খবরটা পেলাম বুধবার রাত পৌনে আটটায়। সুচেতা আর নেই। বিশ্বাস করিনি। ছুটতে ছুটতে সাড়ে আটটায় পৌঁছলাম বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালে। ওখানেই শেষ ক’দিন ভর্তি ছিল ও। সেখানে গিয়েও একই কথা শুনলাম। সুচেতা নেই। আর তো অবিশ্বাস করলে চলবে না। সুচেতা নেই, এই সত্যিটা মেনে নিতেই হত। মেনে নিলামও।
সুচেতা আর আমি একটা সময় টানা কাজ করতাম ‘আঁচল’-এ। বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম। অনেক দিনের পরিচয়। ওর যে ক্যানসার ধরা পড়েছে, তা জানার পরেও ওকে কখনও ভেঙে পড়তে দেখিনি। শরীর হয়তো পারমিট করত না। কিন্তু কাজে ফেরার উত্সাহ ছিল প্রবল। ফ্লোরে কাউকে বুঝতে দিত না ওর কতটা শরীর খারাপ।
গতকাল রাতে হাসপাতাল থেকে ওকে নিয়ে সাড়ে এগারোটা নাগাদ রানিকুঠিতে ওর বাড়িতে যাই। সেখান থেকে কেওড়াতলা…। শেষ পর্যন্ত ওর সঙ্গে ছিলাম আমি।
আরও পড়ুন, প্রয়াত অভিনেত্রী সুচেতা চক্রবর্তী
জানেন, মাস তিনেক আগে সুচেতার সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল আমার। আমাকে বলেছিল, ‘বন্ধু মরে গেলে খবর পেলে আসবি তো?’ আমি ভাবতেও পারছি না, ওর সে দিনের কথাটা এত তাড়াতাড়ি সত্যি হয়ে যাবে…।
রাতে যখন সুচেতাকে বরফের মধ্যে থেকে বের করে শববাহী গাড়িতে তুলছি… যখন ওর বাড়িতে ওকে লাল বেনারসি পরিয়ে সাজালাম… যখন রাত দেড়টায় চুল্লির সামনে ওকে ধরে বসেছিলাম… তখন মনে মনে বলেছিলাম, তুই জিজ্ঞেস করেছিলি সুচেতা, তোর শেষ দিনে আমি থাকব তো? আমি রইলাম…।