Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Wonder Woman 1894

ওয়ান্ডারটাই যে কম হয়ে গেল

সবচেয়ে বড় গলদ ছবির চিত্রনাট্যে, যা থেকে থেকেই খেই হারিয়েছে। পার্ট ওয়ানে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ছিল, দ্বিতীয় ছবিতে একেবারে ১৯৮৪ সাল।

ওয়ান্ডার উওম্যান ১৯৮৪ ছবির দৃশ্য

ওয়ান্ডার উওম্যান ১৯৮৪ ছবির দৃশ্য

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:০৫
Share: Save:

ওয়ান্ডার উওম্যান ১৯৮৪
পরিচালনা: প্যাটি জেনকিন্স
অভিনয়: গ্যাল গ্যাডট, পেড্রো পাসকেল, ক্রিস পাইন,
ক্রিস্টেন উইগ
৬/১০

প্রথম ছবিতে সে এল, দেখল এবং জয় করল। দ্বিতীয় ছবিতে পরীক্ষা একটু কঠিন, এ বার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার পালা। ডিসি কমিক্সের সাম্প্রতিক ছবির মধ্যে ‘ওয়ান্ডার উওম্যান’ নিঃসন্দেহে সেরা, যা দিয়ে মার্ভেলকে টক্কর দেওয়ার লড়াইয়ে অন্তত ফিরে আসতে পেরেছিল ডিসি। এর সিংহভাগ কৃতিত্ব অবশ্যই গ্যাল গ্যাডটের। কিন্তু হায়, দ্বিতীয় ছবিতে শিরোপা ধরে রাখার যাবতীয় সম্ভাবনা কী ভাবে নষ্ট হল!

সবচেয়ে বড় গলদ ছবির চিত্রনাট্যে, যা থেকে থেকেই খেই হারিয়েছে। পার্ট ওয়ানে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ছিল, দ্বিতীয় ছবিতে একেবারে ১৯৮৪ সাল। ডায়ানা (গ্যাল গ্যাডট) ওয়াশিংটন ডিসিতে নৃতত্ত্ববিদ হিসেবে একটি সংস্থায় কাজ করে। এই কাজের পাশাপাশি শহরের দুষ্টু লোকেদের দমনের কাজও চালায় আর স্টিভের (ক্রিস পাইন) স্মৃতিতে ডুব দেয়। কাজের জগতে ডায়ানার আলাপ হয় বারবারার (ক্রিস্টেন উইগ) সঙ্গে। ইন্ট্রোভার্ট বারবারা চায় ডায়ানার মতো হতে। এ বার প্লটে আসে ছবির খলচরিত্র ম্যাক্সওয়েল লর্ড এবং ড্রিমস্টোন। চোরাই মালের মধ্যে পাওয়া এই ড্রিমস্টোনকে ঘিরেই যাবতীয় কর্মকাণ্ড। মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের চাবিকাঠি ড্রিমস্টোন, যা লর্ডের হাতে পড়ে। মানুষের লোভের ছিদ্রপথে ঢুকে লর্ড ক্ষমতাবান হতে চায়।

কেন ছবির নামে ১৯৮৪ সাল রয়েছে, তা ক্রমশ স্পষ্ট হয়। আশির দশক সম্ভাবনার যুগ। টেলিভিশন ঢুকে পড়েছে মধ্যবিত্তের ঘরে, ক্যাপিটালিজ়ম, কনজ়িউমারিজ়ম ক্রমশ থাবা বসাচ্ছে। অন্য দিকে সোভিয়েট ইউনিয়নের পতন। তার মধ্যে ড্রিমস্টোনের দৌলতে সারা বিশ্বকে তা-থৈ, তা-থৈ নাচাতে থাকে লর্ড। আর এই জায়গাগুলোই সবচেয়ে এলোমেলো। কার্যকারণের যথাযথ ব্যাখ্যা নেই। যদিও সুপারহিরো ছবিতে কারণ খোঁজা বাতুলতা মাত্র। কিন্তু পরিচালক প্যাটি জেনকিন্স প্রথম ছবিতে প্রত্যাশা জাগিয়েছিলেন বলেই এগুলো ত্রুটি বলে মনে হয়। আর গোটা ছবিতে চমক বড় কম। সবটাই আগে থেকে আন্দাজ করা যাচ্ছে।

তবে সুপারহিরো ছবি যদি অ্যাকশন আর আবেগের যথাযথ ব্যালান্স রাখতে পারে, তা হলে সেটা বড় সাফল্য। এই জায়গায় ‘ওয়ান্ডার উওম্যান ১৯৮৪’ সফল। স্টিভকে ডায়ানার মিস করার জায়গা এবং ফিরে পাওয়ার পরেও তাকে ছেড়ে দেওয়ার মুহূর্তগুলো ভারী সুন্দর। সবচেয়ে জরুরি, ছবির মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। আরও চাই... আরও চাই মনোভাব যে আসলে আমাদের কাছ থেকে অন্য অনেক কিছু কেড়ে নেয়, সেটা ভাল ভাবে দর্শানো হয়েছে। প্রথম পর্বের জোরালো জায়গা ছিল, ডায়ানার আদিভূমি থিমেস্‌সকেরার চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়া দৃশ্যপট, যা এ পর্বেও খানিক আছে। সেই অংশগুলো চোখের শান্তি। মন ভাল করে দেয় আতশবাজির মধ্য দিয়ে আকাশে উড়ার দৃশ্য। এ ছবি নিঃসন্দেহে ভিসুয়াল ট্রিট। গ্যাল গ্যাডট তো অবশ্যই স্পেকটাকুলার আগের ছবির মতো। ওয়ান্ডার উওম্যানের চরিত্রের বর্মটা গ্যাডট এত সুন্দর করে পরেছেন যে, মনে হবে তাঁকে ভেবেই কমিক্স লেখা হয়েছিল। অ্যাকশন দৃশ্যগুলোয় তিনি অনবদ্য। ভাল লেগেছে বারবারার সঙ্গে লড়াইয়ের অংশও। সুপারহিরো মানেই তো ইস্পাতকঠিন নয়। সেও আঘাত পায়, ভাঙে, হেরে যায় আবার উঠে দাঁড়ায়। এই বাঁকগুলোয় গ্যাডটের থেকে চোখ সরানো যায় না। লর্ডের চরিত্রে নজর কেড়েছেন পেড্রো পাসকেল। স্পয়লার না দিয়েও এটুকু বলা যায়, ভিলেনের ইতিবাচক পরিণতি এ ছবির অন্যতম স্বার্থকতা।

আর একটা ছোট্ট স্পয়লার— অ্যাস্টেরিয়ার ঝলক বুঝিয়ে দিচ্ছে এর পর ওয়ান্ডার উওম্যানের ডাবল প্যাকেজ আসতে চলেছে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wonder Woman 1894 DC Comics Hollywood Movie
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE