Advertisement
E-Paper

Review: যুক্তিহীন আবেগের আতিশয্য

কৃতী শ্যানন অভিনয়ের যথেষ্ট পরিসর পেয়েছেন এখানে এবং তিনি হতাশ করেননি।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২১ ০৭:০৩

মিমি
পরিচালনা: লক্ষ্মণ উতেকর
অভিনয়: কৃতী, পঙ্কজ, মনোজ, সুপ্রিয়া
৫.৫/১০

ছবির তিন মিনিটের ট্রেলার দেখে মনে হতে পারে অন্য রকমের একটা কাহিনি বলতে চলেছেন পরিচালক লক্ষ্মণ উতেকর। কিন্তু ‘মিমি’র ট্রেলারে যা দেখিয়েছিলেন সেটুকুই ২ ঘণ্টা ১২ মিনিট ধরে ছবিতে বললেন পরিচালক। ফলে কাহিনিতে নতুনত্ব কিছু রইল না। সবটাই দর্শক আগাম আঁচ করেও ফেলতে পারলেন। পাওনা বলতে কিছু ভাল পারফরম্যান্স।

কনটেন্টই শেষ কথা বলবে— এই তত্ত্বে বলিউডের যে সব প্রযোজক বিশ্বাসী তাঁদের মধ্যে দীনেশ ভিজান অন্যতম। ‘মিমি’ও কনটেন্ট নির্ভর। ছবির ন্যারেটিভে প্রথম দিকে বেশ নোনতা মুচমুচে একটা ভাব ছিল। খামোকা ঘটি ঘটি আবেগ ঢেলে সবটা কেমন মিইয়ে ফেললেন নির্মাতারা।

ছবির প্রেক্ষাপট রাজস্থান। সেখানে হাভেলি-রিসর্টে নাচ করে মিমি (কৃতী শ্যানন), যার স্বপ্ন মুম্বই গিয়ে নায়িকা হওয়ার। এর জন্য সে টাকা রোজগারের চেষ্টায় ব্যস্ত। ছবির আর এক চরিত্র ভানু (পঙ্কজ ত্রিপাঠী), যে পেশায় ড্রাইভার। টাকার লোভেই এক বিদেশি দম্পতির সারোগেট মাদার হতে রাজি হয় মিমি। মিডলম্যানের কাজ করে ভানু। এতক্ষণ পর্যন্ত হাসি-মজায় সবটা চলছিল। এর পরেই আসে বিপর্যয়। মিমির গর্ভে থাকা বাচ্চাটি ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত জানার পরেই,
ওই বিদেশি দম্পতি সন্তান নিতে অস্বীকার করে।

এর পর কী হবে? এখান থেকে পরিচালকও পথভ্রষ্ট হয়েছেন। তিনি সিরিয়াসভঙ্গিতে কাহিনিটি বলবেন, না কি কমিক টাচ বজায় রাখবেন, সেটা বুঝতে পারেননি। তাই প্রথমার্ধ কমেডি এবং দ্বিতীয়ার্ধ কান্নায় মোড়া। যে কোনও একটা স্টাইল বাছলে ছবিটি হয়তো অন্য মাত্রা পেত। তবে ছবির মজাদার অংশগুলো সত্যিই উপভোগ্য। পঙ্কজ ত্রিপাঠীর কমিক টাইমিং সেই অংশগুলোকে আরও প্রাণবন্ত করেছে। ছবির বেশ কয়েকটি জায়গা সংবেদনশীল। কৃতী মাতৃত্বের অংশ সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে সারোগেসি নিয়ে বাণিজ্য চলে। আইনকানুন কড়া করেও সে ভাবে লাভ হয়নি। তবে এ সংক্রান্ত জটিলতায় যাননি নির্মাতারা। পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত বাচ্চার দায়িত্ব অস্বীকার করার বিষয়টিকেও। তবে এমন কিছু বিষয় পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন, যা কাহিনিকে যুক্তিহীন করে তোলে। বিদেশি দম্পতির সন্তান প্রসব করার পরে এবং সত্য উদ্‌ঘাটন হওয়ার পরে মিমি ও তার সন্তানকে পরিবার-সমাজ যতটা সহজে মেনে নিয়েছে, ততটা কি বাস্তবে হয়? চরিত্ররা মুখে বলছে মিমিকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে, কিন্তু চিত্রনাট্যে সে ছাপ নেই। সারোগেসি কী বোঝাতে যেখানে কাঠখড় পোড়াচ্ছেন পরিচালক, সেখানে এই জায়গাগুলো একটু স্পষ্ট করলে ভাল হত।

কৃতী শ্যানন অভিনয়ের যথেষ্ট পরিসর পেয়েছেন এখানে এবং তিনি হতাশ করেননি। পঙ্কজ ত্রিপাঠী, মনোজ পহওয়া, সুপ্রিয়া পাঠকের মতো অভিনেতার সামনে টিকে থাকার মশলা তাঁর মধ্যে রয়েছে। পঙ্কজকে নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই, প্রতিটি ছবিতেই তিনি স্বতন্ত্র। তবে মনোজ, সুপ্রিয়ার এখানে আলাদা করে কিছু করার ছিল না। শ্রেয়া ঘোষালের কণ্ঠে ‘পরম সুন্দরী’ গানটি নব্বইয়ের নস্ট্যালজিয়া ফিরিয়ে আনে।

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মরাঠি ছবি ‘মলা আই ভয়চয়’-এর অফিশিয়াল হিন্দি রিমেক ‘মিমি’। দশ বছর আগে তৈরি ছবি যে স্টেটমেন্ট তৈরি করেছিল, এত দিন পরে তার রিমেকের জন্য বাড়তি কিছু তুলে ধরার প্রয়োজন ছিল বইকি।

Film Review
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy