হিন্দি প্লেব্যাক ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর উত্থান ধূমকেতুর মতো। ‘ওয়সা ভি হোতা হ্যায় পার্ট টু’ (২০০৩) ছবিতে ‘আল্লাহ কে বন্দে’ গাওয়ার পরে তারকার চেয়ে কম ছিলেন না কৈলাস খের। ওই দশকে পরপর ছবিতে গান গেয়েছেন। তার পরে ‘কৈলাসা’ ব্যান্ডের জন্ম এবং দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে তঁার কণ্ঠ। জনপ্রিয় একটি হিন্দি চ্যানেলে ‘ইন্ডিয়ান প্রো মিউজ়িক লিগ’ রিয়্যালিটি শোয়ে মুম্বই ওয়ারিয়রস টিমের অন্যতম ক্যাপ্টেন কৈলাস। আগামী বছরের গোড়ায় অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার শুরু হবে।
লকডাউনে গান-বাজনার কতটা সুযোগ পেলেন? ‘‘সেপ্টেম্বর থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর লকডাউনের ওই ক’টা মাসও বাড়িতে বসে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান করেছি। আসলে আমাদের কার ভিতরে কতটা কী আছে, সেটা কঠিন পরিস্থিতি না এলে বোঝা যায় না। আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য শো করেছি। এই দেশের ডাক্তার-নার্সের জন্যও অনুষ্ঠান করেছি। আমার ছেলে কবীর বলেছে, ‘লকডাউনে তো তুমি আগের চেয়েও বেশি ব্যস্ত ছিলে’...’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন শিল্পী।
পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন কৈলাস। সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর জেরে স্বজনপোষণ বিতর্ক যেমন জোরালো হয়েছিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে, তেমনই কয়েকটি মিউজ়িক লেবেলের একাধিপত্য নিয়েও সরব হয়েছিলেন সোনু নিগম। সেই বিষয়ে কৈলাসের কী মত? ‘‘তিক্ত অভিজ্ঞতা আমারও রয়েছে। ‘চলতে চলতে’ ছবিতে একটা গান গেয়েছিলাম। স্টুডিয়োয় ওই রেকর্ডিংয়ের সময়ে প্রশংসিত হয়েছিলাম। আর কেরিয়ারের গোড়ার দিকে, নিজের কাজ নিয়ে পাঁচ জনকে বলতে ভালই লাগে। তাই সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলে বলেওছি, শাহরুখ খানের ছবিতে আমার পরবর্তী গান। কিন্তু ছবি রিলিজ়ের পরে দেখেছিলাম, ওই গান অন্য এক শিল্পীর কণ্ঠে রয়েছে,’’ স্মৃতিচারণ তাঁর।
ফিল্ম বা মিউজ়িক ইন্ডাস্ট্রির উপরে সকলের নজর বলেই এখানকার বৈষম্য নিয়ে বেশি কথা হয়, মনে করেন কৈলাস। ‘‘সব ইন্ডাস্ট্রিতেই বৈষম্য, পক্ষপাত রয়েছে। তবে সেটার পরিবর্তন হলেই ভাল। কারণ এতে একজন শিল্পীকে তাঁর যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয় না,’’ বললেন গায়ক।
নতুন প্রজন্মের গায়কদের মধ্যে অরিজিৎ সিংহ যত বেশি গান গেয়েছেন, বাকিরা তার ধারেকাছেও নন। ‘‘শাহরুখ খানের ‘স্বদেশ’ ছবিতে ‘ইয়ুহি চলা চল...’ গান গেয়েছিলাম। সঙ্গীত নির্দেশক ছিলেন এ আর রহমান। আগে কম্পোজ়ার ঠিকই করে নিতেন, নির্দিষ্ট এক শিল্পীকে দিয়ে গান গাওয়াবেন। প্রযোজকও সেটা মেনে নিতেন। কিন্তু এখন একই গান ৭০ জনকে দিয়ে গাওয়ানো হয়। তার পরে কিছুটা সম্পর্কের সমীকরণ, কিছুটা অন্য অঙ্ক এইসব দেখে একজন শিল্পীর গান ছবিতে রাখা হয়। এটা ঠিক নয়,’’ মত তাঁর।
২০১৮ সালে ‘মিটু’ আন্দোলনের সময়ে কৈলাসের বিরুদ্ধেও উঠেছিল একাধিক অভিযোগ। তার প্রভাব তাঁর কেরিয়ারে কতখানি? অন্য প্রশ্নের উত্তর দিলেও এ বার নিরুত্তরই রয়ে গেলেন ইন্ডাস্ট্রির পছন্দের সুফি গায়ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy