গোবর্ধন আসরানী। বলিউড তাঁকে সংক্ষেপে আসরানী নামেই ডেকেছে। সোমবার, দীপাবলির বিকেলে দীর্ঘ রোগভোগের পর প্রয়াত খ্যাতনামী জনপ্রিয় অভিনেতা। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ-সহ অনেকেই। সদ্যপ্রয়াত অভিনেতা অতীতে একবার জানিয়েছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীরও সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি।
আসরানী কি রাজনৈতিক মহলেও যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন? বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এক্স হ্যান্ডল (সাবেক টুইট)-এ প্রকাশিত বার্তা সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। তিনি লিখেছেন, অভিনেতার কৌতুকাভিনয় যে কোনও পরিস্থিতিতে নির্মল আনন্দ দিয়েছে। একই ভাবে তিনি অভিনয়ের অন্যান্য ধারাতেও সমান পারদর্শী ছিলেন। বিনোদনদুনিয়ায় সদ্যপ্রয়াত অভিনেতার অবদান মনে রাখবে আগামী প্রজন্ম, এমনই ধারণা তাঁর। উৎসবের আবহে আসরানীর পরিবারে হঠাৎ শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী তাই মানসিক ভাবে অভিনেতার পরিবারের পাশে।
আসরানীর উপস্থিতি তাঁর অভিনীত ছবিগুলির সম্পদ। তাঁর কৌতুকাভিনয় টাটকা অক্সিজেন ছড়িয়ে দিত। মন ভাল হয়ে যেত দর্শকের। উপভোগ করতেন তাঁরা। শোকবার্তায় এ কথা লিখেছেন দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। অর্থাৎ, তাঁর কৌতুকাভিনয় প্রিয় ছিল সমস্ত মহলেরই।
আসরানীর মৃত্যুর পর প্রকাশ্যে তাঁর পুরনো সাক্ষাৎকার। সেখানে নিজমুখে বলেছিলেন, “আমার দুর্দিনে পাশে পেয়েছিলাম ইন্দিরা গান্ধীকে। তিনি আমায় কাজ পেতে সহযোগিতা করেছিলেন।”
মুম্বইয়ে তখন তিনি নতুন। সুরকার নওশাদ তাঁকে কাজ পেতে সাহায্য করবেন, এমন আশা ছিল তাঁর। একটি মাস তিনি সুরকারের খোঁজে কাটিয়েও তাঁর হদিস পাননি। ব্যর্থ আসরানী ফিরে গিয়েছিলেন জয়পুর। কার্পেটের পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, ভর্তি হয়েছিলেন পুণে ফিল্ম ইন্সটিটিউটে।
অভিনয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করার পরে আসরানীর ধারণা হয়েছিল, এ বার তিনি কাজ পাবেন। কারণ, তাঁর কাছে অভিনয়শিক্ষার শংসাপত্র আছে।
বাস্তবে কিন্তু সেটা ঘটেনি। বরং শংসাপত্র দেখানোয় কটূক্তি শুনতে হয়েছিল তাঁকে। সে সময়ের বলিউড তাঁকে বুঝিয়েছিল, অভিনয় শেখা যায় না। তৎকালীন তাবড় অভিনেতারা পুণের শংসাপত্র ছাড়াই খ্যাতনামী। সুতরাং, মায়ানগরীতে শংসাপত্রের কোনও দাম নেই। সেই সময় পুণেতে এসেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তিনি তখন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী। আসরানী তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, পুণে অভিনয়শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও কাজ পাচ্ছেন না তিনি। দু’বছর ধরে শুধু চেষ্টাই করে যাচ্ছেন! ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে কথা দিয়েছিলেন, বিষয়টি দেখবেন। পরে তিনিই অভিনেতার হয়ে প্রযোজকদের সঙ্গে কথা বলেন। তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর অনুরোধে কাজ পান আসরানী এবং পুণে অভিনয়শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর এক শিক্ষার্থী জয়া ভাদুড়ী।