মহাকুম্ভ উপলক্ষে প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করছেন কোটি কোটি মানুষ। প্রায় প্রত্যেকেই পুণ্যস্নানের সময়ে ছবি ও ভিডিয়ো করেছেন। বাংলার তারকা-সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ব্রিটিশ গায়ক ক্রিস মার্টিন কিংবা হেমা মালিনী— গা ভাসিয়েছেন একই ধারায়। এ বার কুম্ভমেলার ভিড় ভেঙে দিয়েছে আগের সমস্ত নজির। দুর্ঘটনাও ঘটেছে তেমন, কখনও আগুন লেগেছে, কখনও আবার পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে পুণ্যার্থীদের। তবু মহাকুম্ভে যাওয়ার হিড়িক কমেনি।
আরও পড়ুন:
দেশ-বিদেশ থেকে এত তারকা এসেছেন পুণ্যস্নান করতে, কিন্তু প্রয়াগরাজে যাওয়া হয়নি টলিপাড়ার অভিনেত্রী সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের। তা নিয়ে অবশ্য বিশেষ আক্ষেপ নিয়ে সুদীপার। বরং তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কুম্ভ নিয়ে এত বাড়াবাড়ি, কিন্তু ঘরের কাছে গঙ্গাসাগর যাচ্ছেন না কেন?’ কুম্ভযাত্রা নিয়ে খানিক ব্যঙ্গও করেছেন তিনি। সোমবার সুদীপা সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমার আশপাশের প্রায় সবাই মহাকুম্ভে ডুব দিয়ে দিলেন, তাঁদের তো সবারই মোক্ষলাভ হয়ে যাবে। ভূত হয়ে একা একা বাঁচব কী করে? মগডালে পা ঝুলিয়ে আড্ডা হবে না?’’ যদিও বাস্তব জীবনে কুম্ভমেলায় যে যেতে চান সুদীপা তেমন নয়। আনন্দবাজার অনলাইনকে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমার কুম্ভে যেতে ইচ্ছে করে না। কারণে ধর্মীয় উন্মাদনা পছন্দ নয়। ‘ঈশ্বরভক্তি’টা বড্ড ব্যক্তিগত। সেখানে এত চিৎকার, ভিড়, ধাকাধাক্কি তার মধ্যে ঈশ্বরের সঙ্গে সংযোগ আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’’
এ বছর কুম্ভমেলায় তারকা সমাগম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেত্রী। প্রশ্ন তুলেছেন তাঁদের পুণ্যস্নানের ছবি তোলা নিয়ে। সুদীপার মতে সবটাই আসলে বিজ্ঞাপন ও প্রচারের কেরামতি। সুদীপার কথায়, ‘‘ছোটবেলায় কখনও প্রয়াগরাজের কথা সে ভাবে শুনিনি, বরাবর গঙ্গাসাগরের কথা শুনেছি। আসলে সবটাই হুজুগ। সবাই করছে, আমাকেও করতে হবে। না হলে জীবন বৃথা। আচ্ছা যাঁরা কুম্ভ যাচ্ছেন তাঁরা গঙ্গাসাগর যাচ্ছেন না কেন? সেখানে এতটা দেখনদারি নেই, গ্ল্যামার নেই! আসলে কুম্ভে ভিআইপি পাস নিয়ে, ইয়ট ভাড়া করে, ফাঁকা গঙ্গায় গিয়ে ছবি তুলে দেখানোর মধ্যে এটা বুঝিয়ে দেওয়া যে আমি গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয়।’’
সুদীপার মতে, সবটাই আসলে ক্ষমতার প্রদর্শন। সুদীপা খানিক ব্যঙ্গ করে বলেই, ‘‘লোকে আসলে বোঝাতে চাইছেন আমার আর হেমা মালিনীর মধ্যে কোনও ফারাক নেই। ব্যক্তিগত জীবনে গুরুত্ব কম পাচ্ছেন, তাই বাইরে দুনিয়ার গুরুত্ব পাওয়ার আশায় এ সব করছেন।’’
সুদীপা মনে করেন, এ ভাবে ঈশ্বরলাভ করা যায় না। পাশাপাশি তিনি জানেন, এই মতামতের জন্যও তাঁকে কটাক্ষের শিকার হতে হবে। তবে সে সব সমালোচনাতেও তাঁর কোনও খেদ থাকবে না, জানিয়েছেন অভিনেত্রী।