“শুধু কর্নাটক নয়, ভাষা, সংস্কৃতি, সঙ্গীত, সঙ্গীতশিল্পী, রাষ্ট্র নির্বিশেষে সবাইকে ভালবাসা দিয়েছি”, বেঙ্গালুরু কনসার্ট বিতর্কে অবশেষে ফোঁস করলেন গায়ক সোনু নিগম। একটি লম্বা পোস্ট করেছেন সঙ্গীতশিল্পী। তাঁর লেখায় স্পষ্ট, তাঁর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে। নিজের ইনস্টাগ্রামে গায়ক লেখেন, “হিন্দি ছাড়াও আমি অনেক ভাষায় গান গেয়েছি। তার মধ্যে কন্নড় ভাষার গান অন্যতম। সমাজমাধ্যমের পাতায় ১০০ মতো ভিডিয়ো আছে যেখানে দেখা যাবে আমি কনসার্টে প্রায় ১ ঘণ্টারও বেশি সময় কন্নড় গান গেয়েছি।” ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় কয়েক যুগ কাটিয়ে ফেলেছেন গায়ক। তাই এত বছর পর এই বিতর্ক মোটেই গ্রহণ করতে প্রস্তুত নন, সে কথাই নিজের পোস্টে স্পষ্ট করে দেন সোনু।
আরও পড়ুন:
শিল্পী লেখেন, “আমার ৫১ বছর বয়স। জীবনে দ্বিতীয়ার্ধ্ব চলছে। আমি বাচ্চা ছেলে নই যে এমন অপমান সহ্য করব। আমার পুত্রের বয়সি একটি ছেলে আমায় হুমকি দেবে, আর আমি তা চুপচাপ সহ্য করে নেব! পারব না।”
হাজার হাজার শ্রোতার সামনে এ ভাবে অপমান কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেননি সোনু। বার বার বোঝানো সত্ত্বেও একরোখা মনোভাব পোষণ করেছিলেন সেই যুবকেরা। তখনই মেজাজ হারান গায়ক।
সোনু লেখেন, “প্রত্যেক শিল্পী একটি অনুষ্ঠানের আগে নিজের মতো করে তালিকা তৈরি করেন। কখন কোন গান গাইবেন। সেইমতো এ দিন এক ঘণ্টা কন্নড় গানও আমি গেয়েছিলাম। কিন্তু প্রথম গানটি গাওয়ার পর থেকেই ওরা উস্কানিমূলক মন্তব্য করতে শুরু করে। এ বার আপানারাই বলুন কার ভুল এখানে।”
সাধারণের বিবেচনার উপরই সবটা ছেড়ে দিয়েছেন গায়ক, যাঁরা নিজেদের বুদ্ধি দিয়ে বিচার করবেন কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল।
কী ঘটেছিল সেই দিন? মঞ্চে একের পর এক হিন্দি গান গাইছিলেন। কন্নড় গান গাওয়ার অনুরোধ আসার পরেই তিনি বলেন, “আমার এই বিষয়টা ভাল লাগল না। এই ছেলেটির যা বয়স, তার চেয়ে বেশি দিন ধরে আমি কন্নড় গান গাইছি। কিন্তু এই ছেলেটি অত্যন্ত রূঢ় ভাবে আমাকে হুমকি দিচ্ছে ‘কন্নড়, কন্নড়’ বলে।” এর পরেই তিনি টেনে আনেন পহেলগাঁও-এর প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “পহেলগাঁওতে যা হয়েছে, তার অন্যতম কারণ হল এটাই। এইমাত্র যেটা করলে তুমি, সেটাই সবচেয়ে বড় কারণ। কে সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেটা তো এক বার দেখো। আমি কর্নাটকের মানুষকে ভালবাসি। আমি আপনাদের সকলকেই ভালবাসি।” এই মন্তব্যের পরেই সোনুর দিকে ছুটে আসে তির্যক মন্তব্য। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, কন্নড় গান গাইতে বলার সঙ্গে পহেলগাঁওয়ের সম্পর্কটা ঠিক কোথায়?
এক নেটাগরিক সোনুর এই মন্তব্য নিয়ে সমাজমাধ্যমে লেখেন, “বেঙ্গালুরুর অনুষ্ঠানে কন্নড় গান গাওয়ার অনুরোধ করা যদি দেশবিরোধী হয়, তা হলে আমি নিজেকে দেশবিরোধীই বলব। আমাদের কর্নাটকে কখনও আর পা রাখবেন না। কন্নড় গান গাওয়ার সঙ্গে পহেলগাঁওয়ের কী এমন সম্পর্ক থাকতে পারে!”