Advertisement
E-Paper

বিক্রমদা বলেন, শিল্পীরা অবশ্যই অনুভূতিপ্রবণ হবে তবে সেটা সামলাতেও জানতে হবে

মিষ্টি আর চকোলেট দেখলে নিজেকে সামলাতে পারেন না। আবার তিনিই শরীর ঠিক রাখবেন বলে লাল চালের ভাত খান!

উজ্জ্বয়িনী মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:১৫
Image Of Ujjaini Mukherjee, Bickram Ghosh

(বাঁ দিক থেকে) উজ্জ্বয়িনী মুখোপাধ্যায়, পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত।

বিক্রমদাকে নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি। আমার শিক্ষাগুরু, আমার মেন্টর, আমার মনোবিদ পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। শেষের তকমা জেনে অবাক হচ্ছেন? আমার জীবনে এই বিশেষ ক্ষেত্রেও ওঁর ভূমিকা অসামান্য। না, প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত মনোবিদ তিনি নন। কিন্তু বিক্রমদার জীবনবোধ অসামান্য। দুটো উদাহরণ দিই? আমরা শিল্পীরা অনেক সময়েই যতটা সম্মান বা স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ততটা পাই না। অনেকে হাসিমুখে সামলে নেন। অনেকে পারেন না। যেমন, আমিই পারি না। ভেঙে পড়ি। তখনই আমার বিক্রমদাকে প্রয়োজন হয়। ওঁর কাছে গেলেই মুখ দেখে আমার যন্ত্রণা টের পেয়ে যান। পাশে বসিয়ে বোঝান, “জীবনকে এ ভাবে দেখতে নেই। তোর দেখার দৃষ্টি বদলে নে। দেখবি, অনেক ভাল আছিস। অনেক কিছু তোকে আর কষ্ট দিচ্ছে না।” বিক্রমদার কথা শুনে ফল পেয়েছি।

একই ভাবে আমি প্রচণ্ড অনুভূতিপ্রবণ। একটুতেই যে কোনও ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ফেলি। বিক্রমদা তখনও সামলান। বলেন, “শিল্পীরা অবশ্যই অনুভূতিপ্রবণ হবেন। না হলে আমরা শিল্পী হয়ে উঠতে পারব না। কিন্তু বাইরের মানুষ যেন আমাদের এই অনুভূতিপ্রবণতা টের না পায়। তার জন্য সব সময় নিজেদের অনুভূতি সামলাতে হবে।” তাই যখনই এই ধরনের সমস্যায় ভুগি, বিক্রমদার কথা মনে করি।

তালবাদ্যকার বিক্রম ঘোষ আর ‘ব্যক্তি’ বিক্রম ঘোষের মধ্যে অনেকটাই ফারাক। যথেষ্ট রাগী। কতবার বকুনি দিয়ে চোখ থেকে জল বার করে দিয়েছেন! সেই মানুষটাই মিষ্টি আর চকোলেট দেখলে নিজেকে সামলাতে পারেন না। তার মানে, মনের মধ্যে এখনও ছেলেমানুষী ভাব লুকিয়ে রয়েছে। আবার তিনিই শরীর ঠিক রাখবেন বলে লাল চালের ভাত (ঢেঁকি ছাঁটা চাল) খান! ওঁকে দেখে আমিও ওই ভাত খাওয়া ধরেছিলাম। মনে আছে, বিক্রমদার জন্মদিনে কেক, ফুল নিয়ে ওঁর বাড়িতে আমরা জনাকয়েক হাজির। না জানিয়েই গিয়েছি। দাদা, খুশি হয়েছেন। আমার রান্না করা মুরগির মাংস বেশ তারিয়ে তারিয়ে খান।

এ ভাবেই অনেক গুলো বছর দাদার বোন হয়ে কাটিয়ে ফেললাম। আরও অনেকগুলো বছর এ ভাবেই কাটিয়ে দেব, এমনটাই ইচ্ছে। বিক্রমদা সব সময় সময়ের থেকে এগিয়ে। উনি যখন ফিউশন মিউজ়িক এনেছেন তখনও বাংলায় বিষয়টি নিয়ে কেউ ভাবেননি। ওঁর উপরে নির্ভর করে একটা প্রজন্ম নিজের পরিচিত তৈরি করেছেন। আমিও সেই দলে। আজ ওঁকে নিয়ে লিখতে বসে সে কথা মনে করে খুব গর্ব হচ্ছে।

Bickram Ghosh Ujjaini
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy