Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শেষ স্পিনে মোড় ঘুরল চেনা ত্রিকোণ প্রেমের

সঞ্জীবকুমার, বিদ্যা সিংহ এবং রঞ্জিতা অভিনীত ১৯৭৮-এর ছবিটির ‘অফিশিয়াল রিমেক’ এই ছবি। কিন্তু পুরনো সুরা নতুন বোতলে ভরে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা নয়।

পতি পত্নী অওর উয়ো

পতি পত্নী অওর উয়ো

সীমন্তিনী গুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

বিতর্কের বিষয়টি দিয়েই শুরু করা যাক। মাসখানেক আগে ছবির ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার পরেই বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে নায়কের মন্তব্যে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। চাপের মুখে ‘বলাৎকারী’ শব্দটি পাল্টে ‘বড়া সংস্কারী’ করে দিয়েছেন ছবির নির্মাতারা। কিন্তু একটা শব্দ পাল্টালেই কি আর পুরো ছবির বক্তব্য পাল্টানো যায়? মুদাস্সর আজ়িজ়ের নির্দেশনায় দু’ঘণ্টার ‘পতি পত্নী অওর উয়ো’ দেখার পরে প্রশ্নটার কিন্তু স্পষ্ট ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ উত্তর পাওয়া গেল না।

সঞ্জীবকুমার, বিদ্যা সিংহ এবং রঞ্জিতা অভিনীত ১৯৭৮-এর ছবিটির ‘অফিশিয়াল রিমেক’ এই ছবি। কিন্তু পুরনো সুরা নতুন বোতলে ভরে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা নয়। ভেবেচিন্তে অনেক সমসাময়িক করা হয়েছে চিত্রনাট্য এবং সংলাপ। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের মতো বস্তাপচা বিষয়কে জেনারেশন জ়েড-এর মনোগ্রাহী করে তোলার কঠিন কাজটায় নির্দেশকের (যিনি ছবির সংলাপ রচয়িতাও বটে) হাতিয়ার এই ছবির কমেডি। রসালো, দ্ব্যর্থক ইঙ্গিতে ভরপুর, কিন্তু কখনওই শালীনতার গণ্ডি না-পেরোনো সংলাপগুলো হাসিয়েই ছাড়বে।

এ বার আসি অভিনেতা-অভিনেত্রীর প্রসঙ্গে। প্রথমেই বলে নেওয়া ভাল, তিন প্রধান চরিত্রকে ছাপিয়ে গিয়েছেন অপারশক্তি খুরানার ফাহিম রিজ়ভি। ছবির সব থেকে চটকদার সংলাপ যে তাঁর ঠোঁটে বসানো হয়েছে শুধু তা-ই নয়, সেই সংলাপ ছুড়ে দেওয়ার কায়দাতেই মাত করে দিয়েছেন অপারশক্তি। কিশোর শুভম কুমারও শিক্ষিকার প্রেমে পাগল রাকেশ যাদবের চরিত্রে বেশ মজাদার। ‘পেয়ার কা পঞ্চনামা’ থেকে শুরু করে ‘সোনু কে টিটু কি সুইটি’ ঘুরে ‘লুকাছুপি’— ২৯ বছর বয়সি কার্তিক আরিয়ান কী ধরনের চরিত্রে স্বচ্ছন্দ, তা এত দিনে দর্শক বুঝে গিয়েছেন। শহুরে মধ্যবিত্ত মিষ্টি নায়কের চরিত্রে দিব্যি লাগে তাঁর চিন্টু ত্যাগীকেও। তাঁর ট্রেডমার্ক দীর্ঘ মোনোলগ রয়েছে এ ছবিতেও। মধ্যবিত্ত পুরুষের ‘হতাশা’ নিয়ে কার্তিকের বেশ কয়েক মিনিটের ভাষণের পরে হাততালিতে ফেটে পড়ল প্রেক্ষাগৃহ!

পতি পত্নী অওর উয়ো
পরিচালনা: মুদাস্সর আজ়িজ়
অভিনয়: কার্তিক, ভূমি, অনন্যা
৫.৫/১০

ছবির ‘উয়ো’ অনন্যা পাণ্ডে কর্ণ জোহরের খুঁজে আনা নতুন মুখ ছিলেন ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার টু’তে। সেই ছবি থেকে হয়তো অনন্যার অভিনয়ের পাঁচ শতাংশ উন্নতি হয়েছে। ব্যস, ওইটুকুই। ভূমি পেডনেকর যে দক্ষ অভিনেত্রী, তা এত দিনে প্রমাণিত। ফাটিয়ে অভিনয় করেছেন চিন্টুর ‘পত্নী’র চরিত্রে। ছবির শেষে তিনি যখন স্বামীকে বলেন, ‘‘তোমার হাসির যদি কেউ তারিফ করে, মনে রেখো, ঠোঁটের কোণে ওই হাসি এল কোথা থেকে,’’ তখন ‘সাবাশ’ না বলে থাকা যায় না।

ছবিটিকে সম্পূর্ণ অন্য মোচড় দিয়েছে শেষের পাঁচ মিনিট। যদি দেখবেন ভেবে একান্তই টিকিট কেটে ফেলেন, হতাশ হয়ে যেন মাঝপথে বেরিয়ে আসবেন না। ঠকবেন তা হলে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cinema Review Pati Patni Aur Woh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE