Advertisement
E-Paper

‘মহালয়া’ নিয়ে কী বললেন পরিচালক সৌমিক সেন?

বাঙালির জীবনের অন্যতম ঘটনা নিয়ে এপিক ছবি ‘মহালয়া’, ঝলক আনন্দ প্লাসে জনগণ সেই অনুষ্ঠান একেবারে নস্যাৎ করে দেন। সাধারণ মানুষের দাবিতে মহালয়ার সকালে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের কণ্ঠই ফেরত আসে।

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৮ ২৩:২৬
যিশু সেনগুপ্ত

যিশু সেনগুপ্ত

সেই সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। তা সত্ত্বেও আপত্তি, ক্ষোভ আটকে থাকেনি। যা অল ইন্ডিয়া রেডিও কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করেছিল সিদ্ধান্ত বদলাতে। ১৯৭৬ সালে মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র বদলে সম্প্রচারিত হয় উত্তমকুমারের ন্যারেশনে ‘দুর্গা দুর্গতিনাশিনী’। জনগণ সেই অনুষ্ঠান একেবারে নস্যাৎ করে দেন। সাধারণ মানুষের দাবিতে মহালয়ার সকালে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের কণ্ঠই ফেরত আসে।

তবে গোটা ঘটনার দায় উত্তমকুমারের, না কি তৎকালীন সরকারের, না রেডিও কর্তৃপক্ষের— তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন, অনেক মত রয়েছে। সৌমিক সেনের ‘মহালয়া’ এই ঘটনা নিয়েই। পরিচালক ঠিক করে নিয়েছিলেন, এই বিষয় নিয়েই তাঁর প্রথম বাংলা ছবি করবেন। যেখানে সবচেয়ে জরুরি ছিল চরিত্র বাছাই এবং অভিনেতাদের সেই আদলে গড়ে তোলা।

সৌমিক বলছিলেন, চিত্রনাট্য লেখার সময় থেকেই উত্তমকুমারের চরিত্রে যিশু সেনগুপ্তর কথা মাথায় ছিল তাঁর। সত্তরের দশকে উত্তমকুমারের ধুতি-পাঞ্জাবি পরা চেহারায় তিনি যিশুকে ভেবেছিলেন। সেই মতো লুক সেট করা হয়েছে যিশুর। বীরেন্দ্রকৃষ্ণর চরিত্রে রয়েছেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। এই চরিত্রের জন্য অভিনয়ের দাপট এবং মুখের আদল দুই-ই প্রয়োজন ছিল। শুভাশিস যে সবটাই পূরণ করতে পারবেন, তা বলা বাহুল্য। ছবির আর এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পঙ্কজ কুমার মল্লিক। ভাল গান জানেন এমন কাউকে খুঁজছিলেন সৌমিক। প্রযোজক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং সৌমিক দু’জনেরই পঙ্কজ মল্লিকের চরিত্রে শুভময় চট্টোপাধ্যায়কে মানানসই মনে হয়।

প্রসেনজিতের সংস্থা এনআইডিয়াজ়ের ক্রিয়েটিভ পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন সৌমিক। প্রসেনজিৎ তাঁকে একটি ছবি পরিচালনা করতে বলেন, যেখানে অভিনেতাই কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকবেন। কিন্তু সৌমিকের বক্তব্য ছিল, ‘মহালয়া’ করতে না পারলে আর কোনও দিনই তিনি বাংলা ছবি করবেন না। তার পর ‘মহালয়া’ প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নেন প্রসেনজিৎ। হাসতে হাসতে গল্পটা বলছিলেন বুম্বাদা। ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি আছেন। তৎকালীন এক সরকারি আমলার চরিত্র করছেন প্রসেনজিৎ। বীরেন্দ্রকৃষ্ণের বদলে নতুন কাউকে দিয়ে অনুষ্ঠান করানোর পিছনে যাঁর প্রভাব ছিল। ‘‘বেশ ধূসর একটা চরিত্র। খুব বেশি বলা যাবে না। তবে আমাকে এ ভাবে আগে কেউ দেখেননি, এটুকু বলতে পারি,’’ বক্তব্য প্রসেনজিতের।

‘মহালয়া’য় অনেক চরিত্র। সেগুলো বাছাইয়ের পিছনেও অনেক গবেষণা রয়েছে। প্রসেনজিৎও নিজের মতো করে যথাযথ সাহায্য করেছেন সৌমিককে। ‘‘আমি বাংলা ছবির প্রত্যেক অভিনেতাকে তো চিনি না। প্রধান চরিত্রগুলো ছাড়া আরও অনেক চরিত্র আছে। সেই জায়গাগুলোয় বুম্বাদা আমাকে সাহায্য করেছেন,’’ বলছিলেন সৌমিক। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ এবং উত্তমকুমার, দু’জনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সেই সময়ের তাবড় শিল্পীরা যুক্ত ছিলেন। তবে অনেক শিল্পীর পরিবার সম্মতি না দেওয়ায়, নাম করে সকলের উল্লেখ করা হয়নি বলে জানালেন প্রসেনজিৎ।

‘গুলাব গ্যাং’ সৌমিকের প্রথম পরিচালনা। দ্বিতীয় হিন্দি ছবি ‘চিট ইন্ডিয়া’র কাজ চলছে। পাশাপাশি বাংলায় ডেবিউ ছবি ‘মহালয়া’ রিলিজ়ের পরিকল্পনাও চলছে। দ্বিতীয় বাংলা ছবির পরিকল্পনাও হয়ে গিয়েছে। ‘কলকাতা কোম্পানি’। যেখানে প্রধান চরিত্রে প্রসেনজিৎ। তবে ‘মহালয়া’ না হলে এই ছবি যে হতো না! ‘‘অনেক দিন ধরেই নানা কারণে ‘মহালয়া’র কাজ পিছিয়ে যাচ্ছিল। ছবিটা তৈরি করতে না পারলে হয়তো অন্য বাংলা ছবি আমি করতামই না, কারণ বাংলা ছাড়া অন্য ভাষায় ছবিটা করা সম্ভব নয়,’’ বক্তব্য সৌমিকের।

Mahalaya Tollywood মহালয়া Jisshu Sengupta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy