Advertisement
E-Paper

এক বার জানাল না রানি, ভোটেও অভিমানী দেবশ্রী

খুব দুঃখ পেয়েছেন দেবশ্রী রায়। রানি মুখোপাধ্যায়ের বিয়ে হল অথচ মাসি দেবশ্রীকে সে ভাবে জানানোই হল না, এই কষ্টটা তিনি মন থেকে মানতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার গড়িয়াহাটের বাড়িতে সুগত বসুর প্রচারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে নিতে মুখ খুললেন দেবশ্রী।

নিবেদিতা দে

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:১৬
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

খুব দুঃখ পেয়েছেন দেবশ্রী রায়। রানি মুখোপাধ্যায়ের বিয়ে হল অথচ মাসি দেবশ্রীকে সে ভাবে জানানোই হল না, এই কষ্টটা তিনি মন থেকে মানতে পারছেন না।

বৃহস্পতিবার গড়িয়াহাটের বাড়িতে সুগত বসুর প্রচারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে নিতে মুখ খুললেন দেবশ্রী।

“কিচ্ছু বলার নেই আমার...এত ঘনিষ্ঠ... এমন সম্পর্ক... এক বার জানানোর পর্যন্ত প্রয়োজন মনে করল না? এই পুজোতেই তো ওদের বাড়ি গিয়েছিলাম। আদি (আদিত্য চোপড়া) তো সারাক্ষণই আসত। আড্ডা হত...আদি রানির পিছনে লাগত...এত আপন সম্পর্ক...”

কথা শেষ হল না। একটু থেমে ক্ষুব্ধ গলায় বললেন, “প্রচারে গিয়ে যদি কেউ রানির ব্যাপারে জানতে চায়, কী বলব আমি? আমার দিকটা এক বারও ভাবল না? ওকেও তো মিডিয়া ফেস করতে হয়...

ভাবল না, মাসিকে কেউ জানতে চাইলে কী উত্তর দেবে? আরে আমাকেও তো এক ডাকে সকলে চেনে রে বাবা...আমিও তো ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পাওয়া অভিনেত্রী।”

বৈশাখের দুপুরে শীততাপনিয়ন্ত্রিত ঘরের মধ্যেও উত্তপ্ত দেবশ্রী। “যে মেয়েটা প্রত্যেকটা গরমের ছুটি কাটাত দেশপ্রিয় পার্কের বাড়িতে, যে মেয়েটা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলত, মাসি আমি তোর মতো সুন্দর হতে পারব...? সেই মেয়ে বা তার মা, মানে আমার দিদি কৃষ্ণাদি কি ইতালি যাওয়ার আগে এক বারও বলতে পারত না, বিয়ে দিতে যাচ্ছে?”

দুঃখে অভিমানে দেবশ্রী রায় কার্যত বাকরুদ্ধ। “ভাবতে পারিনি রানির বিয়ের খবরটা খবরের কাগজ পড়ে, টিভি দেখে জানতে হবে...বিয়ের আগের দিন দাদাকে (মৃগেন) কৃষ্ণাদি ফোনে কী বলল? না, কাল রানির বিয়ে...তার পর দিন আবার ফোন করে বলল বিয়ে হয়ে গেল। বাহ! এত দিনের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত এই?”

কিন্তু আপনার দিদি পূর্ণিমা লাহিড়ী তো কত কথা জানিয়েছেন মিডিয়াকে, আপনার মা নাকি বেনারসি রেখেছেন নাতনিকে দেবেন বলে? “পুরো মিথ্যে, ইনফ্যাক্ট মা খুব দুঃখ পেয়েছেন...খবরটা এ ভাবে পেয়ে শরীরটাও খারাপ হয়ে গেছে। পূর্ণিমাদি বড় দিদি তো, সব কিছু রেখে ঢেকে, সামলে নিতে চাইছে... কিন্তু রানির তো বোঝা উচিত ছিল, পূর্ণিমা, ঝুমা, মৃগেন রায় আর দেবশ্রী রায় এক নয়...!”

এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে একটু থামলেন, তার পর ফিরে গেলেন স্মৃতিতে। জন্মের সময় নার্সিংহোমে এক পঞ্জাবি বাচ্চার সঙ্গে পাল্টে গিয়েছিলেন রানি। সেই পঞ্জাবি মা আবার রানিকে ছাড়তেই চাননি।

শেষে হাতে লাগানো ট্যাগ দেখিয়ে নিস্তার পাওয়া গিয়েছিল। “ছোটবেলায় রানির পিছনে লাগতাম, পঞ্জাবি মেয়ে বলে! আর আজ সত্যিই বিয়ে হল পঞ্জাবি বাড়িতে।”

ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে ভোট প্রচারে দেবশ্রী রায়। ছবি: সামসুল হুদা।

পাশেই ছিলেন দেবশ্রীর দাদা মৃগেন। জানালেন, মেয়েকে সম্প্রদান করার খুব শখ ছিল রাম মুখোপাধ্যায়ের। সেই শখ মেটাতেই রানির বাবাকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ইতালিতে। “সিঁদুরদান, সাতপাক শুনেছি সবই হয়েছে। রেজিস্ট্রিটা হবে মুম্বইতে...।” মৃগেন বললেন, “রানিও ফোন করেছিল। বলল, ‘বিয়ে করে ‘থকে’ গেছি’...ওকে আর কী বলব...আমি তো মামা...কৃষ্ণাদিই যখন যাওয়ার আগে কিচ্ছু বলল না, আমি আর কথা বাড়াইনি।”

আচ্ছা, আদিত্য চোপড়াকে বিয়ে করে কি রানির মাথা ঘুরে গেছে বলে মনে হয়?

দেবশ্রীর জবাব, “মাথা ঘুরেছে কি না বলতে পারব না। আমার কাছে রানি আজও আমার বোনঝি, রানি।”

কিন্তু যারা ‘সিলসিলা’ বা মোহাব্বতে বানায়, সেই যশরাজ ফিল্মসের মালিক আদিত্য চোপড়া। যশ চোপড়ার ছেলে। রানিই তো এখন বাড়ি বসে ঠিক করবেন কাকে কাকে ছবিতে রাখা হবে, কাকে নয়! দেবশ্রী বললেন, “আমি নিজস্ব ট্যালেন্টে বিশ্বাসী...কোনও দাদা-কাকা-বাবার রাজত্বে বিশ্বাসী নই।”

তবু এই বিয়েটা করে রানি কি ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনকে টেক্কা দিলেন না? অভিষেকের সঙ্গে রানির সত্যিই সম্পর্ক ছিল?

“সেটা ছিল না আমি জানি...।”

দেবশ্রী বরং আগের কথার খেই ধরে বলতে থাকেন, “এই কারণেই আমি মমতাদিকে (বন্দ্যোপাধ্যায়) এত শ্রদ্ধা করি। ওঁর নামের পিছনে জওহরলাল নেহরুর নাম নেই...কিংবা রাজীব গাঁধীর তকমা নেই...নিজে চষে নিজের জায়গা করেছেন...বংশ-পরিচয় বাবা-কাকা-জ্যাঠার সাপোর্ট লাগেনি।”

দেবশ্রীর আঁচ জ্বলতেই থাকে। দেখা যাক, রানি ফিরে এসে সেই আগুন জল করতে পারেন কি না!

nibedita de debashri roy rani mukherjee marriage of rani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy