Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘প্রথম সারির এক হিরো, অথচ তাঁর উচ্চারণ এখনও স্পষ্ট নয়’

বিক্রম-সোনিকার পর্ব নিয়ে এখনও কিছু বলতে রাজি নন সাহেব। আইনি জটিলতা তো আছেই। ব্যক্তিগত কারণও আছে। ফোনের রেকর্ডার বন্ধ অবস্থায় সে সব কথা বললেনও সাহেব। কিন্তু জনসাধারণের জন্য এখনই মনের কথা উজাড় করতে চান না।

সাহেব ভট্টাচার্য।

সাহেব ভট্টাচার্য।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০২
Share: Save:

অভিনয় করছেন অনেক দিন ধরেই, ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যের ছেলে। অথচ সবচেয়ে বেশি চর্চিত হলেন একটি দুঃখজনক ঘটনার কারণে। বিক্রম-সোনিকা কাণ্ডের তৃতীয় অধ্যায় সাহেব ভট্টাচার্য।

ঘটনার পর থেকে সাহেব মুখ বন্ধ রেখেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেমিকা সোনিকাকে নিয়ে পোস্ট দেওয়া ছাড়া মুখ খোলেননি। আনন্দ প্লাসের সাক্ষাৎকারের জন্য অবশ্য রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। সামনেই মুক্তি পাচ্ছে তাঁর ছবি ‘কার্জনের কলম’। দুঃসময় সরিয়ে রেখে কাজে মন দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বললেনও সে কথা, ‘‘নিজেকে সব কিছু থেকে ভুলিয়ে রাখার একমাত্র উপায় কাজ। সান্ত্বনা পাওয়ার আর কোনও রাস্তা নেই আমার কাছে।’’

বিক্রম-সোনিকার পর্ব নিয়ে এখনও কিছু বলতে রাজি নন সাহেব। আইনি জটিলতা তো আছেই। ব্যক্তিগত কারণও আছে। ফোনের রেকর্ডার বন্ধ অবস্থায় সে সব কথা বললেনও সাহেব। কিন্তু জনসাধারণের জন্য এখনই মনের কথা উজাড় করতে চান না।

টালিগঞ্জে দূরদর্শন ভবন থেকে খানিকটা এগোলেই রাস্তার মোড়ে তাঁর বাড়ি। দোতলার কাচের জানালা দিয়ে ঘরে টাঙানো সোনিকার ছবি স্পষ্ট দেখা যায়। ঘরে সাহেব-সোনিকার আরও অনেক ছবি রয়েছে। কোনওটা বেড়াতে যাওয়ার, কোনওটা ঘরোয়া অনুষ্ঠানের। বিষয়টা ব্যক্তিগত রাখতে চান, অথচ এমন ভাবে ছবি রেখেছেন যে, রাস্তা থেকে সেগুলো দেখা যায়? ‘‘ওই নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে বলতে চাই না। সোনুকে নিয়ে তো কিছু নয়ই। বাকি সব কিছু নিয়েই কথা বলতে পারি। আমার কাজ-কেরিয়ার এ সব নিয়ে যা খুশি প্রশ্ন করতে পারেন। কেসটা একটা পরিণতি পাক, তার পর।’’

মাসখানেক আগে যাঁরা সাহেবকে দেখেছেন, তাঁরা বুঝবেন আগের চেয়ে এখন তিনি অনেকটাই সামলেছেন। জানালেন, ভাল আছেন। নিজের মতো থাকেন। ক্লাব, পার্টি ইত্যাদি অনেক কমিয়ে দিয়েছেন। ‘‘কাজ না থাকলে বেশির ভাগ সময় বাড়িতেই থাকি। ডিসেম্বরে আমার বোনের বিয়ে। সে সব নিয়ে একটু ব্যস্ত আছি।’’

কিন্তু যে ঘটনা নিয়ে এত কাণ্ড তা নিয়ে প্রশ্ন না করলে চলে! বিক্রমের সঙ্গে দেখা হয়েছে? মুখের অভিব্যক্তি বলে দিচ্ছিল, কতটা ক্ষুব্ধ সাহেব। হাতের মুদ্রায় বুঝিয়ে দিলেন, এ প্রসঙ্গে কোনও জবাব দেবেন না।

ক্ষোভ উগড়ে দিলেন টলিউড প্রসঙ্গেও। সব অভিনেতার জীবনেই মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া একটা সিনেমা থাকে। সাহেবের এখনও তেমন কিছু ঘটেনি। বেশ বিরক্তির সঙ্গে বললেন, ‘‘কী করে আসবে! এখানে কোনও কাস্টিং ডিরেক্টর নেই। কেউ অডিশন নেয় না। সন্ধেবেলা যাদের সঙ্গে বসে গল্প করে, তাদেরই সিনেমায় কাজ দেয়। একটা প্রযোজনা সংস্থা মনোপলি চালিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে আমার মতো সেকেন্ড জেনারেশন অভিনেতাদের হাতে কাজ নেই!’’

তবে আগামী কয়েক মাস সাহেবের পরপর ছবি মুক্তি পাবে। দুর্গাপুজোর আবহে সাসপেন্স থ্রিলার ‘কার্জনের কলম’। লর্ড কার্জনের কলম উপহারের সূত্রে এক পরিবারে আসে। কিন্তু দুর্গাপুজোর সময় তা হারিয়ে যায়। খোঁজ-পর্ব নিয়েই গল্প।

সাহেবের প্রজন্মের অনেক অভিনেতাই টেলিভিশনে ফেরত এসেছেন। সাহেব অবশ্য শেষ পর্যন্ত দেখতে চান। নিজের প্রযোজনা সংস্থার খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বলছিলেন, ‘‘এটা অনেক দিনের ভাবনা। কনটেন্ট ভিত্তিক সিনেমা করতে চাই। এখন যা সব ট্র্যাশ ছবি হচ্ছে! আর কমার্শিয়াল ছবির হিরোদের অভিনয় জাস্ট রাবিশ!’’

ক্ষোভ ঝরে পড়ছিল তাঁর গলায়। কিন্তু এ সব কথাবার্তা তো বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে? ‘‘কাউকে তো বলতে হবে সত্যিগুলো। প্রথম সারির এক হিরো, অথচ তাঁর উচ্চারণ এখনও স্পষ্ট নয়। দিল্লি-মুম্বই গিয়ে একটা ডিকশন ক্লাস তো করতে পারে! কিন্তু করবে না। চলে যাচ্ছে যে! কোন হিরোর নামে ছবি বিক্রি হয় বলুন তো? হলে দুর্গাপুজো, ইদকে ঢাল করে ছবি রিলিজ করতে হতো না,’’ কড়া ভাষায় জবাব তাঁর। একটু থেমে নিজেই যোগ করলেন, ‘‘একটা কথা আছে জানেন তো, ‘পাপ বাপকেও ছাড়ে না’। কৃতকর্মের ফল তো পেতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE