বাংলা সিরিয়ালের পরিচালক সুমন দাসের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ সৌজন্যে-ফেসবুক।
সিনেমার জগতের সঙ্গে ‘কাস্টিং কাউচ’ শব্দটা ভীষণ পরিচিত। একটা সময় হলিউড-বলিউড পেরিয়ে ‘মি টু’ আন্দোলনের আঁচ এসেছিল টলিপাড়ায়। নাম করা পরিচালক থেকে অভিনেতা, গীতিকার বাদ পড়েননি কেউ-ই। এই তালিকায় এ বার যোগ হল মুম্বইয়ের মডেল পূজা কুলের আনা অভিযোগ। সোমবার থেকে ‘জি বাংলা’য় শুরু হয়েছে নতুন ধারাবাহিক ‘সোহাগ জল’। তার দিন কয়েকের মধ্যেই ‘মি টু’ অভিযোগে বিদ্ধ ধারাবাহিকের পরিচালক সুমন দাস। এর আগে ‘আয় তবে সহচরী’ ধারাবাহিকেও নির্দেশনা দিয়েছেন সুমন। সম্প্রতি ‘হইচই’-এ নারীকেন্দ্রিক ‘গভীর জলের মাছ’ সিরিজ়টিও নির্দেশনা করেছেন। তবে ‘সোহাগ জল’ ধারাবাহিকের প্রথম সম্প্রচারের দিনই মুম্বইয়ের মডেল পূজা নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে করে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনেন সুমনে দাসের বিরুদ্ধে।
ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠেছে সুমনের বিরুদ্ধে। তবে ধারাবাহিকের এই পরিচিত পরিচালকের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন আরও এক জন। অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আসা সোমদত্তা মিত্রের আলাপ হয়েছিল সুমনের সঙ্গে। তিনিও এ বার পূজার মতোই একগুচ্ছ অভিযোগ করেন পরিচালকের বিরুদ্ধে। সোমদত্তা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘সুমন দাসের জন্য ইন্ডাস্ট্রি বদলে এখন আমি অন্য চাকরি করছি। অভিজ্ঞতা এতই তিক্ত যে, মনে ভয় ঢুকে গিয়েছে, ইন্ডাস্ট্রিটা ওঁর মতো মানুষেই ভর্তি।’’ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় নাটকের মঞ্চে সুমনের সঙ্গে আলাপ সোমদত্তার। সুমনের স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘জন্নত’-এ অভিনয়ও করেছিলেন সোমদত্তা। কিন্তু ক্রমাগত বাড়তে থাকা সুমনের চাহিদা ও অবান্তর জেদই এই ইন্ডাস্ট্রি ছাড়তে বাধ্য করে তাঁকে। সোমদত্তার কথায়, ‘‘সুমনের একটা অদ্ভুত জেদ ছিল। ও বার বার বলত, কেন তুই আমার গার্লফ্রেন্ড হবি না!’’ অভিযোগকারিণী জানান, তিনি বার বার বাধা দিয়েছেন। কিন্তু পরিচালক শোনেনি। ফোনে ব্লক করে দেওয়ার পরও তাঁর বাড়ির সামনে মদ্যপ অবস্থায় এসে গালিগালাজ করেন সুমন। সোমদত্তা বলেন, ‘‘আমাকে অশ্রাব্য গালাগালি করত। আমার বাবাকে মেসেজ করেও আমায় নিয়ে নানা রকম নোংরা ভাষা প্রয়োগ করত। আমি ২০১৫ সালে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। অবশেষে শহরে ছেড়ে চাকরি নিয়ে কেরল চলে যেতে বাধ্য হই।’’
তার পর ২০১৭ সালে পূজার সঙ্গে আলাপ হয় সুমনের। তবে এ বার অবশ্য আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে যান পরিচালক। অন্তত এমনটাই জানা যাচ্ছে পূজার অভিযোগ থেকে। পূজার দাবি, ফ্ল্যাটের মধ্যেই তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করার চেষ্টা করেন সুমন। পূজা জানান, পরিচালক তাঁকে ফ্ল্যাটের মধ্যে আটকে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু পূজা তাঁর উপস্থিত বুদ্ধি কাজ লাগিয়ে ফ্ল্যাটের বাথরুমে বন্ধ করে নেন নিজেকে। দরজা খোলার হুঙ্কার দিতে থাকেন পরিচালক। এ ভাবে ধস্তাধ্বস্তি চলতে থাকে দু’পক্ষের। অবশেষে পরিচালকের প্রতিবেশী এসে পূজাকে উদ্ধার করেন। ফেসবুক লাইভ এসে অশ্রুসজল চোখে ঘটনার বিবরণ দেন পূজা।
এই সব অভিযোগ নিয়ে পরিচালকের কী মত, জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে। ‘‘শটে আছি, এখন কথা বলতে পারব না,’’ বলেই ফোন রেখে দেন পরিচালক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy