যাঁরা হিন্দি ছবির নিয়মিত দর্শক তাঁরা উমাকান্ত পাতিলকে ভালই চেনেন। যাঁরা ‘জওয়ান’, ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’, ‘সূর্যবংশী’ বা অক্ষয় কুমারের ‘সার্কাস’ দেখেছেন, তাঁরা পছন্দ করেন এই মরাঠি অভিনেতাকে। এর আগে একাধিক বাঙালি অভিনেতা দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করেছেন। এ বার উল্টো ঘটনা। উমাকান্ত বাংলা ছবিতে! সহ-অভিনেতা প্রিয়াঙ্কা সরকার, তথাগত মুখোপাধ্যায়। খবর, তিন জনে জোট বেঁধে বালুরঘাটের এক অপরাধ চক্র দমন করবে, অবশ্যই বড় পর্দায়। পরিচালক হিসাবে এই ছবি দিয়ে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন চিকিৎসক স্বর্ণায়ু মৈত্র। প্রথম ছবিতেই তিনি এক ফ্রেমে জুড়ে দিচ্ছেন বাঙালি এবং মরাঠি অভিনেতাদের। এই ছবির অভিনেতাদের লুক প্রথম প্রকাশ করছে আনন্দবাজার ডট কম।
বালুরঘাট জুড়ে ছবির শুটিং হয়েছে। শুটিং শেষ হয়েছে গত সেপ্টেম্বর। প্রযোজনায় সন্দীপ সরকারের ওঙ্কার ফিল্মস। পরিচালক আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়েছেন, ছবির গল্প অনেকটা এ রকম, ছবির নায়িকা সুহিতা অধ্যাপক। তার বাড়িতে আশ্রিতা বাহা, মুন্নি আর মেঘা। সকলে মিলে ‘গমীরা’ নাচের দল চালায়। আর সেই দলকে সম্মুখে রেখে বিভিন্ন অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে। হঠাৎ শহরে অনৈতিক ভাবে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়। যার প্রভাবে অনেক নাবালিকা ও মহিলার মৃত্যু হয়। সুহিতা আর তার দল মিলে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে। সুহিতাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তার ‘বন্ধু’ অধ্যাপক কমল। তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে শহরে আসে স্পেশাল ব্রাঞ্চ পুলিশ অফিসার ইন্দ্র। সুহিতারা কি এই চক্রের মাথার সন্ধান করতে সফল হবে? এই সুহিতার ভূমিকাতেই দেখা যাবে প্রিয়াঙ্কাকে। অধ্যাপকের ভূমিকায় তথাগত, পুলিশ অফিসার উমাকান্ত।
ছবিতে চমক আরও। এই ছবির জন্য বাংলা শিখেছেন উমাকান্ত। তাঁর কথায়, “নিজে বাংলা বলেছি। নিজেই ডাবিং করেছি। বাংলার অভিনেতারা যেমন পরিশ্রমী, তেমনই আন্তরিক। খুব ভাল লেগেছে। আরও ভাল লেগেছে নতুন ভাষা শিখে।” জানিয়েছেন, পরিচালক নতুন হলেও যথেষ্ট পরিণত। কাজ করতে কোনও অসুবিধা হয়নি। একই বক্তব্য প্রিয়াঙ্কা, তথাগতেরও। চমক দুই, উমাকান্ত যেমন এই ছবির জন্য বাংলা শিখেছেন তেমনি গমীরা নাচ শিখেছেন নায়িকা। জানিয়েছেন, আলাদা প্রশিক্ষক রেখে নাচের তালিম নিয়েছেন তিনি।
এখন প্রশ্ন, অপরাধ যেমন ঘটবে তেমনই দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনও ঘটবে। কিন্তু, প্রিয়াঙ্কার প্রেম হবে কার সঙ্গে? এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ তথাগত। জানিয়েছেন, এই রহস্য পর্দার জন্য তোলা থাক।
প্রথম ছবিতেই চিকিৎসা দুনিয়ায় ঘটতে থাকা অন্যায়ের একটি অংশ তুলে ধরতে পেরে খুশি স্বর্ণায়ু। ছবি সফল হলে তিনি অনবরত ঘটতে থাকা এই ধরনের অপরাধের কথা পর্দায় আরও বেশি করে তুলে ধরার চেষ্টা করবেন। তাঁর আরও বক্তব্য, “ক্রাইম থ্রিলারের পাশাপাশি এটি নারীপ্রধান ছবি। তা ছাড়া, এই ছবির মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রাম, সেখানকার মানুষদের জীবনধারা এবং দিনাজপুরের লুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি গমীরা নাচের কথা উঠে আসবে।” উল্লেখ্য, ছবিতে বালুরঘাটের এক দল মঞ্চাভিনেতারও দেখা মিলবে।