৭৮ বছর আগে দেশ স্বাধীন হয়েছে। প্রতি বছর ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতার দিনটি উদ্যাপন করা হয় দেশ জুড়ে। সেই সঙ্গে প্রতি বছর কিছু প্রশ্নও ঘুরতে থাকে সচেতন নাগরিকদের মনে। দেশ কতটা স্বাধীন হয়েছে? আদৌ কি স্বাধীন হয়েছি আমরা? আজও সেই সব প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক।
বাঙালি অভিনেতাদের মধ্যে টোটা রায়চৌধুরীর দাদু ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু নাতি টোটা অভিনয়ে না এলে কী হতেন? এর আগে একাধিক সাক্ষাৎকারে অসংখ্য বার এর উত্তরে জানিয়েছেন, তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনিতে যোগ দিতেন। তাঁর চোখে ‘স্বাধীনতা’ শব্দের অর্থ কী? স্বাধীনতার দিবসের সকালে আনন্দবাজার ডট কম-এর প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতা বললেন, “স্বাধীনতা একান্তই ব্যক্তিনির্ভর। স্বাধীন দেশেও যদি নিজেকে পরাধীন মনে করি, তা হলে আমি পরাধীন। আবার পরাধীন দেশেও আমরা স্বাধীন হতে পারি।” অভিনেতার মতে, বিপ্লবীরা নিজেরা স্বাধীনচেতা ছিলেন। তাই তাঁরা বীরদর্পে কাজ করে গিয়েছেন।
তাঁর এই ধারণা শুধুই দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, এমনও জানিয়েছেন টোটা। তাঁর কথায়, “স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে আমরা অন্যায়কে সহ্য করে যাই। নেপথ্যে অবশ্যই কারণ থাকে। এটাও এক প্রকার পরাধীনতা।” আবার তিনি এও দেখেছেন, অনেকে বিপদ আসন্ন জেনে প্রতিবাদ করেন। অন্যায়ের সঙ্গে আপোষে নারাজ তাঁরা। টোটার মতে, এঁরাই প্রকৃত স্বাধীন।
আরও পড়ুন:
এই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে অভিনেতাদের কথা। রুপোলি পর্দার তারকা সে ক্ষেত্রে কতটা স্বাধীন? টোটা কি ভারতীয় সেনাবাহিনিতে যোগ দিতে না পারার জন্য আফসোস করেন? অভিনেতার মনে একেবারে যে আক্ষেপ নেই সে কথা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, “অবশ্যই ভারতীয় সেনাবাহিনিতে যোগ দিতে পারলে দেশের জন্য বেশি কাজ করতে পারতাম। অভিনেতা হয়ে কিছুই তো করতে পারলাম না!” একই সঙ্গে তিনি ফের উল্লেখ করেছেন আগের বলা কথাগুলো। টোটা পেশাজীবনের স্বাধীনতা বলতে যা বুঝিয়েছেন, সেটি অভিনেতাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে মনে করেন তিনি। তাঁর আরও সংযোজন, “পর্দার অভিনেতাদের আমরা ‘নায়ক’ বা ‘নায়িকা’ বলে সম্বোধন করি। প্রকৃত ‘নায়ক’ কিন্তু ভারতীয় সেনারা।”
তাঁর আরও বক্তব্য, স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ব্রিটিশকে দেশ থেকে তাড়ালেও তাদের রেখে যাওয়া মানসিকতা থেকে এখনও সম্পূর্ণ ভাবে কেউ মুক্ত নয়। তাই এখনও বিদেশি উপহার, সম্মান, শিক্ষার প্রতি প্রবল মোহ সকলের। অথচ দেশের শিক্ষা, সম্মান, উপহারের কোনও মূল্য নেই!