বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎই একদিন হাসপাতালে ভর্তি হতে হল বছর চৌত্রিশের এক বিদেশি মহিলাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই অনুভব করেন কব্জিতে প্রবল যন্ত্রণা। দু’হাতের আঙুলের অবস্থাও একই। পরিস্থিতি এমন দাঁড়াল যে, হাতই আর নাড়তে পারেন না। পেশায় চিকিৎসাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত, তাই হাসপাতালে যেতে দেরি করেননি।
অনেক পরীক্ষার পর, ডাক্তারেরা বলেন অত্যধিক হোয়াটসঅ্যাপ করাই তাঁর এই ব্যথার কারণ। সবাইকে ক্রিসমাসের শুভেচ্ছা জানাতে, আগের রাতে যে ঘণ্টা ছয়েক খালি হোয়াটসঅ্যাপেই কাটিয়েছেন!
ডাক্তারি পরিভাষায় তিনি ‘হোয়াটসঅ্যাপিটিস’য়ে আক্রান্ত।
ব্যাপারটা কী
এতটা পড়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন ‘হোয়াটসঅ্যাপিটিস’ ব্যাপারটা কী! ডাক্তারি জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’য়ের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে হোয়াটসঅ্যাপ করায় হাতে, এবং বিশেষ করে আঙুলে যে অসহ্য ব্যথা হয় তাকে বলে হোয়াটসঅ্যাপিটিস। ঠিক যেমনটা হয়েছিল এই মহিলার। ১২০ গ্রামের ফোনকে ছ’ঘণ্টা ধরে ব্যবহার করায়। পেনকিলার দেওয়ার সঙ্গে, সেই মহিলাকে সাবধান করে বলা হয়েছে নিজের স্মার্টফোন থেকে দূরে থাকতে।
তাই বলে কি...
গ্যাজেট ফ্রিক বলে পরিচিত অভিনেতা অঙ্কুশ। নতুন গ্যাজেট এলেই সেটা তাঁর হস্তগত হওয়া চাই-ই-চাই। এই তো বাজারে আসার দিনই কিনে নিয়েছেন গ্যালাক্সি এসফাইভ। নিজেই স্বীকার করেন শু্যটে না থাকলে ১৫ সেকেন্ডের বেশি ফোন চেক না-করে থাকতে পারেন না। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁর সব থেকে পছন্দের অ্যাপ। তা এত ব্যবহারে কখনও হাতে ব্যথা অনুভব করেননি? “প্রথম প্রথম খুব হাতে ব্যথা হত। এখন অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে আমার টাইপিং স্পিড যা, তাতে গিনেস বুকেও নাম লেখাতে পারি,” হাসতে হাসতে বলছিলেন তিনি। যোগ করলেন, “এখন গ্যালাক্সি গিয়ার (হাতঘড়ির মতো পরার স্মার্টওয়াচ) এসে সুবিধা হয়েছে, ফোনে টাইপ না করে ভয়েস কমান্ডে সেরে নিই। তাই আঙুলের উপর চাপ কমই পড়ে।”
ডাক্তার কী বলেন?
অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. কুনাল সেনগুপ্তের মতে এমনটা হতেই পারে। “অনেক সময় একটানা মেসেজ বা টাইপ করলে হাতে আর আঙুলে ব্যথা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তার কারণ, ভুল পশ্চার-এ একটানা টাইপ করার ফলে ‘ওভারএক্সরশন পেন’। এমন সমস্যা এড়ানোর জন্য দরকার ঠিক পশ্চারে টাইপ করা, মানে কনুই আর কব্জি সাপোর্টে রেখে টাইপ করা। এই পশ্চারটা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের থেকে জেনে নিলেই ভাল। তবে একবার ব্যথা ধরে গেলে মাঝে মাঝে রিস্টের এক্সারসাইজ করতেই হবে।”
একা রামে রক্ষে নেই
গ্যাজেট থেকে শারীরিক বিপত্তি এই প্রথম নয়। ১৯৯০-এ ছিল নিনটেনডিনিটিস (গেমিং কনসোল নিনটিন্ডোয় খেলার ফলে হাত ও কাঁধে ব্যথা), ২০০০-এ ছিল প্লেস্টেশন থাম্ব (প্লেস্টেশন কন্ট্রোলার অনেক সময় হাতে নিয়ে থাকার ফলে বুড়ো আঙুল ফুলে যাওয়া) আর ২০০৯-এ উই-নি (উই কনসোলে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি গেম খেলে, হাঁটুতে ব্যথা)।
মানে, হোয়াটস্অ্যাপ করুন। কিন্তু আঙুলের যত্ন নিয়ে।
আনাচে কানাচে
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায় পরিচালিত ‘রামধনু’ ছবিতে
রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ফার্স্টলুক’ ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
দেবশ্রী রায় ফাউন্ডেশন-য়ের অনুষ্ঠানে মনোময় ও দেবশ্রী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy