৪০ বছর ধরে আমরা একসঙ্গে। ইলিনা মজুমদারকে আজ পর্যন্ত একটা জন্মদিনেও কিচ্ছু দিইনি। আজ উপহার দিলে নির্ঘাৎ আমায় পাগল বলবে! বলবে, ‘তোমার হল কী! এত বছরেও তো কোনও দিন একটা কণা হাতে তুলে দাওনি।’ আমাদের সম্পর্কটাই এ রকম। আমরা মোটেও সুখী দম্পতি নই। দু’মিনিট মুখোমুখি বসলেই ঝগড়া। তবু এ ভাবেই ৪০ বছর আমরা একসঙ্গে। পরস্পরকে উপহার হিসাবে দিয়েছি সন্তান ধী মজুমদার। এর থেকে বড় উপহার আর কী হতে পারে?
আমায় প্রতি মুহূর্তে সহ্য করে চলেছে ইলিনা। আমার দ্বিতীয় স্ত্রী। অদ্ভুত সহ্যশক্তি। মেয়েদের অজস্র ফোন আসত। এখনও আসে। পুরুষ সুপুরুষ হলে যা হয়! কোনও দিনই বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামায়নি। উল্টে আমার অনুরাগিনীদের বলেছে, ‘এ রকম সুপুরুষ সামনে এলে নিজেদের কী করে সামলাবি? আমি তোদের অবস্থা বুঝি।’ সেই ইলিনার মুখ ফুলত আমি কোনও মেয়েকে ফোন করলে! এখন সে সবও হয় না। পাত্তাই দেয় না আমার প্রেমকে।
তবু আমরা আছি। পরস্পরের বন্ধু হয়েই আছি। আমিও এ সব দিক থেকে খুবই উদার। বয়সকালে ও-ও তো কম সুন্দরী ছিল না। প্রচুর পুরুষ অনুরাগী ওর-ও ছিল। আমি সে সব নিয়ে কিচ্ছু মনে করিনি। নারী-পুরুষ সুন্দর হলে বিপরীতে থাকা মানুষটি তো আকৃষ্ট হবেই। এত বছর পরে আমার বৌয়ের জন্মদিনে কেন জানি না মনে হল, কিছু বলব না! অন্তত কিচ্ছু...?
ওই জন্যই আমাদের এখনকার একটা ছবি দিলাম। তুমিই তো ছিলে, আছ, থাকবে।