Advertisement
E-Paper

নায়ক হওয়ার বাসনা কখনও হয়নি

নাটকের প্রেম, মেগার চাপ, ছবির স্বাধীনতা থেকে অবসরযাপন নিয়ে খোলাখুলি শুভ্রজিৎ দত্ত নাটকের প্রেম, মেগার চাপ, ছবির স্বাধীনতা থেকে অবসরযাপন নিয়ে খোলাখুলি শুভ্রজিৎ দত্ত

রূম্পা দাস

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৭ ১১:০০
শুভ্রজিৎ দত্ত।

শুভ্রজিৎ দত্ত।

ভালমানুষের চরিত্র যেমন অবলীলায় করতে পারেন, তেমনই খলনায়কের চরিত্রেও তিনি সাবলীল। থিয়েটারের মঞ্চ, ধারাবাহিক, বড় পরদা— চুটিয়ে অভিনয় করছেন শুভ্রজিৎ দত্ত।

কিন্তু শিক্ষকতার মতো নিরাপদ পেশা ছেড়ে অভিনয় কেন? ‘‘কলেজে পড়ানোর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু শরিকি বাড়ি। মামলা-মোকদ্দমা সামলানোর ব্যাপার ছিল। তাই দূরে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না। স্কুলের চাকরি পেয়েছিলাম হিঙ্গলগঞ্জে। বাড়ি, পাড়া, বন্ধুবান্ধবকে মিস করতাম। তার পর আকাশ বাংলায় রিসার্চার হিসেবে ঢুকি। দেবপ্রতিম দাশগুপ্তের নন-ফিকশন প্রজেক্টে জড়িয়ে যাই। সেই শুরু।’’

নাটকে তাঁর হাতেখড়ি ক্লাস সিক্সে, পাড়ার থিয়েটারে। পরে বন্ধুরা মিলে তৈরি করেছিলেন ‘অর্কজ’। প্রথম বড় নাটক রমাপ্রসাদ বণিকের নির্দেশনায় পূর্ব পশ্চিমের ‘অংশুমতী’। সেই প্রথম নাটক করে টাকা উপার্জন। এর পর চেতনার ‘হরিপদ হরিবোল’, ব্রাত্য বসুর ব্যোমকেশ, গৌতম হালদারের ‘রক্তকরবী’তে বিশু পাগল, যোজক-এর ‘নষ্টনীড়’...শুভ্রজিতের নাটকের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ। এখন মেগার চাপে কি আর থিয়েটারের সুযোগ পান? ‘‘প্রতি বছর সরস্বতী পুজোয় পাড়ায় নাটক করি। মেগার চাপে কিছু দিন বন্ধ ছিল। তবে সামনের বছরই মঞ্চে ফিরছি।’’

এখনকার বেশির ভাগ ধারাবাহিকে শুভ্রজিতের চরিত্র নেগেটিভ। রহস্যটা কী? ‘‘একটা সময়ে শুধু ভালমানুষের অভিনয় করতাম। সৎ, আদর্শবাদী চরিত্র। অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের টেলিফিল্ম ‘গোধূলি’তে নেগেটিভ চরিত্রের শুরু। তার পর দেখি, নেগেটিভে কত ভ্যারিয়েশন! পাড়ার লোকেরা জানেন, আমি বাস্তবে ও রকম মানুষ নই। ফলে বিপরীতধর্মী চরিত্র করার চ্যালেঞ্জটাই আলাদা।’’ টাইপকাস্ট হয়ে গেলে কেমন লাগে? ‘‘মানুষের জীবনটাই তো ধূসর। আর মোটা দাগের মার্কা মেরে দেওয়ার প্রবণতা তো আছেই। আগে সবাই বলত, কেন এত ভালমানুষের চরিত্রে অভিনয় করি? এখন বলেন, এত নেগেটিভ কেন?’’ হাসেন শুভ্রজিৎ।

বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন শুভ্রজিৎ। হিরো হওয়ার ইচ্ছে হয়নি? ‘‘কখনও বাসনা হয়নি যে, নায়ক হব। মাঝেমাঝে মনে হয় যে, হিরোর কিছুই করার নেই। আমার আসলে ক্যারেক্টার অ্যাক্টিং ভাল লাগে। কমেডিয়ানেরও নিজস্ব হিরোইজম আছে। ফলে নায়ক হোক কিংবা পার্শ্বভূমিকা, চরিত্রটাই আমার কাছে আসল।’’

ইন্ডাস্ট্রিতে কম করেও কাটিয়ে ফেলেছেন পনেরোটা বছর। তবে বদলটা ইদানীং তাঁর বেশ চোখে পড়ে। ‘‘আউটডোরে গেলে পরান বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুমন্ত্র মুখোপাধ্যায়ের মতো সিনিয়র অভিনেতাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছাড়াও অভিনয় নিয়ে আদান-প্রদান অনেক বেশি হয়। আমরা তো আসলে নুড়ি কুড়োচ্ছি। এঁদের অভিজ্ঞতা আমাদের মতো দুর্বল অভিনেতার জন্য মূল্যবান। আগে এই আলোচনা, চর্চার পরিবেশটা বেশি ছিল। এখন সিনিয়ররা চলে যাচ্ছেন। পরিবেশটাও বদলাচ্ছে। আর মেগার জনপ্রিয়তা তো বাড়ছেই।’’

গোয়েন্দা না ভিলেন— কোন চরিত্রে দেখতে চান নিজেকে? ‘‘এ রকম গোয়েন্দা হতে চাই, যে ভিলেনকে খুব কষ্ট করে পাকড়াও করছে। আবার পরে দেখছে যে, সে নিজেই ভিলেন। মানে দু’মুখো চরিত্র... দুটোই লোভনীয়। এ ক্ষেত্রে আলাদা করে বলতে হলে, গোয়েন্দাকে বেছে নেব,’’ হাসতে হাসতে বললেন শুভ্রজিৎ। আর টিভি, সিনেমা না কি নাটক— কোনটা সবচেয়ে কাছের? জবাব এল, ‘‘ছোট পরদা আমাকে পরিচিতি দেয়। বড় পরদায় অনেক ধরনের সুযোগ। যেমন সিনেমায় মৃত্যু আগে, জন্ম পরে। সেটা একটা চ্যালেঞ্জ। তবে নাটক আমার প্রথম প্রেম, যাকে ভোলা যায় না।’’

এত কাজের চাপে অবসর পান? ‘‘তৈরি করে নিই। আমার পরিবার আছে। বাগবাজারে নিজের পাড়া আছে। সঙ্গে লেখালিখির চেষ্টা, পড়াশোনা, ছবি আঁকা, মাউথঅর্গ্যান বাজানো, ফুটবল খেলা... গানও গাই। ‘চিত্রকর’-এ প্রথম প্লেব্যাক করেছি। আসলে অবসর খুঁজে নিলে সময় কাটানোর বিষয়ের অভাব হয় না,’’ দরাজ গলায় বললেন শুভ্রজিৎ।

Celebrity Interview Subhrajit Dutta Actor Tollywood শুভ্রজিৎ দত্ত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy