রাজ। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ
অনিশ্চয়তার মুখে ‘টং লিং’-এর ভবিষ্যৎ। মার্চের ন’তারিখ থেকেই শুরু হওয়ার কথা ছিল রাজ চক্রবর্তীর ড্রিম প্রজেক্ট। কিন্তু গোটা বিষয়টিই এখন বিশবাঁও জলে, স্বত্ব সংক্রান্ত জটিলতার কারণে। কোন সমস্যার কারণে ঘোষণার পরেও পিছিয়ে আসতে হল রাজকে? লীলা মজুমদারের ছেলে রঞ্জন মজুমদারের মৌখিক সম্মতি নিয়েই ছবির ঘোষণা করেছিলেন রাজ, যা প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দ প্লাসে। তার পরই রঞ্জনের বোন কমলা চট্টোপাধ্যায়ের তরফ থেকে চূড়ান্ত সইসাবুদ হওয়ার আগে, ছবির বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয় রাজকে। রাজ তা মেনেও নিয়েছিলেন। একটি মিটিংয়ে ‘টং লিং’-এর স্বত্বের বিষয়ে কথাবার্তা অনেকটাই এগোয়। কিন্তু হঠাৎই থমকে যায় স্বত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া। জানা যায়নি এর নেপথ্যের কারণ। কমলা চট্টোপাধ্যায়ের তরফে গোটা বিষয়টিই দেখভাল করছিলেন তাঁর কন্যা শ্রীলতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে শ্রীলতার মন্তব্য, ‘‘আমরা কাউকে স্বত্ব দিচ্ছি না। এটা সম্পূর্ণ ভাবেই আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত।’’
রাজ এবং ছবির প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ-এর তরফে বরফ গলানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এমনকী, কয়েক জন বিশিষ্ট ব্যক্তিও দু’পক্ষের মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু অধরা সমাধান সূত্র।
গোটা ঘটনায় বিধ্বস্ত রাজ। ‘‘২০০৭ সালে এই গল্পের স্বত্ব কিনেছিলাম পাঁচ বছরের জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সেই সময় এই ছবির জন্য কোনও প্রযোজক পাইনি। বহু চেষ্টার পর যখন এসভিএফ ছবিটা করতে এগিয়ে এল, তখন স্বত্ব নিয়েই সমস্যায় পড়লাম। আমি আর পদ্মদা (পদ্মনাভ দাশগুপ্ত) ছবিটার জন্য ১১ বছর ছুটেছি। এর সঙ্গে আমাদের ইমোশন জড়িয়ে। জানি না, ছবিটা আর হবে কি না। আসলে, ছোটদের একটা ছবির গল্প নিয়ে যে এতটা জটিলতা হতে পারে, আমার মাথায় আসেনি। এটা আমার জীবনে একটা বড় শিক্ষা। ওঁদের বলেছিলাম, ছবিটা আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট। এর জন্য চেষ্টায় খামতি রাখব না,’’ হতাশা রাজের গলায়।
ছবির প্রি প্রোডাকশনের কাজও প্রায় শেষ। ভিএফএক্সের জন্য কানাডার একটি দলকে এ দেশে আনা হয়েছিল। মুম্বই থেকে একটি বিশেষ প্রজাতির কুকুর এনে অ্যানিমেশন তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল। একটি গ্রাফিক নভেল তৈরির পরিকল্পনা ছিল নির্মাতাদের। অডিশন পর্ব পেরিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল ছোটদের ওয়র্কশপও। খুদে অভিনেতাদের লীলা মজুমদার রচনাবলিও উপহার দেওয়া হয়েছিল। ছবির মুখ্য চরিত্র চাঁদের ভূমিকায় বেছে নেওয়া হয়েছিল রিয়ান মজুমদারকে। ‘‘আমার ইমোশন তো ছিলই। তবে সবচেয়ে খারাপ লাগছে ছোটদের জন্য। এখন ভাবছি, কী ভাবে ওদের বলব, ছবিটা আর হচ্ছে না!’’ রাজ ভেঙে পড়লেও চান যে, লীলা মজুমদারের লেখা উঠে আসুক বড় পরদায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy