Advertisement
E-Paper

মুভি রিভিউ: ভূত দেখে ভয় নয়, কাঁদতে ইচ্ছে করে

বাজারে বাংলা ছবির অভাব নেই। প্রতি শুক্রবারই কিছু না কিছু একটা রিলিজ করছে। প্রযোজকের অভাব নেই। বড় কাস্টিংও জুটে যাচ্ছে! কিন্তু, অভাব থেকে যাচ্ছে একটা জায়গাতেই। গল্প নেই! এতে যে দর্শকের স্বভাব খারাপ হয়ে যাচ্ছে, তা আর কবে বোঝা যাবে!

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
‘কায়া’র একটি দৃশ্যে প্রিয়ঙ্কা সরকার এবং কৌশিক সেন।

‘কায়া’র একটি দৃশ্যে প্রিয়ঙ্কা সরকার এবং কৌশিক সেন।

উদো-বুধো এবং তাদের পিন্ডি ও ঘাড়ের গল্প জানা ছিল। জানা ছিল গল্পের গরু শেষ পর্যন্ত কোথায় উঠে গিয়েছিল। কিন্তু, শুক্রবার রাতে যে গপ্পো দেখে-শুনে এলাম— তাতে ওই দুই প্রচলিত প্রবাদও হার মেনে গেল। আসলে গল্পহীন বাষ্পে ভরপুর এক অদ্ভুতুড়ে ছবির নাম ‘কায়া’।

বাজারে বাংলা ছবির অভাব নেই। প্রতি শুক্রবারই কিছু না কিছু একটা রিলিজ করছে। প্রযোজকের অভাব নেই। বড় কাস্টিংও জুটে যাচ্ছে! কিন্তু, অভাব থেকে যাচ্ছে একটা জায়গাতেই। গল্প নেই! এতে যে দর্শকের স্বভাব খারাপ হয়ে যাচ্ছে, তা আর কবে বোঝা যাবে! দর্শক তো নেটফ্লিক্স বা অ্যামাজনেই বাংলা ছবি বেছে নেবে!

‘কায়া’য় এক সাদা ভূত শুটিং পার্টিকে তাড়া করে বেড়ায়। কেন? থ্রিলারের গল্প বলা যায় না। তাই আর বলতে পারছি না। তবে, গল্পের গরু এখানে গাছে নয় মেঘালয়ের কুয়াশা ঘেরা বনে-পাহাড়ে চরে এবং চড়ে বেড়ায়। আচ্ছা, ভূত মানেই কি সাদা বা কালো পোশাকের কেউ! যে কেবল রাতে আসে! ভয় দেখায়! আর রেগে গিয়ে কলকাতা থেকে আসা শুটিং পার্টির পরিচালক থেকে সিনেম্যাটোগ্রাফার— সকলকে লাগেজসমেত জাস্ট হাওয়া করে দেয়!

আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ: ‘ভালবাসার বাড়ি’র ভাষা নিপাট, প্রেমও মিষ্টি

আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ: প্যাডম্যান বলছে, পাগলামি না থাকলে সৃষ্টি জন্ম নেয় না

এই ভূতের আবার খুব রাগ। অভিনয়ের পেশায় মেয়েরা কেন কেরিয়ারের সিঁড়ি দিয়ে তরতরিয়ে ওঠার জন্য পরিচালক বা প্রযোজকের ঘরে রাত কাটায়! তা নিয়ে সে খুব ক্ষুব্ধ। সে না হয় হল, কিন্তু, এই শয্যাসঙ্গীদের রাতেই কেন প্রযোজকদের ঘরে যেতে হয়? দিনে কিছু হয় না বুঝি!

ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করেছেন রাইমা সেন ও প্রিয়ঙ্কা সরকার।

ভূতের মধ্যেই পবিত্র বিবেকের বাণী ভরে দিয়েছেন পরিচালক রাজীব চৌধুরী। যেমন, ‘সিনেমার লাইনে’ মেয়েরা খুব এক্সপ্লয়টেড হয়। আবার এর উল্টোটাও আছে, কোনও কোনও মেয়ে নাকি নিজেরাই নিজেদের নিবেদন করে থাকে! ছবির শেষে ভূত তার কাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে উধাও করে দেয়। পরে দেখা যায়, সেই মানুষটি যুবা থেকে বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছে। আর তার আদরের ভূত বা ভালবাসার মানুষকে নিয়ে বুড়ো থুরথুরে হয়ে দিন কাটায়।

আচ্ছা, কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে না! তাই এ ছবি নিয়ে যত কম কথা বলা যায় ততই ভাল।

'এই মন খারাপের মরসুমে' প্রিয়ঙ্কা।

শুধু অভিনয় নিয়ে বলা যেতে পারে। প্রিয়ঙ্কা সরকার, কৌশিক সেন অনবদ্য। ভাল লাগে রাইমাকেও। তবে, তিনি এ ছবি না করলে তাঁর খুব কিছু ক্ষতি হত কি? সায়নী দত্ত মন্দ নন। তবে, মেঘালয়ের কুয়াশা ঘেরা শীতে তিনি এত কম পোশাক পরে থাকলেন কেন? প্রিয়ঙ্কা তো জ্যাকেট চাপিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন! বোঝা গেল না। শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ের অভিনয়ও মনে দাগ কাটে। কিন্তু, অভিনেতাদের খুব কিছু করার ছিল না এ ছবিতে।

দর্শক প্রথমে ছবির সাউন্ডস্কেপে ভূতের আওয়াজ শুনে নড়ে বসে চমকালেও, পরে কিন্তু হাসতে থাকে। বলতে থাকে, এর পর এটা হবে, ওটা হবে।

ভূতেরা নিঃসন্দেহে সাহিত্যে বা ছবিতে হাসাতে পেরেছে বাঙালিকে। কিন্তু, এই রাজীবের এই ‘ভূত’ দেখার পর কাঁদতে ইচ্ছে করে!

সেই প্রবাদটার মতো— ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি!

Movie Review Kaya Film Actors Tollywood Priyanka Sarkar Raima Sen Kaushik Sen প্রিয়ঙ্কা সরকার কৌশিক সেন রাইমা সেন কায়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy