রবিবার সাজ সাজ রব রাজ্যের শাসক দলের প্রতিটি স্তরে। রাত পোহালেই ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ, তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’ পালন। প্রতি বার দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের পাশাপাশি এই সমাবেশের মঞ্চে দেখা যায় এক ঝাঁক তারকা অভিনেতা-রাজনীতিবিদদের। থাকেন সঙ্গীত এবং বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীরাও। যোগ দেন বেশ কিছু নতুন মুখও।
এ বছরের ছবিটা কেমন হতে চলেছে? প্রত্যেক বছরের মতো এ বছরের সমাবেশও কি নক্ষত্রখচিত হবে?
জানতে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল সাংসদ শতাব্দী রায়, সাংসদ জুন মালিয়া, অভিনেত্রী তথা শাসক দলের ঘনিষ্ঠ সুভদ্রা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কী বলছেন তাঁরা?
খবর, এ বছর নাকি আমন্ত্রণের দায়িত্বের তালিকায় সামান্য রদবদল ঘটেছে। প্রতি বছর মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের পক্ষ থেকে বড় এবং ছোট পর্দার সমস্ত অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজকদের একজোট করে সমাবেশে নিয়ে আসার দায়িত্ব পালন করেছেন বিধায়ক-পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক সুদেষ্ণা রায়, শাসক দলের ঘনিষ্ঠ অভিনেতা দিগন্ত বাগচী। শোনা যাচ্ছে, এ বছর তাঁরা এই দায়িত্বে নেই।
সুভদ্রা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সাংসদ দোলা সেন বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীদের ফোনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ।
এ বছর কি সমাবেশ মঞ্চে বিনোদন জগৎ থেকে উপস্থিতির হার কমবে?
প্রশ্ন রাখা হয়েছিল জুনের কাছে। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “কেন উপস্থিতি কমবে?” তিনি আরও যোগ করেন, “আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। ফলে, এ বছরের সমাবেশ অন্যান্য বছরের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা অন্য বছর আসতে পারেননি, তাঁরাও এ বছর যোগদানের চেষ্টা করবেন, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।” জুন মুখ খুলেছেন দায়িত্ব রদবদল প্রসঙ্গেও। তাঁর কথায়, “রাজের কাজের চাপ বেড়েছে। বলিউডে ওর প্রযোজনা সংস্থা কাজ করছে। তাই বার বার কলকাতা-মুম্বই করতে হচ্ছে। সেই কারণেই এ বার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছে রাজ। এর বাইরে আর কিচ্ছু নয়।” জুন এও জানিয়েছেন, কাজের ফাঁকে নিজের এলাকা ব্যারাকপুরে প্রস্তুতিসভাও করেছেন রাজ। একই কথা প্রযোজ্য কাঞ্চন মল্লিকের ক্ষেত্রেও। জুনের দাবি, “উভয়কেই নির্দিষ্ট সময়ে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দেখা যাবে।”
প্রায় একই কথা বলেছেন শতাব্দীও। তাঁর বক্তব্য, “শুধুই বিনোদন দুনিয়া বা রাজনীতিবিদেরা নন, সাধারণ মানুষের কাছেও এই দিন আবেগের দিন। তাঁরা নিজে থেকে চলে আসেন সমাবেশে। জায়গা না পেলে দূরে দাঁড়িয়ে শোনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য। ফলে, প্রত্যেক মাধ্যমের বিশিষ্টরাই এ দিন উপস্থিত থাকবেন। আশা সকলের।”
আরও পড়ুন:
শতাব্দী বা জুনের সুরই সুভদ্রার কথায়। তিনি সাফ বলেছেন, “একটা উদাহরণ দিই। অনেকেই হয়তো জানেন, অভিনেত্রী সৌমিতৃষা অসুস্থ। তা সত্ত্বেও তিনি কিন্তু ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। তা হলে বুঝতেই পারছেন উন্মাদনা কোথায় পৌঁছেছে।” অভিনেত্রী জানিয়েছেন, প্রতি বছরের মতো এ বারেও সবাই সকাল ৯টার মধ্যে উপস্থিত হবেন নন্দনে। সেখান থেকে বাসে চড়ে একসঙ্গে সমাবেশে পৌঁছোবেন। এও ইঙ্গিত দিয়েছেন, কিছু নতুন মুখ এ বারের সমাবেশে যোগ দিতে পারেন। তাঁরা কারা? সে রহস্য অবশ্য এখনই ভাঙতে রাজি নন সুভদ্রা।
২১ জুলাই সমাবেশে প্রতি বছর যোগ দেন ছোট পর্দার অভিনেতা ভিভান ঘোষ। এ বছর তাঁর পরিকল্পনা কী?
অভিনেতা জানিয়েছেন, তাঁর কোনও নতুন পরিকল্পনা নেই। ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসাবে তাঁকে সমাবেশে দেখা যাবে। আর সুদেষ্ণা, দিগন্ত? পরিচালক সুদেষ্ণার মতে, তিনি এখনও বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে রাজি নন। দিগন্তের জবাব, ছোট পর্দার শুটিংয়ের চাপ মারাত্মক। সে সব সামলে সময় করে উঠতে পারলে অবশ্যই যাবেন তিনি।