Advertisement
E-Paper

আর আমি কি না যাচ্ছিলাম সুইসাইড করতে

‘নাম শাবানা’র ছবির প্রচারে কলকাতায় এসে ছিলেন মনোজ বাজপেয়ী। কেরিয়ারের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন তিনি সাক্ষাৎকারের শুরুতেই হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘আপনাদের বাঙালিবাবুকে বলুন রয়্যালটির চেকটা আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে।’’ বাঙালিবাবুর নাম নীরজ পাণ্ডে। ছোটবেলা কলকাতায় কাটিয়েছেন বলে তাঁকে এই নামে ডাকছেন মনোজ বাজপেয়ী।

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪১

সাক্ষাৎকারের শুরুতেই হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘আপনাদের বাঙালিবাবুকে বলুন রয়্যালটির চেকটা আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে।’’ বাঙালিবাবুর নাম নীরজ পাণ্ডে। ছোটবেলা কলকাতায় কাটিয়েছেন বলে তাঁকে এই নামে ডাকছেন মনোজ বাজপেয়ী। চেক পাঠানোর কারণ, মনোজের স্ত্রীর নামও শাবানা। আর ‘নাম শাবানা’ ছবির প্রযোজক যে নীরজ। সাতচল্লিশ বছর বয়সি অভিনেতা অবশ্য কলকাতার স্পেশ্যাল স্ক্রিনিং নিয়ে নয়, উত্তেজিত দুপুরে অভিনেতা জিতের বাড়িতে সরষে ইলিশ দিয়ে সাদা ভাত খেতে। শেষ পাতে রসগোল্লা।

একটু পরে জন্মালে ভাল হত

‘সত্য’, ‘শূল’ থেকে শুরু করে ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’, ‘আলিগড়’ পর্যন্ত, তাঁর ফিল্মোগ্রাফি যে কোনও অভিনেতার রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। নিঃসন্দেহে তিনি দেশের অন্যতম সেরা ‘মেথড’ অভিনেতা। গতবছর তিনটে ছবি, এ বছরও ‘নাম শাবানা’, ‘সরকার থ্রি’ আর ‘লাভ সোনিয়া’। বছরে তিনটে ছবিতে অভিনয় একজন মেথড অভিনেতার ক্ষেত্রে বেশি হয়ে যাচ্ছে না? ‘‘হুমম... তা হচ্ছে। এখন এত ভাল-ভাল কাজ হচ্ছে, ছাড়তেও পারছি না। আসলে কেরিয়ারের মধ্যভাগে শুধু টাকার জন্য কাজ করেছি। মনে হয়, আমি আগে জন্মেছি। পরে জন্মালে ভাল হত,’’ দুঃখের ছাপ গলায়। পরক্ষণেই দুর্দান্ত অভিনেতার মতো গলার স্বর পালটে ফেলে যোগ করেন, ‘‘এখনও চেহারাটা কেমন ধরে রেখেছি বলুন?’’

কাঁচি চালানো বন্ধ হোক

এখনও প্রত্যেকটা স্ক্রিপ্ট হাতে পাওয়ার পর এক সপ্তাহ সময় নেন সেটা পড়ার জন্য। প্রথমে চরিত্রের ব্যাকগ্রাউন্ড বোঝার চেষ্টা করেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে না হলে, সোজা চলে যান অভিজ্ঞ কোনও লোকের কাছে। ‘‘কিন্তু পরদায় দেখলেন এত কষ্ট করে নেওয়া শটই থাকল না। এর থেকে বিরক্তিকর আর কী হতে পারে?’’ সেন্সর বোর্ডের কাজে বেশ বিরক্ত মনোজ। ‘নাম শাবানা’ ছবিও তিনটে ‘কাট’য়ের পর তবে ‘ইউএ’ সার্টিফিকেট পেয়েছে।

‘‘সেন্সর বোর্ড যেন কাঁচি নিয়ে বসে আছে। আরে শুধু সার্টিফিকেট দিক না ওরা,’’ বলেন মনোজ। সিবিএফসি-র কাজে তিতিবিরক্ত হয়েই কি ওয়েব শর্ট ফিল্ম ‘আউচ’ করলেন? ‘‘হা হা হা... ওটা আগেই এসেছিল। এত ইন্টারেস্টিং প্রজেক্ট। আমি চাই বিদেশের মতো এখানেও একই রকম স্মার্ট টিভি সিরিজ হোক। তা হলে সেন্সর কাঁচির ভয়মুক্ত হয়ে, প্রাণখুলে অভিনয় করতে পারব,’’ জানান তিনি।

ব্যর্থতার থেকে বড় শিক্ষক নেই

দু’-দু’টো জাতীয় পুরস্কার পেলেও মনোজ বাজপেয়ীর রাস্তাটা মোটেও মসৃণ ছিল না। ২০০৩ থেকে একটা ছবিও বক্সঅফিসে চলেনি। বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে। মাঝ কেরিয়ারে যাঁর এমন ঝড়ঝাপটা, কেরিয়ারের শুরুও তো সাইক্লোন! চার বার ইন্টারভিউ দিয়েও সুযোগ পাননি ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-য়। গভীর হতাশায় নাকি আত্মহত্যা করার কথাও ভেবেছিলেন?

‘‘সত্যি, ভাবলে আশ্চর্য লাগে, আমি কি না সুইসাইড করতে যাচ্ছিলাম,’’ বলেন তিনি! একটু থেমে যোগ করেন, ‘‘আমি তো ‘স্টারকিড’ নই যে, পরপর ফ্লপ করলেও ছবি পাব! ব্যর্থতা আমাকে অনেক শিখিয়েছে। এর থেকে ভাল শিক্ষক আর হয় না। চম্পারনের (বিহার) ছেলে তো, ম্যানেজ করে নিয়েছি।’’

তারকার ছেলে না হওয়ার দুঃখ আছে, তা হলে? ‘‘ধুর, ও সব স্বজনপোষন নিয়ে ভেবে কী হবে! ওটা আছে। থাকবেও। আমাদের মতো নামগোত্রহীনদের স্ট্র্যাগল করে যেতে হবে। সেটাই স্বাভাবিক,’’ শ্লেষ মেশানো গলায় কথাটা বলে কফিকাপে চুমুক দিলেন মনোজ বাজপেয়ী।

অরিজিৎ চক্রবর্তী

Manoj Bajpayee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy