সুমন মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
২০০০ সালে সুমন মুখোপাধ্যায় মঞ্চস্থ করেন দেবেশ রায়ের ‘তিস্তা পারের বৃত্তান্ত’। অত্যন্ত মঞ্চ সফল এই প্রযোজনা নিয়ে এক দিকে যেমন প্রশংসার ঝড় অন্যদিকে বিতর্কও কম হয়নি। দেবেশ রায়ের উপন্যাস তিস্তা পারের বৃত্তান্তের কেন্দ্রীয় চরিত্র বাঘারুকে যে ভাবে সুমন উপস্থাপিত করেছিলেন, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারের ঘনিষ্ট কেউ কেউ। আনন্দবাজার অনলাইনের ‘অ-জানা কথা’-য় এসে সুমন জানালেন ঠিক কী হয়েছিল।
সুমন বলেন, ‘‘এই উপন্যাসকে নাটকের রূপ দিয়ে তা মঞ্চস্থ করব ঠিক করার পর দেবেশ বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু তিনি ফেলেছিলেন আর এক ধন্দে।’’ কী সেই ধন্দ? সুমনের কথায়, ‘‘দেবেশ বাবুর সঙ্গে দেখা করে নিজের ইচ্ছের কথা জানাই। তিনি বলেছিলেন, নাট্যরূপ পড়ে বলতে পারব না আপনারা আমার লেখার প্রতি সুবিচার করেছেন কি না। মূল কাঠামোটা খানিকটা তৈরি হওয়ার পর আমি দেখে বলতে পারি, অনুমতি দেব কি না।’’ সুমন জানিয়েছেন, ওই সময় তিনি বেশ ধন্দেই পড়ে গিয়েছিলেন। এত বড় প্রযোজনা লেখকের আপত্তিতে মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া যথেষ্টই কঠিন। কিন্তু কাঠামো তৈরির পর দেবেশ বাবু মহড়া দেখে খুশি হন। এবং তার পর নিজেও প্রায় জুড়ে গিয়েছিলেন প্রযোজনায়। এই সময় সুমনের সঙ্গে আরও গাঢ় হয় দেবেশ রায়ের সম্পর্ক। কিন্তু মঞ্চায়নের সময়ই অবসরপ্রাপ্ত আমলা, প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক তথা ভাওয়াইয়া শিল্পী সুখবিলাস বর্মার সঙ্গে বিরোধ বাঁধে সুমনদের। এমন কি প্রযোজনা থেকে নিজের নামও সরিয়ে নেন সুখবিলাস। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই শনিবার সুমন জানান, তিস্তা পারের মঞ্চায়ন নিয়ে আপত্তি করেছিল সিপিএম। তা এতদূর পর্যন্ত গড়ায়, যে সুমনকে সিপিএমের তরফে ডেকে পাঠিয়ে নির্দিষ্ট কতগুলো দৃশ্য নাটক থেকে বাদ দেওয়ার কথা পর্যন্ত বলা হয়। তা মানতে পারেননি নাট্য পরিচালক সুমন। এই প্রসঙ্গেই সুমন জানিয়েছেন, রাজ্যের প্রাক্তন এক মুখ্যমন্ত্রীও তাঁকে ডেকে কতগুলো দৃশ্যে নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু কারও আপত্তিতেই মাথা নোয়াননি বলে দাবি করেছেন তিস্তা পারের বৃত্তান্তের নাট্য পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়। পাশাপাশি সুমন এ-ও জানিয়েছেন, আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে বাঘারুদের প্রাসঙ্গিকতা আগের মতোই থাকলেও, তিনি নতুন করে তা আর মঞ্চায়ন করতে চান না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy