ব্যোমকেশ, অজিত, সত্যবতী ও পরিচালক। ময়নাগুড়ির মৌলানির হাটে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
পুজোর আগেই উৎসবের মেজাজ চলে এল ডুয়ার্সে। সৌজন্যে পরিচালক অরিন্দম শীলের ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে সিনেমার শুটিং।
এক মাসের লম্বা শুটিং। পুরোটাই ডুয়ার্সে হবে। মঙ্গলবার থেকে শুটিং শুরুও হয়ে গিয়েছে। কখনও চা বাগানের সাহেবি বাংলোর উঠোন ঘিরে উপছে পড়া ভিড। আবার কখনও ডুয়ার্সের ১০০ বছরের পুরানো হাটে। কখনও আবার ডুয়ার্সের শতবর্ষের পুরোনো রেল স্টেশন জমজমাট। সব মিলিয়ে ডুয়ার্সে এখন যেন হই হই ব্যাপার চলছে। খুশি লাটাগুড়ি লাগোয়া এলাকার অনেকেই।
সিনেমার নাম ‘ব্যোমকেশ পর্ব’। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অমৃতের মৃত্যু’ কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত এই ব্যোমকেশের গল্পে সান্তালগোলা নামে একটি কাল্পনিক এলাকার উল্লেখ ছিল। কিন্তু সেই নামটা শুনেই ডুয়ার্সের সুনতালেখোলার কথা মনে পড়ে গিয়েছিল পরিচালক অরিন্দমবাবুর। ১৯৪৬ সালের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে ডুয়ার্সের প্রকৃতিও মিলে যাওয়ায় এই এলাকা চষে বেড়িয়েছিলেন অরিন্দম এবং ছবির চিত্রনাট্যকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। পথপ্রদর্শকের কাজ করেছিলেন শিলিগুড়ির আইনজীবী তথা রিসর্ট ব্যবসায়ী দীপজ্যোতি চক্রবর্তী। মে মাসের গোড়াতেই ব্যোমকেশ পর্বের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন তাঁরা। এ বারে দিনক্ষণ হিসাব কষে কবে কোন দিন কোথায় শুটিং ঠিক করে, সেই মতো মাঠে নেমে পড়ল টিম ব্যোমকেশ।
ব্যোমকেশ আবীর চট্টোপাধ্যায়, সত্যবতী সোহিনী সরকার, অজিত ঋত্বিক চক্রবর্তীদের সঙ্গে রজতাভ দত্ত, কৌশিক সেন, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, জুন মাল্য সকলেই হাজির ডুয়ার্সে। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত শুটিং হয়েছে চেল নদীর পাড়ে রানিচেরা চা বাগানের চেল ক্লাব বা ওয়েস্টার্ন ডুয়ার্স ক্লাবে। ব্যোমকেশকে সেখানে ধুতি পরে ক্রিকেট খেলতে হয়েছে। এমন দৃশ্যে সহশিল্পী হিসাবে শিলিগুড়ি অগ্রগামী ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পের খেলোয়াড়রাও উপস্থিত ছিলেন। বুধবার লাটাগুড়ি এবং ময়নাগুড়ির মাঝে থাকা মৌলানিতে গ্রামের হাটে শুটিং চলেছে। শতবর্ষ পেরিয়ে যাওয়া এই হাটে অনায়াসে ৬০ বছর আগের মুহূর্ত তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলেই তাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
সিনেমায় দেখা যাবে, ইংরেজ আমলের প্রাচীন সমাধিক্ষেত্রও। জরাজীর্ণ পুরনো রেল স্টেশন অথবা ঐতিহ্যশালী চায়ের দোকানও ঢুকে পড়বে সিনেমায়। সব জায়গাতেই শুটিং হবে। এর আগেও ব্যোমকেশ হিসেবে আবীর ডুয়ার্সে এসেছিলেন। তখন পরিচালক ছিলেন অঞ্জন দত্ত, আর ছবি ‘আবার ব্যোমকেশ’।
ডুয়ার্সে বহু বার নিজে অভিনয় করে গেলেও পরিচালক হিসাবে এত দীর্ঘ দিন নিয়ে অরিন্দম এই প্রথম এসেছেন। কিন্তু প্রথম দুদিনের শুটিংয়ে ভীষণ তৃপ্ত অরিন্দম। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ এত সাহায্য করছেন যে, শুটিংয়ে কোনও সমস্যাই হচ্ছে না। ডুয়ার্স আমার ভীষণ পছন্দের জায়গা। তাই এখানে ভীষণ আনন্দে কাজ করতে পারব বলেই মনে করছি।’’
পুজোর বেশি দিন বাকি নেই। তার আগে ব্যোমকেশের মতো সিনেমার পুরো ভাগে ডুয়ার্স চলে আসায় খুশি বাসিন্দা সহ পর্যটক ব্যবসায়ীরাও। মৌলানির গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহাদেব রায় নিজেও উৎসাহী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব সহযোগিতা করব। পর্যটন প্রসারে এই ধরনের সিনেমা দারুণ কাজ দেয়। সে কারণেই আমরা চাই এখানে শুটিং হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy