(বাঁ দিক) রাহুল মুখোপাধ্যায়, ঋদ্ধি সেন (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
এ সব কী হচ্ছে? আমরা কোন শহরে, কোন শতকে বাস করছি? পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়কে ফেডারেশন আগামী তিন মাসের জন্য ছবি পরিচালনা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে! কেন? না, রাহুল সংগঠনের নিয়মানুসারে কিছু না জানিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করে এসেছেন। জেনে খুব অবাক হয়েছি। কেন ওঁকে কারও অনুমতি নিয়ে কাজ করতে যেতে হবে! আমাদের কাজের পরিসর খুব ছোট। এই ছোট পরিসরে কড়া নিয়মানুবর্তিতা বা নিয়মাবলী কিন্তু প্রকৃতপক্ষেই বিপজ্জনক। তাই সে গুলো যাতে সকলের উন্নতির পক্ষে যায় সে দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। আজ রাহুলদাকে নিয়মের শেকলে বাঁধা হয়েছে, কাল অন্য কাউকে একই পরিস্থতির মধ্যে ফেলা হবে। এ ভাবে একের পর এক শিল্পী যদি নিষিদ্ধ হতে থাকেন তা হলে কিন্তু শিরে সংক্রান্তি! এর পরেও যদি সকলে আলোচনা না করে নিয়ম ঠিক করা হয় বা কেন এই নিয়ম, তার যৌক্তিকতা কতটা— সেটা যদি নির্ধারণ না করা হয় তা হলে ব্যক্তিস্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য বলে কিছু থাকবে কি?
যেমন আমার প্রশ্ন, বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করলে কেন একজন পরিচালক নিষিদ্ধ হবেন? কেনই বা একজন পরিচালককে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কলাকুশলী নিয়ে কাজ করতে হবে? এই প্রসঙ্গে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার কথা বলি। বলিউডের দুটো ছবি করেছিলাম, ‘চিল্ড্রেন অফ ওয়্যার’ও ‘চৌরঙ্গা’। প্রযোজকেরা কলকাতায় শুটিং করতে এসেছিলেন। ফেডারেশন নানা বাধানিষেধের ফিরিস্তি দেওয়ায় তাঁরা কলকাতায় শুটিং বাতিল করে অন্যত্র শুটিং করেন। এটা কি বাংলার জন্য খুব ভাল উদাহরণ? ফেডারেশনের এই পদক্ষেপ আদতে কিন্তু বাংলার মুখ পুড়িয়েছে। সুতরাং, এ বার আলোচনার প্রয়োজন। যাতে এ ভাবে স্বৈরাচারী আচরণের মাধ্যমে কারও উপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া না হয়। কিছুতেই ভুললে চলবে না, আমাদের কাজ কম। অর্থনৈতিক অবস্থাও খুব ভাল নয়। তার উপরে সারা বছর কাজও থাকে না। এই পরিস্থিতিতে আমাদের প্রত্যেককে সংসার চালাতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে কারও উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা মানে তাঁর উপরে কত বড় খাঁড়ার ঘা বলুন তো!
আরও একটি কথা, একা রাহুলদাকে উদাহরণে রেখে নয়, ইন্ডাস্ট্রির নিচু তলা থেকে উপর তলা— সকলের কথা ভেবে আলোচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবেই ইতিবাচক কোনও পদক্ষেপ করা যেতে পারে। আমার এই বক্তব্য পড়ে অনেকেই বলতে পারেন, সমস্যা যখন অনেক পুরনো তা হলে আগে কেন আলোচনায় বসা হল না? তা হলে অনেক অনভিপ্রেত ঘটনা আটকানো যেত। ন্যায্য কথা। তার পরেও বলব, এত দিন কেন হয়নি— এই কলরব না তুলে এখন বরং কার্যকর করে তোলা হোক। ‘কী হয়নি’র থেকে ‘কী হতে পারে’— এই ভাবনা অনেক বেশি গঠনমূলক। এতে ভবিষ্যত উপকৃত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy