Advertisement
E-Paper

আমাদের কাজটা আমরা করছি তো, প্রশ্ন রাকেশের  

ছবিটা মুক্তি পেয়েছিল ১৩ বছর আগে। তবে তার প্রাসঙ্গিকতা অটুট। বিশেষত রাফাল দুর্নীতির অভিযোগের সূত্রে নতুন করে চর্চায় ফিরেছে ‘রং দে বসন্তী’, তার প্রাসঙ্গিকতা। 

অন্বেষা দত্ত

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৬:০২
রং দে বসন্তী ছবির দৃশ্য (ইনসেটে পরিচালক রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা)।

রং দে বসন্তী ছবির দৃশ্য (ইনসেটে পরিচালক রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা)।

ছবিটা মুক্তি পেয়েছিল ১৩ বছর আগে। তবে তার প্রাসঙ্গিকতা অটুট। বিশেষত রাফাল দুর্নীতির অভিযোগের সূত্রে নতুন করে চর্চায় ফিরেছে ‘রং দে বসন্তী’, তার প্রাসঙ্গিকতা।

মিগ-২১ বিমানের একের পর এক ভেঙে পড়ার ঘটনায় ভারতীয় বায়ুসেনার সদস্যদের মৃত্যু, মিগ নিয়ে এনডিএ আমলে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে তৈরি ছবির অন্যতম চরিত্র কর্ণ (অভিনেতা সিদ্ধার্থ) বাবাকে (ছবিতে মিগ চুক্তির দালাল) খুন করে, নিহত হন ছবির প্রতিরক্ষামন্ত্রীও। যুবসমাজ যে চাইলে প্রশাসনকে ধাক্কা দিতে পারে, তা দেখিয়েছিল রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার ছবি।

প্রধানমন্ত্রী অথবা সরকারের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় টুঁ শব্দ করলেই নাগরিকদের হেনস্থার নজির এখন অজস্র। এ জমানায় ‘রং দে...’-র মতো ছবি কি আদৌ মুক্তি পেত? ফোনে আনন্দবাজারকে রাকেশ বললেন, ‘‘অবশ্যই। সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইটা সব সময়েই আছে। তখনও সমস্যা হয়েছিল যে মিগ দুর্নীতির অভিযোগ সরাসরি বলা যাবে না, কাউকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী দেখানো যাবে না। তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী (ইউপিএ আমলের) এবং বায়ুসেনা প্রধানের কাছে গিয়েছিলাম আমরা। আলোচনা হয়েছিল সবই।’’ পরে তাঁর সংযোজন, ‘‘ছবিটা আপনাদের এখনও এত ভাবাচ্ছে জেনে ভাল লাগছে। আসলে কিছু জিনিস বদলায় না। আমাদের দেশে কোনও দিনই গণতন্ত্রের নিখুঁত মডেল ছিল না। আমাদের দেশ অনেকগুলো টুকরো দিয়ে তৈরি।’’

মিগ দুর্নীতির মতো দেশ এখন সরগরম রাফাল যুদ্ধবিমান চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দেওয়া নিয়ে। রাফাল নিয়ে এখন যদি কেউ ছবি তৈরি করতে চান? রাকেশের মন্তব্য, ‘‘সেটা তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ। কারও যদি মনে হয়, তিনি তৈরি করতেই পারেন।’’

এক যুগ আগে যে প্রতিবাদী যুবসমাজকে তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন, তার কোনও ছাপ এখনকার তরুণ-তরুণীদের মধ্যে দেখতে পান? রাকেশের জবাব, ‘‘অনেকটাই এক। একটা অংশ সব সময়েই আছে, যারা শুধু উচ্চশিক্ষা-আমেরিকা-দেশছাড়া— এই পথটা অনুসরণ করে না। আমি নিজেও তরুণ বয়সে তেমনটা কখনও ভাবিনি, তা তো নয়। তবে সব

কিছু অগ্রাহ্য করে দেশের জন্য ভাবতে গেলে সাহস লাগে। সেই সাহস অনেকের আছে।’’ কলকাতার সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছেন জেনে ফের বলেন, ‘‘বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে যুবসমাজের কত বড় ভূমিকা, আপনারা তো জানেন।’’

এক সময় সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তিনি পর্দায় দেখিয়েছেন দাপটে। আজ বলিউডের তাবড় ব্যক্তিত্ব যখন প্রধানমন্ত্রীর দরবারে গিয়ে নিজস্বী তোলেন আর তার অকাতর প্রচারে ব্যস্ত থাকেন, কী ভাবে দেখেন রাকেশ? ‘‘দেখুন, অন্য লোকে কী করল, তাই নিয়ে মন্তব্য করা ভারতীয়দের প্রিয় কাজ। নিজে আয়নার দিকে তাকানো বরং বেশি দরকার।’’ রাকেশের মত, ‘‘সরকারি ব্যক্তিত্বের সঙ্গে দেখা করার প্রবণতা বলিউডে এই প্রথম নয়। ১৯৫০ থেকে হয়ে আসছে। জওহরলাল নেহরুর কাছে গিয়েছেন বহু লেখক, পরিচালক। ক্ষমতায় যারা আছে, তাদের সমালোচনা এক নিমেষেই করা যায়। কিন্তু তার পরে? আমাদের কাজটা আমরা করছি তো?’’

রাকেশের ‘কর্ণ’ অবশ্য খুবই সক্রিয় টুইটারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বায়োপিককে ব্যঙ্গ করে কর্ণের চরিত্রাভিনেতা সিদ্ধার্থের টুইট, ‘‘আমরা একনায়কত্বের দিকে হাঁটছি! ভোটের আর এক মাসও বাকি নেই...আমাদের ‘প্রিয় নেতা’কে নিয়ে হাস্যকর চাটুকারিতা আর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি।’’ আর রাকেশের সদ্যমুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘মেরে পেয়ারে প্রাইম মিনিস্টার’এ এক বালকের মা খোলা জায়গায় প্রাকৃতিক কাজ করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়। তার প্রতিকার করতে বালকটি চিঠি লেখে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে!

Rakeysh Omprakash Mehra Rang De Basanti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy