Advertisement
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গৌতমদার কাছে চিরকৃতজ্ঞ

বাংলা ছবির গান, পছন্দের শিল্পী ও নানা অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বললেন চন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ছবির গান, পছন্দের শিল্পী ও নানা অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বললেন চন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়

চন্দ্রাণী

চন্দ্রাণী

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০১:৪৪
Share: Save:

‘তোমাকে বুঝি না প্রিয়, বোঝো না তুমি আমায়, দূরত্ব বাড়ে, যোগাযোগ নিভে যায়...’

অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ ছবির এই গান ইতিমধ্যে ইউটিউবে ট্রেন্ডিং। কেউ কেউ হয়তো ফোনে লুপে শুনছেন। গায়িকা আমাদের পরিচিত ক্রসউইন্ডজের চন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে অনুপম রায়ের সুরে ‘ছায়ামানুষ’ ছবিতে ‘জানলা’ বলে একটি গান গেয়েছিলেন। তার পর ‘পারাপার’ ছবিতে সৌরেন্দ্র আর সৌম্যজিতের সুরে ‘সখী লোকে বলে’ নামে একটি কীর্তনে শোনা যায় তাঁর কণ্ঠস্বর। সেই অর্থে, বাংলা ছবিতে এটি চন্দ্রাণীর গাওয়া তৃতীয় গান।

প্রস্তাবটা কী ভাবে পেলেন? ‘‘অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বরাবর আমার গানের প্রশংসা করতেন। আমি খুব খুশি এই সুযোগটা পেয়ে। অনিন্দ্যদা ফোন করে বলেন, ওঁর নতুন ছবির জন্য একটা গান গাইতে হবে’’, পরিতৃপ্ত কণ্ঠে বললেন চন্দ্রাণী।

গান-বাজনায় হাতেখড়ি কী ভাবে হল? ‘‘ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে গানের পরিবেশ ছিল। রবীন্দ্র সংগীত আর নজরুলগীতি শিখেছি স্বর্গীয় দেবদাস মণ্ডলের কাছে। আর বড়মামার কাছে লোকগীতি। দ্য বিটলসের ‘অ্যাবে রোড’-এর ক্যাসেট এনে দিয়েছিলেন বাবা। তার পর থেকে পাশ্চাত্য সংগীতও মুগ্ধ হয়ে শুনতে শুরু করি। পাশে পেয়েছিলাম স্কুলের সিস্টারদেরও। তাঁরা আমাকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য উৎসাহ দিতেন। ডন বস্কো স্কুলের ফেস্টে আমি প্রথম স্টেজে পারফর্ম করি’’, নস্ট্যালজিয়ার ছোঁয়া চন্দ্রাণীর কণ্ঠে।

ক্রসউইন্ডজে যখন গাইতে শুরু করলেন, সে সময়ে আর কোনও মহিলাকে বাংলা ব্যান্ডে দেখা যায়নি! ‘‘প্রথম প্রথম লোকজন অবাক হতো। আমাদের সমাজে একটা মেয়ে আবার ব্যান্ডে গাইছে! কিন্তু তার পর এত শো করেছি যে সকলে অভ্যস্ত হয়ে গেল,’’ বলছিলেন চন্দ্রাণী।

অনেকেই হয়তো জানেন না, চন্দ্রাণীর কেরিয়ার শুরু সাংবাদিক হিসেবে। দিল্লির রক স্ট্রিট জার্নালের জন্য কলকাতার প্রতিবেদক ছিলেন। ‘‘জীবনের প্রথম রোজগার ওখান থেকেই’’, বললেন গায়িকা।

বিদেশে পারফর্ম করার অভিজ্ঞতাটা কেমন? ‘‘আমেরিকার বেশ ভাল ভাল জায়গায় কনসার্ট করেছি। শ্রোতাদের মধ্যে উৎসাহ ছিল। প্রশংসাও পেয়েছি। টেকনিক্যাল দিক দিয়ে ওরা অনেকটাই এগিয়ে। আইসিসিআর-এর জন্য ভিয়েতনাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পারফর্ম করলাম। ওখানকার পড়ুয়াদের কাছ থেকেও ভাল সাড়া পেয়েছি।’’ এই নিয়ে তৃতীয় বার গ্রাসরুট গ্র্যামির জন্য মনোনয়ন পেল ক্রসউইন্ডজ। ‘‘ভাবতেই পারিনি আমার কথা ও সুরে ‘যখন মনের কোণে’ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ গানের মনোনয়ন পাবে। ভীষণ খুশি’’, বললেন প্রত্যয়ী চন্দ্রাণী।

চন্দ্রাণীর স্বামী বিক্রমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট। প্রথম আলাপ কী ভাবে? ‘‘একটা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ফেস্টে আমি গান গাইতে গিয়েছিলাম। সেখানেই আলাপ। গিটারে সে দিন ও সংগতও দিয়েছিল।’’ আক্ষরিক অর্থে বলা যায়, সংগীতের জমির উপরেই চন্দ্রাণী-বিক্রমজিতের সম্পর্কের ভিত বোনা হয়েছে।

অবসর সময়ে চন্দ্রাণী ঘুরতে ভালবাসেন। সঙ্গ দেয় গল্পের বই আর সিনেমাও। গজল, জ্যাজ আর কান্ট্রি মিউজিক তাঁর পছন্দের জঁর। মন খারাপ হলে শোনেন, ইমোজেন হিপ, নোরা জোনস, কখনও পুরনো বাংলা-হিন্দি গান, কখনও বা বিলি হলিডে আর লেনার্দ কোহেন।

চন্দ্রাণীর কেরিয়ারে ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’এর গৌতম চট্টোপাধ্যায় একটি উজ্জ্বল নাম। ‘‘ওঁর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। ‘ঘরে ফেরার গান’টা আমাকে দেওয়ার জন্য। ওটা দিয়েই প্রথম প্রথম সব কনসার্ট শুরু করতাম। মনে একটা জোর পেতাম। ওঁর সঙ্গে পারফর্ম করার সুযোগও পেয়েছিলাম। প্রেসিডেন্সি কলেজ আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে,’’ খুশি বাঁধ মানছিল না চন্দ্রাণীর গলায়। আর এখনও পর্যন্ত পাওয়া সেরা কমপ্লিমেন্ট? ‘‘১৯৯৫-এ আমার অরিজিনাল কম্পোজিশন ‘দ্য মিন্সট্রেল’ রিলিজ করে। সেটা শুনে গৌতমদা ভীষণ প্রশংসা করেছিলেন। তার পরেই ডাক আসে ‘ঘরে ফেরার গান’ গাওয়ার। এর চেয়ে ভাল কমপ্লিমেন্ট আমি পাইনি,’’ দৃপ্ত কণ্ঠে বললেন গায়িকা।

স্বনামধন্য শিল্পীদের জন্য চন্দ্রাণীর মনে যে মুগ্ধতা, তাঁর গানেও ধরা দেয় সেই বিহ্বলতা!

অন্য বিষয়গুলি:

Chandrani Banerjee Gautam Chattopadhyay Moheener Ghoraguli Anindya Chatterjee Projapoti Biskut চন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় Krosswindz Vikramjit (Tuki) Banerjee বিক্রমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy