প্রতীক চৌধুরী।
চলে গেলেন সঙ্গীত জগতের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব প্রতীক চৌধুরী। মঙ্গলবার নিজের অফিসেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। বাইপাস সংলগ্ন এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন তাঁকে।
গায়ক হিসেবে জনপ্রিয় হলেও বহু সঙ্গীতকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতেন তিনি। সে সব দিনই ফিরে দেখছিলেন লোপামুদ্রা মিত্র, ‘‘প্রতীকদা এত উদ্যোগ নিয়ে এক একটা অনুষ্ঠান করতেন, আমাদের সঙ্গে গাইতেন যে, ওই মানুষটা আর নেই— বিশ্বাস হচ্ছে না।’’ প্রতীকের স্ত্রী বৈশাখীর অনেক দিনের বন্ধু লোপামুদ্রা। ‘‘ওর সূত্রেই প্রতীকদার সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল। এই তো ক’দিন আগেও দেখা হওয়ায় আমাকে বলছিল, একটা অনুষ্ঠান আছে, গলাটা খারাপ। তুই যে ওষুধটা খাস ওটার নাম বল তো!’’ বলছিলেন তিনি।
প্রতীককে খুব কাছ থেকে চিনতেন শ্রীকান্ত আচার্য। ‘‘খারাপ লাগছে ওর ছেলের জন্য। ওর আইএসসি শুরু হল। মেয়েও এসেছে হায়দরাবাদ থেকে। ১৯৮২ সাল থেকে প্রতীকের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি। তখন ও গজ়ল-ভজন গাইত। অনুপ জালোটার বিরাট ভক্ত ছিল,’’ বলছিলেন তিনি। একটি বিশেষ ঘটনা বললেন শ্রীকান্ত, ‘‘নব্বই দশকের প্রথম দিকে একটা অনুষ্ঠানে প্রথমে প্রতীকের গাওয়ার কথা ছিল। পরের পর্বে গাওয়ার কথা গুলাম আলির। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগের রাতেই প্রতীকের বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। ও কিন্তু অনুষ্ঠানে গেয়েছিল। তার জন্য শ্মশানে যেতে পারেনি। ব্যাপারটা জেনে গুলাম আলি ওর প্রশংসা করে বলেছিলেন, এই কমিটমেন্টের জন্য তোমাকে কুর্নিশ।’’
সুরকার দেবজ্যোতি মিশ্রের সঙ্গে প্রতীকের সম্পর্কটা ছিল দাদা-ভাইয়ের মতো। দেবজ্যোতি বলছিলেন, ‘‘বিজ্ঞাপনে আমার সুরে ও দুশোরও বেশি গান গেয়েছে। ওর স্ত্রী বৈশাখীও খুব ভাল গায়। তবে প্রতীকের মতো প্রফেশনালি গানটাকে নেয়নি। সংসার আগলেছে। স্ত্রী, ছেলে, মেয়েকে রেখে বড্ড তাড়াতাড়ি চলে গেল।’’
অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ‘শঙ্কর মুদি’তে প্রতীকের সঙ্গে একটি গান ডুয়েটে গেয়েছেন রাঘব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘বাইশ বছরের সম্পর্ক ছিল আমাদের। এত খারাপ লাগছে, বলে বোঝাতে পারব না।’’ এখনও প্রতীকের চলে যাওয়া নিয়ে বিস্ময় কাটিয়ে উঠতে পারেননি অনেকেই। অনুপম রায়ের কথায়, ‘‘এত তাড়াতাড়ি মানুষটা চলে গেলেন! বয়স তো খুব বেশি হয়নি... একটা সময়ে বড্ড জনপ্রিয় হয়েছিল ওঁর গান। সেগুলো আমাদের মনে থেকে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy