Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অ্যান অ্যাপল আ ডে

প্রত্যাশা তুঙ্গে ছিল আইফোন সিক্স নিয়ে। আশা মিটল কি? মার্কিন মুলুকে বসে খোঁজ নিলেন অনি শীলআইফোন সিক্স এবং আইফোন সিক্স প্লাস-এর পর্দা উন্মোচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাপল ভক্তরা তাদের ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে বাস্তবের মিল-অমিল, প্রতিটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করতে বসে গিয়েছেন। বিশ্বের সমস্ত অ্যাপল ভক্তদের মঙ্গলবার একটিই জিজ্ঞাস্য ছিল। বাস্তবতা কি প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়েছে?

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

আইফোন সিক্স এবং আইফোন সিক্স প্লাস-এর পর্দা উন্মোচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাপল ভক্তরা তাদের ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে বাস্তবের মিল-অমিল, প্রতিটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করতে বসে গিয়েছেন। বিশ্বের সমস্ত অ্যাপল ভক্তদের মঙ্গলবার একটিই জিজ্ঞাস্য ছিল। বাস্তবতা কি প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়েছে?

আমাদের হাতে স্টিভ জোবস আইফোন তুলে দিয়েছেন ২০০৭-এ। আইফোন সিক্স সেই আইফোন ওয়ানের মতো আবার এক প্রকৃত পণ্য উন্নয়ন। অ্যাপলের নতুন মোবাইল সিস্টেম আই-পে। এটি প্রযুক্তিগত দিক থেকে আইফোন সিক্স-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। হঠাত্‌ যেন ‘মোবাইল পেমেন্ট’ আজ বাস্তব হয়ে গেল। এ বার বিশ্লেষণ করা যাক প্রত্যাশা বনাম প্রাপ্তির

প্রত্যাশা: একটি বড় আইফোন

প্রাপ্তি: দুটি বড় আইফোন

একটি কম্পিউটারের ডিজাইন ফোনের মতো বা ঘড়ির মতো করতে হলে সাইজের সঙ্গে আপস করতেই হবে। অ্যাপল কিছু সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইফোন সিক্স ডিজাইনে। কয়েক মাসের মধ্যেই হয়তো আমরা অবাক হয়ে ভাবব কী ভাবে ওই ‘ছোট্ট’ ফোন আগে ব্যবহার করতাম। কাজের মানুষরা আইফোন সিক্স প্লাসটাই বেশি পছন্দ করবেন। জোবসের জমানার পরে অ্যাপল বড় স্ক্রিন গ্রাহকদের জন্য নিয়ে এল। যদিও স্টিভ মনে করতেন গ্রাহকেরা বড় স্ক্রিন পছন্দ করবে না। তিনি আসলে ভেবেছিলেন আইপ্যাড পিসি যুগকে শেষ করে দেবে।

গুজব তা হলে সত্যি হল। এখন আমাদের আছে বেসিক আইফোন সিক্স এবং সুপারসাইজড আইফোন সিক্স প্লাস।

প্রত্যাশা: আরও বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন সিস্টেম

প্রাপ্তি: ক্ষমতার জুড়ি নেই

৬৪ বিট এ-এইট চিপ দাবি করে যে এটা পূর্বতনের থেকে ২৫ শতাংশ বেশি গতিতে সাধারণ কাজগুলো করে দেবে এবং ৫০ শতাংশ অধিক গতিতে ছবি এবং গ্রাফিক্স সংক্রান্ত কাজগুলো করবে। এ ছাড়া এম-এইট কো-প্রসেসর গতি সংক্রান্ত (মোশন মুভমেন্ট) কাজগুলোর তত্ত্বাবধান করবে।

প্রত্যাশা: আইওএস এইট

প্রাপ্তি: আইওএস এইট

জুন মাসে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ডেভেলপার কনফারেন্সে আইওএস এইট সর্বসমক্ষে আসে। এই নতুন ওএস অ্যাপলের তিনটি পণ্য আইফোন, ম্যাক ও আইক্লাউডকে একীভূত করেছে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য স্ক্রিনের ওপর ফুটে ওঠা স্বাগতমূলক কী-বোর্ড। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় ‘ইনটুইটিভ অনস্ক্রিন কী-বোর্ড’। ক্যামেরার গুণাবলি এবং আরও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য, যেমন অন্যান্য ডিভাইসের সঙ্গে সংযোগ এবং নিরাপত্তা, এই আইওএস এইট অবশ্যই আরও উন্নতি করেছে।

প্রত্যাশা: স্যাফায়ার গ্লাস স্ক্রিন

প্রাপ্তি: ‘আয়ন স্ট্রেনদেংড’ শক্তিসম্পন্ন গ্লাস স্ক্রিন

বহু দিন থেকেই নতুন আইফোন সিক্স-এর স্যাফায়ার ক্রিস্টাল ডিসপ্লে নিয়ে গুজব রটেছিল। কারণ পেটেন্টের ব্যাপারটা কী ভাবে যেন বাইরে বেরিয়ে আসে। স্যাফায়ার রয়েছে, কিন্তু সেটা অ্যাপল ওয়াচের কভারে। নতুন আইফোনকে ঢেকে রেখেছে একটি অন্যতম সাধারণ গ্লাস। অ্যাপলের ভাষায় ‘আয়ন স্ট্রেনদেংড’ গ্লাস। এই ডিসপ্লে গ্লাসটি বেশ কিছু রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। এই আবরণ কাচকে আরও শক্তিশালী এবং মজবুত করে। ঠিক এই প্রক্রিয়াটি কর্নিং কোম্পানি ব্যবহার করে ‘গোরিলা গ্লাস’ তৈরির জন্য। আমরা বলতেই পারি নতুন আইফোন গোরিলা গ্লাস ব্যবহার করেছে। তা হলে অ্যাপল ইচ্ছাকৃত ভাবে ডিসপ্লে গ্লাসের ‘ব্র্যান্ড নেম’টাকে এড়িয়ে গেল কেন?

প্রত্যাশা: আরও বেশি ব্যাটারি লাইফ

প্রাপ্তি: দাবি করছে আরও বেশি ব্যাটারি লাইফ আছে

উন্নত ধরনের সিস্টেম চিপ এবং ব্যাটারির সাহায্যে। অ্যাপল দাবি করছে একবার ফুল চার্জ দিলে আইফোন সিক্স ১১ ঘণ্টা, এবং আইফোন সিক্স প্লাস ১২ ঘণ্টা চলবে ওয়াই-ফাই ব্রাউজিংয়ের সঙ্গে। যেটা আগে ছিল ১০ ঘণ্টা আইফোন ফাইভ সি-র ক্ষেত্রে। টকটাইম ও ১০ ঘণ্টা থেকে বেড়ে ১৪ ঘণ্টা হচ্ছে আইফোন সিক্স এবং ২৪ ঘণ্টা হচ্ছে আইফোন সিক্স প্লাস-এর জন্য।

প্রত্যাশা: ব্যয়বহুল

প্রাপ্তি: কিছুটা ব্যয়বহুল

আমেরিকাতে ১৬ জিবি আইফোন সিক্স এর মূল্য ১৯৯ ডলার (দু’বছরের চুক্তির সঙ্গে)। এই প্রারম্ভিক মূল্য আগের আইফোনের (আইফোন ফাইভসি) জন্য ছিল। আইফোন সিক্স প্লাস-এর জন্য আরও ১০০ ডলার বেশি দিতে হচ্ছে। এবং যদি আপনি ১২৮ জিবির ফোনটা কেনেন, তা হলে আপনাকে দিতে হবে ৪৯৯ ডলার। চুক্তিহীন (যাকে আমেরিকায় বলে ‘আনলকড’) ফোনের মূল্য বেশ বেশি ৯৪৯ ডলার। অ্যাপল আইফোন সিক্স দামের দিক থেকেও আপাতত অ্যাপলের সবথেকে দামি ফোন।

প্রত্যাশা: সব চেয়ে ভাল স্মার্টফোন

প্রাপ্তি: সব থেকে ভাল আইফোন

আইফোন সিক্স অথবা আইফোন সিক্স প্লাস অবশ্যই আগের আইফোনগুলোর থেকে উন্নত এবং রূপান্তরিত। নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় যে এটিই সবথেকে ভাল আইফোন। কিন্তু যাঁরা আগে আইফোন ব্যবহার করেননি, তাঁরা এই সব ঢক্কানিনাদে কি প্রভাবিত হবেন? দুঃখিত, কিন্তু আইফোন সিক্স সে রকম ভাবে কোনও ছাপ ফেলতে পারবে না। কারণ বিশ্লেষণে এটুকু পরিষ্কার আইফোন সিক্স শুধুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছাকাছি আসার চেষ্টায় সক্ষম হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE