মানালি-অভিমন্যু। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ
শুরুতে ফোটোসেশন
‘‘আরে! ওকে বলছেন, কাঁধে হাত রাখার কথা? ও কিন্তু বড্ড লাজুক....’’ বলতে বলতে অভিমন্যুর হাত ধরে মানালি বোঝালেন কী ভাবে শট নেওয়া হবে। স্বভাব লাজুক অভিমন্যুও মেনে নিলেন কথাটা। অভিনেত্রী মানালি দে ও পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। সম্পর্ক নিয়ে কখনওই প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি এই কমিটেড কাপ্ল। একে-অপরের ‘বিশেষ বন্ধু’ বলেই পাশ কাটিয়েছেন এত দিন। তবে এ বার আর লুকোছাপা নয়... স্টেটাস বলছে, ইন আ রিলেশনশিপ!
পরিচালনায় কে?
ফোটোসেশন পর্ব চুকিয়ে মাটির ভাঁড়ের চায়ে চুমুক বসালেন অভিমন্যু। মানালির জন্য এল কোল্ড কফি। ব্যক্তিগত জীবনেও কি অভিমন্যুকে চালনা করেন মানালি? ‘‘দু’জনের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভাল বলে আমরা বুঝে যাই, কে কী চাইছে। মানালি অল্পে রেগে যায়। আগে খুব ঝগ়ড়া হতো। কিন্তু এখন আমি চুপ করে যাই বলে ঝগড়া বেশি এগোয় না,’’ জবাব অভিমন্যুর। পরিচালক মানালির আবেগে যেমন রাশ টানেন, তেমনই আবার তাঁকে ডিসিপ্লিনও শেখান। অভিমন্যুর উৎসাহেই মানালির বই পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। পরিচালকের লেখার প্রথম শ্রোতাও তিনিই। পরিবর্তে অভিমন্যুকে ‘সোশ্যালাইজ়’ করার দায়িত্ব নিয়েছেন মানালি।
পরিচয়-পূর্বরাগ পেরিয়ে পরিণয়
শুরুতে সম্পর্কটা হাই–হ্যালোর গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ ছিল। সম্পর্ক গাঢ় হয় রাজ চক্রবর্তীর প্রোডাকশনে ‘নিমকি ফুলকি’ ছবিতে কাজের সুবাদে। যে রাজকে অভিমন্যু নিজের গ়ডফাদার মনে করেন। সেখানেই মানালির অভিনয় মুগ্ধ করেছিল অভিমন্যুকে। আর অভিনেতাদের যে ভাবে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, তা দেখে মানালির ভাল লেগে যায় তাঁকে। লাজুক গলায় অভিমন্যু বলছিলেন, ‘‘মানালি প্রচণ্ড অ্যাক্টিভ। শুটিংয়ের বাইরে অনেক কিছুতেই এগিয়ে আসত। ফর্মাল সম্পর্ক থেকে আমরা ধীরে ধীরে কখন যে খুব কাছের বন্ধু হয়ে উঠলাম...’’ পাশ থেকে মানালি বললেন, ‘‘কখনও গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড ব্যাপারটা আসেনি। সময়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা বয়ে চলেছে।’’ একটা বিষয়ে দু’জনেই একমত, ‘‘সম্পর্ক রাখার একমাত্র দাওয়াই বন্ধুত্ব।’’ দুদ্দাড় বেরিয়ে পড়ার অভ্যাস থাকলেও দু’জনের কেউ-ই নাকি রোম্যান্টিক নন! ছোটখাটো ব্যাপার যেমন দু’জনে শেয়ার করেন, তেমনই কাজে ব্যস্ত থাকলে কেউ কাউকে বিরক্ত করেন না। দুই বাড়িতেই দু’জনের অবাধ যাতায়াত। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বিয়ের প্রসঙ্গ চলে আসে। ‘‘আপাতত কেরিয়ার নিয়ে দু’জনেই ব্যস্ত। তাই এ বছরই বিয়ে নয়,’’ বললেন মানালি।
আরও পড়ুন: ময়ূরাক্ষীর সাফল্যের পর অতনুর পরের ছবিতেও প্রসেনজিৎ
প্রসঙ্গ প্রাক্তন
‘‘সপ্তক আর আমার মধ্যে কোনও মিল নেই। যে কারণে সম্পর্কটা এগোল না,’’ বিচ্ছেদের পরে প্রাক্তনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখায় বিশ্বাসী নন মানালি। অনিন্দিতা-অভিমন্যুও তো ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন। ‘‘অনিন্দিতা ভাল মেয়ে। আমিও বোধহয় খারাপ নই। কিন্তু আমাদের একসঙ্গে না থাকার কারণটা দু’জনের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ওই সম্পর্কটা থেকেই শিক্ষা নিয়ে এ বার আর তাড়াহুড়ো নয়,’’ স্পষ্ট স্বীকারোক্তি অভিমন্যুর।
একসঙ্গে এক ছবিতে...
‘‘ঠিক করেছি একসঙ্গে কোনও কাজ করব না। দু’জনেই নিজেদের জায়গাটা খেটে তৈরি করেছি। অভিমন্যুর ছবি মানেই মানালি করবে বা অভিমন্যুকে ধরে মানালি আরও দুটো ছবি বাড়তি পেয়ে যাচ্ছে, এই কথাগুলো কেউ যেন না বলতে পারে,’’ স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে মানালি। তাঁর দুটো ছবির শুটিং চলছে। হাতে আছে আরও একটি ছবি। পরিণত প্রেমের গল্প নিয়ে অভিমন্যু বানিয়েছেন ‘পিয়া রে’। এই ছবি নিয়ে তাঁর বেশ আশা। পরের ছবির গল্প আবার আরবান লাভস্টোরি। অ্যাকশন, কমেডি নিয়েও ছবি করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে একসঙ্গে প্রোডাকশন হাউস খোলারও ইচ্ছে রয়েছে। যদিও ব্যবসায়িক জ্ঞান পরিচালকের একদম নেই। এ ব্যাপারটি অভিনেত্রী আবার ভালই বোঝেন বলে স্বীকার করলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy