Advertisement
E-Paper

অ্যাকশনেও তরি ভিড়ল না

নিন্দুকেরা পাল্টা প্রশ্ন তুলতেই পারে, সলমন খানের সাম্প্রতিক ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে তো এত চুলচেরা বিশ্লেষণ হয় না। তবে বাংলা ছবি আলাদা কেন?

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০০:০১

ইদের মরসুম। দেব-রুক্মিণীর প্রথম ‘মশালা’ ছবি। ভরপুর অ্যাকশন। চুটিয়ে রোম্যান্স। দুবাইয়ের মনভরানো লোকেশনে একটার পর একটা গান। তবু... ছবিতে কী যেন একটা নেই! রাজা চন্দ পরিচালিত ‘কিডন্যাপ’-এর চিত্রনাট্যের বুনন এতই আলগা ও হালকা যে, দর্শকের বাহবা কিডন্যাপ করা গেল না।

নিন্দুকেরা পাল্টা প্রশ্ন তুলতেই পারে, সলমন খানের সাম্প্রতিক ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে তো এত চুলচেরা বিশ্লেষণ হয় না। তবে বাংলা ছবি আলাদা কেন? তাদের উদ্দেশে একটা কথাই বলার। দুবাই-ব্যাঙ্কক-সিরিয়ায় জালের মতো বিছিয়ে থাকা নারীপাচার চক্রকে ঘিরে যে ছবির গল্প, সেখানে স্মার্ট চিত্রনাট্যের প্রত্যাশা কি খুব বেশি চাওয়া?

সিনেমা সিনেমাই। কোনও ছবিপ্রেমী সেখানে আতস কাচ দিয়ে যুক্তিবুদ্ধি মাপেন না। তা বলে আন্ডারকভার এজেন্ট ও নারীপাচার চক্রের মূল অপরাধী এক ছাদের নীচে ভাই-ভাই হয়ে থাকবে! অনেক বছর একসঙ্গে থেকেও কেউ কারও আসল পরিচয় জানত না। এতটাও কি মেনে নেওয়া যায়? আবার নায়ক যখন সেই বন্ধু-শত্রুকে মারতে তেড়ে আসে, তখন ‘আমি তোর বন্ধু, আমি তোর ভাই’ বলে গোঙাবে সেই অপরাধী? এমন চিত্রনাট্য স্মার্ট না হোক, ওভারস্মার্ট তো বটেই!

দেবকে অনেক দিন পরে ‘চ্যালেঞ্জ... নিবি না’ মেজাজে দেখা গেল। বলতে গেলে দ্বিতীয়ার্ধে দেবের ধুন্ধুমার অ্যাকশনই দর্শকের উপভোগের একমাত্র জায়গা। তবে সেখানেও নায়ক ওয়ান-ম্যান-আর্মি! রুক্মিণী মৈত্রকে দেখতে সুন্দর লেগেছে। তাঁর অভিনয়ও সাবলীল। দেব-রুক্মিণীর রসায়নকে ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিচালকের কাছে ভাল সুযোগ ছিল। কিন্তু কয়েকটা গান ছাড়া সে ভাবে কোনও মুহূর্ত গড়েই তোলা হল না। ২০১৯-এ দাঁড়িয়েও প্রেমিক-প্রেমিকা খসে যাওয়া তারা দেখে উইশ করছে। আর প্রেমিক বলছে, ‘‘আমি ওর জন্য মরতে পারি।’’ মানলাম, প্রেমের ক্ষেত্রে কয়েকটা বিষয় শাশ্বত। তা বলে এত ক্লিশে সংলাপ? তার উপরে প্রথমার্ধে তিনটি প্রেমের গানের পরে দ্বিতীয়ার্ধে আরও একটি, বড্ড বাড়াবাড়ি।

ছোট চরিত্রে চন্দন সেন ভাল। ছোট পর্দার পরিচিত মুখ শ্রীপর্ণা রায়, প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভাল লেগেছে। তবে তাঁদের চরিত্র দু’টি যত্ন নিয়ে গড়ে তোলা হয়নি।

ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের আড়ম্বরও বড্ড কানে লাগে। স্লো মোশনে অ্যাকশন দৃশ্যে স্টাইল দেখানো হয়েছে। তবে পরিচালক না জমাটি প্রেমের গল্প বাঁধতে পেরেছেন, না অ্যাকশনের ভরসায় ছবিকে বাঁচাতে পেরেছেন। দুটোকে মেশাতে গিয়ে কোনওটাই আলাদা করে দাগ কাটতে পারেনি।

মশালা ছবির প্রধান কথা বিনোদন। বিনোদনের ভারে গল্পের ত্রুটিও আড়াল করা যায়। তবে চিত্রনাট্যের বড় বড় ফাঁক যখন গান-গল্পের মাঝেও উঁকি মারে, তখন বুঝতে হবে বিনোদনেই ঘাটতি পড়েছে। অবশ্য দেব বা দেব-রুক্মিণীর একান্ত অনুরাগীরা এর মধ্যেও নিজেদের রসদ খুঁজে নিতে পারেন।

Cinema Tollywood Kednap Dev Rukmini Maitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy