Advertisement
E-Paper

কসমেটিক সার্জারিতে খুঁত ঢাকছেন নুসরত, মিমির মতো টলি নায়িকারাও?

নিজের রূপ নিয়ে কেউই সন্তুষ্ট নন। ঠোঁট, নাক, ত্বক চাইলেই বদলে ফেলা যায়। সেই অভিযানে সামিল কারা?নিজের রূপ নিয়ে কেউই সন্তুষ্ট নন। ঠোঁট, নাক, ত্বক চাইলেই বদলে ফেলা যায়। সেই অভিযানে সামিল কারা?

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০

সিনেমা যদি বলিউডের অনুকরণে হয়, তা হলে রূপটান নয় কেন? যে ট্রেন্ড বলি সেলেবরা শুরু করেন, সেটা এখানেও কপি-পেস্ট হয়ে যায়! তা বিউটি ট্রিটমেন্টই হোক বা কসমেটিক সার্জারি। বোটক্স, পিলিং, ফিলার্স, ফেস লিফট এগুলো টলিউড ইন্ডাস্ট্রির অভিধানে এখন নিয়মিত শব্দ।

টলিউডের ট্রেন্ড

আরব সাগরের ঢেউয়ের ধাক্কা এসে লেগেছে টলিউডেও। বলিরেখা, দাগ, পাতলা চুল, অতিরিক্ত চর্বি সব কিছুরই দাওয়াই আছে। বদলে ফেলা যায় নাক, চোয়াল, হাসি। এখন প্রশ্ন, এ সব করছেন কারা? উজ্জ্বল, ঝলমলে ত্বকের জন্য প্রায় সব নায়িকাই বিশেষজ্ঞের কাছে যান। নিয়মিত ওয়্যাক্স করানোর ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে লে‌জ়ার ট্রিটমেন্ট তো করিয়ে ফেলেছেন টলিউডের প্রায় সব নায়িকাই। কিন্তু এগুলো গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রির প্রাথমিক পাঠ।

এখনকার হটেস্ট ট্রেন্ড ফিলার্স। ট্রেন্ডে রয়েছে পাউটি লিপস। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলেবদের ফলো করলেই বোঝা যাবে কারা এগুলো করিয়েছেন। নুসরত জাহান কিংবা মিমি চক্রবর্তীর সাম্প্রতিক ছবি দেখলে ঠোঁট এবং চোয়ালের শেপের পরিবর্তন বোঝা যায়। মিমিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এই প্রশ্নটা আমাকে অনেক পুরুষ সহকর্মীই করেছেন। নিজের মুখে ছুরি-কাঁচি চালানোর কথা আমি ভাবতেই পারি না। ত্বকের পরিচর্যা করি। কিন্তু এই বাহ্যিক জিনিসের চেয়ে ভিতর থেকে সুস্থ হওয়াটা আসল।’’ কিন্তু অভিনেত্রীর আগের ছবির সঙ্গে এখনকার মুখের আদল মেলালে ফারাক চোখে পড়ে। ‘‘আমি যখন ‘গানের ওপারে’ করেছিলাম, তখন আমার চিক বোন খুব স্পষ্ট ছিল। মাঝের কিছু বছরে আমার মুখে বেশ চর্বি জমেছিল। ডায়েট-এক্সারসাইজ়েই সেটা কমিয়ে ফেলেছি। যে ধরনের ট্রিটমেন্টের কথা আপনারা বলছেন, সেটা কলকাতায় করা হয় কি না আমি জানি না। আর এই ট্রিটমেন্টের খরচ কম নাকি!’’

অনেকে চোখের তলার কালি বা রেখা মসৃণ করেন। চামড়া টানটান রাখার জন্য ফেস লিফট করেন। অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের ঝকঝকে ত্বকের পিছনেও রহস্য আছে। শোনা যায়, চোখের তলার ফাইন লাইন ঠিক করানোর ট্রিটমেন্ট করিয়েছেন তিনি।

খুব কম সেলেবই স্বীকার করবেন, ঠিক কী ধরনের ট্রিটমেন্ট তাঁরা করে থাকেন। রাইমা সেন যেমন বলছেন, ‘‘লে‌জ়ারের মাধ্যমে হেয়ার রিমুভ বা গ্ল্যামারস স্কিনের জন্য কিছু বেসিক জিনিস তো সকলেই করে। তবে আমার ফিলার্স (লিপস) করানোর খুব ইচ্ছে আছে, কিন্তু মা এগুলো একদম পছন্দ করেন না!’’ শোনা যায়, দাঁতের শেপে কিছু পরিবর্তন করিয়েছিলেন রাইমা। যাতে তাঁর হাসি আরও সুন্দর হয়। শহরের এক নামজাদা মেকআপ আর্টিস্ট বলছিলেন, ‘‘স্মাইল প্রোফাইল বদলে ফেলাটাও এখন ট্রেন্ড। দাঁতের সেটিংয়ের অদল-বদল করলেই হয়ে যায়। আমরা অনেককে সাজেস্টও করি।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিনেত্রী জানালেন, বছর তিনেক আগে ঠোঁটে ফিলার্স করিয়েছিলেন।

দু’-এক জন সেলেব এ নিয়ে মন্তব্য করলেও অধিকাংশই চুপ। নুসরত জাহানের আগের ছবির সঙ্গে বর্তমান ছবির আকাশ-পাতাল তফাত। তাঁর পাউটি লিপস দেখে অনেকে বলেন, তিনি ফিলার্স করিয়েছেন। চোয়ালের শেপও বদলে গিয়েছে।

হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টও স্বাভাবিক ব্যাপার এখন। এই ট্রিটমেন্ট এক বার করিয়ে নিলে চুল নিয়ে নিশ্চিন্ত। ইন্ডাস্ট্রিতে কান পাতলে শোনা যায়, জিৎও নাকি এই ধরনের ট্রিটমেন্ট করিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞ বক্তব্য

‘‘শো বিজ়নেসে থাকলে সুন্দর দেখানোটা আবশ্যক। এতে নেতিবাচক কিছু নেই। শুধু সেলেব নন, সাধারণ মানুষও আমাদের ক্লায়েন্ট,’’ বলছিলেন কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট পুনম নেগি। ঠিক কী ধরনের ট্রিটমেন্টের দিকে ঝোঁক সেলেবদের? ‘‘লেজ়ার, ফিলার্স, মসৃণ ত্বকের চাহিদা, ফেস লিফট এগুলোই মূলত করেন সেলেবরা। এখন প্রযুক্তি এত উন্নত হয়ে গিয়েছে, যে কোনও দাগ তুলে ফেলাও সহজ,’’ বলছিলেন পুনম। জানালেন, অনেকে ট্যাটু তোলাতেও আসেন তাঁদের কাছে।

তবে বোটক্স বা ফিলার্সের নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিস্ট অ্যান্ড হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জেন ডাক্তার কুন্তল দেব বর্মা বলছেন, ‘‘ছ’মাসের বেশি বোটক্সের প্রভাব থাকে না। লিপ ফিলার্সের মেয়াদও এক-দেড় বছর।’’ সেলেবদের মুখের আদল দেখে ট্রিটমেন্টের পরামর্শ দেন তাঁরা। তিনি জানালেন, চিক বোন ঠিক করার প্রবণতা, মুখের মেদ কমিয়ে শার্প ফিচার্সের ট্রেন্ড ক্রমশ বাড়ছে। সেলেবদের মধ্যে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের ট্রেন্ডও খুব বেশি।

সৌন্দর্যই যেখানে মোদ্দা কথা, সেখানে সেলেবরা এক্সপেরিমেন্ট করতেও পিছপা নন। মলাট চকচকে হতেই হবে...

(ইনসেটে তারকাদের পুরনো ছবি)

Botox Lip Fillers Treatment Beauty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy