে নিয়ে আসে তার কাছে। লরা (ড্যাফনে কিন) নামের সেই মেয়েকে নিরাপদ ইডেনে পৌছে দিতে হবে তাকে। লরা আসলে লোগানেরই মেয়ে। তার ডিএনএ থেকেই তৈরি। তবে সুপারহিরোর যাত্রা কবেই বা আর মসৃণ হয়েছে! গন্তব্যে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভিলেন এক্স-২৪, লোগানের ক্লোন।

এতটা পড়ে যদি ভাবেন, বাকিটা তো জানা, লাস্ট সিনে স্লো মোশনে ভিলেনকে শেষ করবে সুপারহিরো, তা হলে ভুল করবেন।

এ সুপারহিরো আলাদা। এ ছবিও। ক্রিস্টোফার নোলান ‘ব্যাটম্যান’ ফ্রাঞ্চাইজিকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। পরিচালক ও কাহিনিকার জেমস ম্যানগোল্ড সেটাই দিলেন ‘উলভারিন’ ফ্রাঞ্চাইজিকে। হবে না-ই বা কেন, তিনিই তো বানিয়েছিলেন ‘ওয়াক দ্য লাইন’।

এ ছবিতে ভিলেনের সঙ্গে লড়াইতে মারা যায় লোগান। প্রথমে যে মন খারাপের কথা বলছিলাম, সেটা এই ক্লাইম্যাক্সের জন্য। হিউ জ্যাকম্যান মনে হয় সেরা অভিনয়টা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তাঁর শেষ উলভারিনের জন্য। ড্যাফনে কিনও দুর্দান্ত। ‘এক্স-মেন’ সিরিজে তাঁকে দেখতে পেলে ভালই লাগবে।

‘লোগান’ ছবি হিসেবে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রমী। প্রথমত, এটা একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ গল্প। ‘উলভারিন’ ফ্রাঞ্চাইজির শেষ ছবি। কিন্তু আগের ছবিগুলো না দেখলেও বুঝতে কোনও অসুবিধা হবে না। পরিচালকও আগের গল্প দেখিয়ে ছবির দৈর্ঘ্য অযথা বাড়াননি। দ্বিতীয়ত, অন্য অনেক সুপারহিরোর মতো আমেরিকা বা বিশ্বকে বাঁচানো লোগানের উদ্দেশ্য নয়। তার লড়াই মূলত নিজের সঙ্গে।

তৃতীয়ত, এই সুপারহিরো সামাজিকও বটে। অনেক বেশি রক্তমাংসের মানুষ সে। বৃদ্ধ প্রোফেসর এক্সকে দেখভাল করে পুত্রস্নেহে। দু’জনের কথোপকথন শুনে মনে হবে, যেন বালিগঞ্জের কোনও মধ্যবিত্ত বাড়ির কথাবার্তা চলছে। ক্লাইম্যাক্সের কথা তো আগেই বলা হয়েছে।

আর একটা জায়গায়ও বাজিমাত করল ‘লোগান’। কমিক্‌সের দুনিয়ায় ডিসি কমিক্‌স আর মার্ভেলের দ্বন্দ্ব সুপরিচিত। মার্ভেলের নতুন ফ্রাঞ্চাইজি ‘অ্যান্ট ম্যান’ বা ‘ডেড পুল’ কিন্তু বক্স অফিস আর সমালোচকদের প্রশংসা দুই-ই পেয়েছে। ডিসি সেদিক থেকে এখনও পিছিয়ে। ‘লোগান’ লিডটা আরও একটু বাড়িয়ে দিল।

একটাই খটকা, ২০২৯ সালে টেক্সাস-মেক্সিকো বর্ডারে যেন দেওয়াল দেখলাম! ডোনাল্ড ট্রাম্প কি তবে পাঁচিলটা তুলেই ছাড়লেন?

হতেও পারে। সুপারহিরোদেরও যে বয়স বাড়ে!

Logan Movie Reviews
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy