শিশুদিবসে মুক্তি পেল ট্রেলার।
অনীশ বসু। মাত্র ১০ বছর। বন্ধ ফ্ল্যাটে একা থাকে সারাদিন। মা-বাবা সকাল হলেই অফিসে দৌড়য়। একা থাকতে থাকতে ছেলেবেলা যখন হাঁফিয়ে ওঠে, তখনই আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো তার হাতে আসে মোবাইল। বাবা-ই হাতে ধরে গেমের নেশা ধরায় ছেলেকে।
তার পর?
বয়স বাড়ে। সময় এগোয়। ছেলে হয়ে ওঠে আগ্রাসী। পড়াশোনায় অমনোযোগী। মা-বাবার প্রতি সারাক্ষণ অসন্তুষ্ট। গেম খেলতে না পেলে আছড়ে ভাঙে মুঠোফোন। এক সময় নীতিজ্ঞান খুইয়ে বাবার গায়েও হাত তোলে...!
সবার ঘরে ঘটতে থাকা এই ঘটনাই উঠে আসছে রাজ চক্রবর্তীর আগামী ছবি ‘হাবজি গাবজি’-তে। শিশুদিবসে তারই ঝলক দেখা গেল মুক্তি পাওয়া ট্রেলারে।
নিটোল প্রেমের গল্প বলতে অভ্যস্ত রাজ হঠাৎ কেন গতিপথ বদলালেন? পরিচালকের যুক্তি ছিল, বাংলা ছবির মানচিত্র বদলাচ্ছে। বদলে যাওয়া সময়ে সমকালীন ও যুগপোযোগী গল্প পর্দায় দেখাতে তাই তিনিও পছন্দ করছেন।
এমন ঘোর বাস্তবকে দেখানোর অনুপ্রেরণা কোথা থেকে পেলেন পরিচালক? আগের এক সাক্ষাৎকারে আনন্দবাজার ডিজিটালকে রাজ জানিয়েছিলেন, ‘‘চারপাশে যাকেই দেখি, সে-ই মোবাইলে মগ্ন। কারও সঙ্গে কারওরই কথা বলার ফুরসত নেই। বাড়িতে ভাগ্নীকে দেখি, হেডফোন গুঁজে মোবাইলে কী করে যাচ্ছে। জিজ্ঞেস করলে বলে, পাবজি খেলছি। ‘ধর্মযুদ্ধ’র রেকি করে ফেরার সময়ে সৌমিকের (হালদার) কাছে শুনেছি, ওর বাড়িতেও একই ছবি।’’ পাশাপাশি কিশোরদের মধ্যে বাড়তে থাকা মোবাইল আসক্তি নিয়ে সংবাদপত্রে লেখালিখিও এই গল্পের পিছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ পদ্মনাভ দাশগুপ্তের।
আরও পড়ুন: গয়নায়, শাড়িতে সুন্দরী শ্রাবন্তী, পায়েল, পার্নো, উজ্জ্বল প্রদীপের আলোয়
ছবিতে মা-বাবার ভূমিকায় পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং শুভশ্রী। ‘অনীশ বসু’র চরিত্রে ছোট পর্দার জনপ্রিয় স্যমন্তকদ্যুতি মৈত্র। স্যমন্তকদ্যুতিকে স্টার জলসার ‘প্রথমা কাদম্বিনী’তে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া, অর্জুন দত্তের ‘সহবাসে’ ছবিতেও নজর কেড়েছে স্যমন্তকদ্যুত।
'প্রলয়’-এর দীর্ঘ দিন পরে রাজের ছবিতে কাজ করছেন পরমব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘কাজের সূত্রেই আমাদের বন্ধুত্বেরও নতুন শুরু হল।’’ পরমব্রতের স্ত্রীর চরিত্রে শুভশ্রী। এর আগে ‘ধূমকেতু’তে দু’জনে কাজ করেছিলেন। তবে সেই ছবি মুক্তি পায়নি। এই ছবিতে প্রথম বার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন শুভশ্রী। রাজের ছবি মানেই কি এখন শুভশ্রী? ‘‘এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। পরিচালক-প্রযোজক বলতে পারবে’’, হালকা হাসি নায়িকার কণ্ঠে। আর পরিচালক কী বলছেন জবাবে? ‘‘রাজের ছবি মানেই ভাল অভিনেতা-অভিনেত্রী। শুভশ্রীর মতো অভিনেত্রীর সঙ্গে পর পর তিনটে কেন, দশটা ছবিও করতে পারি। আর আমার ট্র্যাক রেকর্ড দেখলেই বুঝবেন, যখন যে অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছি, গোটা দুই-তিন ছবি তাঁর সঙ্গে পর পর করেছি।’’
আরও পড়ুন: জঙ্গলের মধ্যে ভুল রাস্তায় ইচ্ছাকৃত নিয়ে গিয়েছিল চালক, বুদ্ধিবলে রক্ষা পান উপাসনা
ছবিতে ক্যামেরায় থাকবেন মানস গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গীতের দায়িত্বে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। রাজের কথায়, ‘‘এই ছবি ছোটদের নয়। বরং আমাদের সকলের। কারণ, বড়দের কাছ থেকেই ছোটদের মধ্যে মোবাইলের আসক্তি ছড়িয়ে পড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy