বিখ্যাত ভয়ের সিনেমা ‘দ্য ক্রিচার ফ্রম দ্য ব্ল্যাক লেগুন’। তার ভিলেন আমাজনের উভচর মাছ-মানুষ। একটি মেয়েকে একতরফা ভালবেসেছিল। ছ’বছর বয়সে দেল তোরো সেই সিনেমাটা দেখেন। ঠিক করেন, এক দিন এই ‘কানকোওয়ালা’ লোকটাকে জিতিয়ে দেবেন।
‘টোয়াইলাইট’ সিনেমায় মানব ও দানবের হিট প্রেমের পর, ভ্যাম্পায়ার ও নেকড়ে-মানুষরা এখন নতুন ‘ক্রাশ’। দেল তোরো-ও এ যুগের নামী পরিচালক। মহিষাসুর, বামনদের ‘সুপারহিরো’ করে ফিল্ম তৈরি করেন।
এ বারে শুনিয়েছেন ১৯৬২ সালের আমেরিকা-রাশিয়ার ঠান্ডা লড়াই চলাকালীন এক রূপকথা। নায়ক দক্ষিণ আমেরিকার এক উভচর সবুজ রঙের জীব। তাকে ল্যাবরেটরিতে শেকল পরিয়ে নৃশংস গবেষণা চলছে। নায়িকা গবেষণাগারের বোবা সাফাইকর্মী। শৈশবেই তার বাগ্যন্ত্রটা ছিঁড়ে নিয়েছিল এক মানুষ। ইশারায় কথা বলে কাছাকাছি চলে আসে ওরা।
দ্য শেপ অব ওয়াটার
পরিচালনা: গিলের্মো দেল তোরো
অভিনয়: স্যালি হকিন্স,
ডাগ জোন্স, মাইকেল শ্যানন
৮/১০
ভিন-প্রজাতিতে ভালবাসা! ২০১৮-তেও তা নিষিদ্ধ প্রেম। এ গল্পের আনাচেকানাচে কর্মস্থলে যৌন হেনস্থা, বর্ণ-রাজনীতি, সমকাম, আশা ও নিরাশা একসঙ্গে আছে। সাব-প্লটগুলোও এক-একটা সিনেমা হওয়ার ক্ষমতা ধরে। তবু ভারাক্রান্ত লাগে না। গল্প এগোয় মসৃণ কবিতার মতো। নায়ক-নায়িকা কথাই বলতে পারে না, অথচ ছবির সম্পদ অনবদ্য সংলাপ! পরিচালক মিশিয়েছেন কল্পনা, বিজ্ঞান, উপকথা, অধ্যাত্ম ও অতিপ্রাকৃত। নামমাত্র বাজেটের ছবিটি তাই একই সঙ্গে রোম্যান্স, হরর ও অপেরা। নির্বাক অভিনয়ে চ্যাপলিনকে মনে করিয়েছেন নায়িকা স্যালি। মৎস্যপুরুষ ডাগ জোনস শুধু অঙ্গ সঞ্চালন ও জান্তব ‘টর্র্র’ শব্দেই অসাধ্যসাধন করেছেন।
দ্বিতীয়ার্ধে মানবই দানব হয়। দানব দেখা দেয় ঈশ্বরের রূপে। শেষে ভগবান হয়েছেন ফিল্ম-নির্মাতাও। যুক্তিবাদীরা ছবির গল্পে হাসবেন। কিন্তু এই ‘ব্যাঙ রাজপুত্র’র কাহিনিকে যে ভাবে সাজালেন দেল তোরো, তাতে বছরের সেরা পরিচালকের সব পুরস্কার তাঁর ঘরেই আসা উচিত। অবাস্তবের প্রতি বরাবরই বিরূপ অস্কার কর্তৃপক্ষ। সেই প্রথা ভেঙে ১৩টা নমিনেশন দিয়েছেন ছবিটিকে। হিসেব মতো সবচেয়ে বেশি। অনেক নামীদামি সম্মান পাবেন পরিচালক। এই গরিব দেশের তুচ্ছ প্রতিবেদকের একটা সাষ্টাঙ্গ প্রণাম তিনি কি গ্রহণ করবেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy