Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

যাদের বিকল্প ভাবা হচ্ছে, তারা দেশটাকে গ্রিস বানাবে: নচিকেতা

নানা বিতর্ক নিয়ে সপাটে জবাব দিলেন নচিকেতা চক্রবর্তীনানা বিতর্ক নিয়ে সপাটে জবাব দিলেন নচিকেতা চক্রবর্তী

ছবি: রণজিৎ নন্দী।

ছবি: রণজিৎ নন্দী।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

প্র: প্রথম বার কৌশিকী চক্রবর্তীর সঙ্গে প্লেব্যাক করলেন...

উ: ‘শেষের গল্প’য় আমার একটাই গান। আমি আর কৌশিকী আলাদা করে রেকর্ড করেছি। আজই প্রথম বার শুনে দেখব, গানটা কেমন দাঁড়িয়েছে।

প্র: এখন শো করতে গিয়ে কি মনে হয়, যুগের সঙ্গে শ্রোতাও বদলেছে?

উ: (বেশ কিছুক্ষণ ভেবে) এখনও আমার খুব একটা অসুবিধে হয় না। কারণ আমার যে অনুগত শ্রোতা, তাঁরা তো রয়েছেন। একটা প্রজন্ম আমরা তৈরি করেছি। তবে হ্যাঁ, শ্রোতা বদলে যাচ্ছে। মানুষ এখন গান কম শুনছে। মানুষ কোনও সমস্যার মধ্যেই যেতে চাইছে না।

প্র: গান তো সমস্যা থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে...

উ: মানুষ রিলিফও চাইছে না।

প্র: কী চাইছে তবে?

উ: মানুষ কিছুই চাইছে না। সেটাই সমস্যা। শিল্প-সংস্কৃতি যে কোনও ক্ষেত্রেই, মানুষ অদ্ভুত একটা ইডিয়টের মতো আচরণ করছে। কিছু দেখছে না, শুনছে না। কোনও কিছুতেই রিঅ্যাক্ট করছে না। ভুলভাল জিনিসে রিঅ্যাক্ট করছে।

প্র: ‘কাটমানি’ গানটা দিয়ে কি তবে মানুষকে নাড়িয়ে দিতে চাইলেন?

উ: নাড়া দিতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কথাটা প্রথম বলেছেন উনি। আমার সেটা ভাল লেগেছে। তাই গানে‌র মধ্য দিয়ে বলেছি। সারা ভারতবর্ষে এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে ২৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এটা হোয়াইট মানি নয়। এটাও তো কাটমানি। দেশের আর কোনও নেতা তো সেটা ফেরত দিতে বলেনি।

প্র: এই গানের পরে আপনার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

উ: কী প্রশ্ন, বলুন? আমি তো সারা জীবন ডাক্তারদের বিরুদ্ধে গান লিখেছি। তার মানে আমি ডাক্তার দেখাব না? সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও গান লিখেছি। তার মানে আমি তাঁদেরও বিরুদ্ধে? আমি চিরকালই এটা করে আসছি। মানুষ আমার সম্পর্কে কী ভাবল, তাতে আমার কিচ্ছু যায়-আসে না।

প্র: আপনার অনুরাগীদের মনেও তো প্রশ্ন এসেছে।

উ: ভাল করে খুঁজে দেখুন, এই গানটা কত শেয়ার হয়েছে! কয়েকটা পাঁঠা ছাড়া কেউ আমার বিরুদ্ধে কিছু বলেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সৎ সাহসকে সাধুবাদ জানান। আমার গানকে আপনারা সাধুবাদ জানান। উল্টে আপনাদের মনে হচ্ছে, আমার কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। এত দিন আমি রাজনীতি থেকে কিছু নিলাম না, হঠাৎ সুবিধে নিতে চলে যাব?

প্র: আনন্দ প্লাসের সাক্ষাৎকারে বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চেও যেন আপনার কণ্ঠে ‘কাটমানি’ শোনা যায়...

উ: সোশ্যাল মিডিয়ায় গেয়ে দিলাম। ওখানে গাইতে অসুবিধে কোথায়? বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে আমাকে মেলাবেন না। সকালে টুইট করে ভূয়সী প্রশংসা। বিকেলেই আমাকে ‘ভণ্ড’ বলে দিল! আমি ওকে যোগ্য জবাব দিলাম বলে? ও কিন্তু তখন বুঝে গেল, গানটা ওর বিরুদ্ধেও।

প্র: শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলেও আপনি পরিচিত।

উ: আমি সুভাষ চক্রবর্তীরও ঘনিষ্ঠ ছিলাম। আমি দীর্ঘ দিন নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার পাশে ছিলেন না। আমি একজন সংগ্রামী মানুষ। আমি আমার মতো করেই কাজ করি।

প্র: বিকল্প শক্তির উত্থান কী ভাবে দে‌খছেন?

উ: এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে যেটা বলার, সেটাই বলছি। এই মুহূর্তেও মমতার বিকল্প নেই। যাদের বিকল্প বলে ভাবা হচ্ছে, তারা দেশটাকে গ্রিস বানিয়ে দেবে। ইতিমধ্যেই সুদের হার কমিয়ে দিয়েছে। যে সেনারা শারীরিক ভাবে সক্ষম নন, তাঁদের পেনশনেও ট্যাক্স বসিয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, এরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কী করবে!

প্র: কিন্তু শাসকের বিরুদ্ধেও সাধারণ মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়েছেন...

উ: আমার বাবার বিরুদ্ধে তাঁর দাদার অনেক অভিযোগ ছিল। তার মানে আমার বাবা কি খারাপ?

প্র: এই প্রজন্মের কারও গান আপনাকে অনুপ্রাণিত করে?

উ: ভাল গান হচ্ছে। কিন্তু আমাকে অনুপ্রাণিত করছে না। রূপম ইসলাম ভাল গায়। রূপঙ্কর, অনুপমও ভাল গাইছে।

প্র: ওঁদের গানে কীসের অভাব মনে হয়?

উ: সেটা আমি জানি না।

প্র: রানা সরকারের সঙ্গে আপনার গানের চরিত্র নীলাঞ্জনাকে নিয়ে যে ছবিটা করার কথা, সেটা কি হবে?

উ: শুনলাম, রানা কিছু সমস্যার মধ্যে পড়েছে। এখন তো হচ্ছে না।

প্র: আপনার সঙ্গে রানার যোগাযোগ রয়েছে?

উ: না, ও তো ফোন বন্ধ করে কোথায় একটা গিয়ে বসে রয়েছে (হাসি)।

প্র: ছবিটা কি আদৌ বাস্তবায়িত হবে?

উ: অন্য প্রযোজকের সঙ্গে করতে পারি। আমি নিজেও প্রযোজনা করতে পারি। ‘কুয়াশা যখন’ তো আমিই প্রোডিউস করেছিলাম।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE