ঐন্দ্রিলা
মাসখানেক আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ‘ফাগুন বউ’। ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র মহুলকে (ঐন্দ্রিলা সেন) নিয়ে যে সমস্যা শুরু হয়েছিল, তার রেশ এখনও কাটেনি। ঐন্দ্রিলার সেটে দেরি করে আসা, তাড়াতাড়ি ছুটি দেওয়ার দাবি, নিজের আলাদা মেকআপ রুম-সহ তাঁর নানা বায়নাক্কায় প্রযোজনা সংস্থা ও চ্যানেল নাকি প্রচণ্ডই বিরক্ত।
ঐন্দ্রিলাকে সে কথা জানানোয় তিনি স্পষ্ট বললেন, ‘‘বারোটায় কলটাইম দিলেও তিনটের আগে কোনও দিন হাতে সিন পাইনি। সেটে সকলেই দেরিতে পৌঁছত। পরিচালকই লেটে আসতেন। সেখানে আমি আগে গিয়ে কী করব? আমার জন্য কাউকে বসে থাকতে হয়নি। তা হলে বরং দুঃখ পেতাম। কিন্তু বাড়ি থেকে এনে বসিয়ে রাখা ছাড়া কিছুই হত না। প্রোডাকশন হাউসের বক্তব্য ছিল, তারা টাকা দিচ্ছে বলে তাদের কথামতো সেটে গিয়ে বসে থাকতে হবে। তা আমি পারব না, গোড়ায় বলে দিয়েছিলাম। তাই মনে হয়, ভালই হয়েছে শো বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ একটু থেমে বললেন, ‘‘মাঝেমাঝে কষ্টও হয়। এত ভাল চলেছে শো-টা!’’
ঐন্দ্রিলার দাবি মেটাতে গিয়ে ইউনিট নাকি নাজেহাল হত। তার উপরে তিনি আলাদা মেকআপ রুমের দাবিও জানিয়েছিলেন, যেখানে ধারাবাহিকের সেটে এখনও অনেক সিনিয়র আর্টিস্টই মেকআপ রুম শেয়ার করেন। সেটাও কি সত্যি? ‘‘প্রিভেসি বলে তো একটা ব্যাপার আছে। তা ছাড়া ন’-দশ বছর কাজ করছি। গোড়া থেকেই আমার মেকআপ রুম আলাদা। কিন্তু আমার সঙ্গে অনেক ব্যাগও থাকত। অনেক সময়ে কেউ দেখা করতে এলে, বিক্রমের ঘরে গিয়ে বসতে হত। সেখানেই কথা বলতাম।’’ অভিনেত্রীর বক্তব্য, কারও নামে তো দোষ দিতেই হবে, তাই সব দোষের ভাগীদার হয়েছে মহুল।
কিন্তু শেষের দিকে তো প্রত্যাশিত টিআরপিও বজায় রাখতে পারছিল না ‘ফাগুন বউ’। ধারাবাহিকের সেটে অভ্যন্তরীণ বিবাদই কি তার জন্য দায়ী? ‘‘যে টিআরপি দিয়ে ‘ফাগুন বউ’ শুরু হয়েছিল, সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ধারাবাহিকের প্রথম দিকটা কিন্তু কাস্টিংয়ের উপরেই নির্ভর করে। সত্যিই খুব ভাল স্ক্রিপ্ট ছিল। আমাদের কাজ, কো-অর্ডিনেশন সব ভাল ছিল। অন্যকে দোষারোপ করা ছেড়ে ধারাবাহিকের প্রতি যদি সকলে নজর দিত, তা হলে ‘ফাগুন বউ’ আরও চলত। তা ছাড়া আরও কিছু সমস্যা ছিল। সিরিয়াল সাত দিন চলার বদলে পাঁচ দিন করে দেওয়ায় প্রোডাকশনেরও চাপ হচ্ছিল,’’ স্পষ্টবক্তা ঐন্দ্রিলা।
তা হলে অভিনেত্রী এখন কী করছেন? শোনা যাচ্ছে, ছোট পর্দায় তিনি নাকি আর আগ্রহী নন। ‘‘আপাতত স্ক্রিপ্ট পড়ছি। কথা চলছে বিভিন্ন হাউসের সঙ্গে। এখনই কিছু ফাইনাল নয়। ছবির কথাও চলছে। তবে টেলিভিশনে যদি ভাল অফার আসে, সঙ্গে ভাল টাকা, তা হলে সেটাও করব,’’ বললেন ঐন্দ্রিলা।
শো বন্ধ হয়ে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার রেশ রয়ে গিয়েছে এখনও। প্রোডাকশনের সঙ্গে ঐন্দ্রিলার মতবিরোধ স্পষ্ট। শোনা যাচ্ছে, লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ও শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রোডাকশন হাউস তাঁর সঙ্গে আর কাজ করতে আগ্রহী নয়। যে পারিশ্রমিক তিনি ‘ফাগুন বউ’-এ পেতেন, তা ক’টা প্রযোজনা সংস্থা দিতে পারবে, সেটাও প্রশ্ন। তাই ঐন্দ্রিলার কেরিয়ার কোন খাতে বয়, তার উত্তর সময়ই দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy