Advertisement
E-Paper

ক্লিকেই হিট

এক সময় ছিল জুবিলির যুগ। তার পর এল ইনিশিয়াল কালেকশন। এখন সাফল্যের মাপকাঠি না কি ইন্টারনেটে ট্রেলরের বিস্ফোরণ। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত।গত শুক্রবার সলমন খানের ‘কিক’ রেকর্ড সংখ্যক স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছিল। দেশ জুড়ে ৪০০০ আর বিদেশে ৭০০ স্ক্রিন! এত বিপুল সংখ্যক স্ক্রিনে মুক্তি পাওয়ায় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ দাবি করছেন যে ছবিটা ব্লকবাস্টার হবেই। ভেঙে চুরমার করে দেবে নাকি বলিউডের সব রেকর্ড । তবে ‘কিক’য়ের বক্স অফিস সাফল্য নিয়ে যে রেকর্ডের কথা বলা হচ্ছে তার কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছিল আসলে এক মাস আগেই।

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৪ ০০:০০

গত শুক্রবার সলমন খানের ‘কিক’ রেকর্ড সংখ্যক স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছিল।

দেশ জুড়ে ৪০০০ আর বিদেশে ৭০০ স্ক্রিন! এত বিপুল সংখ্যক স্ক্রিনে মুক্তি পাওয়ায় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ দাবি করছেন যে ছবিটা ব্লকবাস্টার হবেই। ভেঙে চুরমার করে দেবে নাকি বলিউডের সব রেকর্ড ।

তবে ‘কিক’য়ের বক্স অফিস সাফল্য নিয়ে যে রেকর্ডের কথা বলা হচ্ছে তার কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছিল আসলে এক মাস আগেই। তারিখটা ১৫ জুন। সে দিন ছিল ছবির ট্রেলর লঞ্চ। সারা বিশ্ব দেখেছিল কী ভাবে একটা চলন্ত ট্রেনের সামনে সলমন তাঁর সাইকেল ছুড়ে দিয়ে ছেলেখেলা করে নেমে গিয়ে হেঁটে হেঁটে রেললাইনটা পার হয়ে যান! শুধু সেই দৃশ্য দেখার জন্যই তো ভূরি ভূরি ফ্যান ইউটিউবে লগ ইন করেছিলেন সে দিন।

আর সেই সুবাদে অফিশিয়াল ট্রেলরে মাত্র ৫৯ ঘণ্টায় ৫০ লক্ষের বেশি হিট। বলিউডে চার দিকে তখন সেটাই খবর। পিলে চমকে দেওয়া অ্যাকশন, কমেডি, প্রেমকী নেই সেখানে? তার সঙ্গে সলমনের ডায়লগ ‘মেরে বারে মে ইতনা মত সোচো দিল মে আতা হুঁ সমঝ মে নহি’। চড়চড় করে ভিউজ বাড়তে থাকে। তা দেখেই প্রযোজকরা ঘোষণা করেন ‘কিক’-এর ট্রেলরটা না কি দ্রুততম পঞ্চাশ লক্ষ ভিউয়ের রেকর্ড করা হিন্দি ট্রেলর।

শুধু রেকর্ডের জন্য

‘কিক’ ছবির ট্রেলর লঞ্চের ঠিক এক মাস পরেই ডিজিটাল দুনিয়ায় আর এক ধামাকা। এই বার হৃতিক-ক্যাটরিনা জুটি। ২৪ জুলাই লঞ্চ হয় ‘ব্যাং ব্যাং’য়ের ট্রেলর। চব্বিশ ঘণ্টা যেতে না যেতেই তেইশ লাখের ওপর ভিউজ! ছবির প্রযোজক ফক্সস্টার স্টুডিয়োস ঘোষণা করে যে, এই ট্রেলর-টিজার নাকি বলিউডে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। জলের মধ্যে থেকে বো ডেরেক স্টাইলে উঠছেন হৃতিক। আর তার পর শুরু হয়ে যাচ্ছে ধুন্ধুমার অ্যাকশন। বাইকে উল্টো মুখ করে বসে ক্যাটরিনা। জাপটে ধরে রয়েছেন হৃতিককে। আর তার সঙ্গে এলোপাথারি গুলি চালিয়ে যাচ্ছেন! ২ অক্টোবর মুক্তি পাবে ছবিটা। তবে তার অনেক আগেই ছবির ট্রেলর নিয়ে মেতেছে টুইটার।

এক দিকে হৃতিকের হিট ট্রেলর। হলিউডে আবার একই দিনে মুক্তি পায় দারুণ আলোচিত অন্য এক ট্রেলর। ছবির নাম ‘ফিফটি শেডস অব গ্রে’। মুক্তি পাবে আগামী বছর ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে। ট্রেলরের অন্যতম চমক হল বিশ্ববিখ্যাত পপস্টার বিয়ন্সের ‘ক্রেজি ইন লাভ’ গানটার এক্সক্লুসিভ ভার্সান। ছবির নায়ক প্রেমে বিশ্বাসী নন। তাঁর পছন্দ না কি ‘সিঙ্গুলার।’ আর তাই তিনি হাতকড়া দিয়ে বেঁধে রাখেন সুন্দরী নায়িকা ডাকোটা জনসনকে। নায়কের চোখে লাস্য। তখনই বিয়ন্সের গলায় ভেসে আসে কামনামিশ্রিত শীৎকারের সুর। ইউ টিউবে সেই সুর এতটাই জনপ্রিয় যে একটা সাইটে তার লিঙ্কটা পোস্ট করার ২৪ ঘণ্টা পরে সেখানে সেক্স টয় আর ইরোটিক জিনিসের অনলাইন সার্চের হার বেড়ে গিয়েছে চুয়ান্ন শতাংশ। দু’দিনেই ট্রেলর দেখেছেন ৭৮,৮২,৯৮১ জন দর্শক।

ট্রেলরেই প্রচার

আজকের দিনে বিশ্বজুড়ে সিনেমার জনপ্রিয়তার পারদের নতুন বেঞ্চমার্ক হল ট্রেলর, টিজার। ‘ধুম থ্রি’ ট্রেলরের ভিউয়ের সংখ্যা ছিল ১,৯০,৬১,৪৩০। তখনই বোঝা গিয়েছিল সমালোচকেরা যাই বলুন না কেন এ ছবির বক্স অফিস সাফল্য কেউ আটকাতে পারবে না। এখন রেকর্ড বলছে বিশ্বজুড়ে আমির খানের এই ছবির বক্স অফিস সংগ্রহ পাঁচশো কোটি ছাড়িয়েছে! ৮ জুলাই মুক্তি পেয়েছিল শহিদ কপূরের ‘হায়দার’য়ের ট্রেলর। মাথা কামানো শাহিদকে বিশাল ভরদ্বাজের ছবির ট্রেলরে দেখতে ভিউ সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ৩৮ লাখ।

দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত ‘ফাইন্ডিং ফ্যানি’র ট্রেলর এবং ট্রেলর কেন দেখা উচিত বলে যে ভিডিয়োটা লঞ্চ হয়েছে তা নিয়েও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ছবির পরিচালক হোমি আদজানিয়া বলেছেন, “এই ধরনের কমিউনিকেশনকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণ ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তার বাড়বাড়ন্ত। যদি প্রোমোগুলোর ক্রেজ সিনেমার জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হয়ে দাঁড়াতে পারে তা হলে সব্বাই চেষ্টা করবে এমন ভাবে প্রোমো বানাতে, যাতে তা বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছয়।”

স্মার্টফোনেই বিস্ফোরণ

সহজলভ্য ইন্টারনেট কানেকশন-যুক্ত স্মার্টফোনের জমানায় ইন্টারনেট ট্রেলরই হল প্রচারের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। কয়েক বছর আগেও হলে একটা ছবি মুক্তি পেলে তার সঙ্গে অন্য একটা ছবির ট্রেলর রিলিজ করাটাই ছিল দস্তুর। সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব বাড়াতে ট্রেলর লঞ্চ করাটা এখন একটা ক্লিকেই হয়ে যায়। আর এতে ফ্যানেরাও খুশি। যত বার ইচ্ছে তত বার তাঁদের আঙুলের এক টোকাতেই পছন্দের তারকার ছবি খুলে যায়। ট্রেলর/টিজারের এতই রমরমা যে গণমাধ্যমে একটা নতুন ট্রেন্ড হল চিত্রসমালোচনা বা সঙ্গীত সমালোচনা ছেড়ে ট্রেলরের সমালোচনা করা। মজার মজার ফরম্যাটে সে সব রিভিউ লেখা। তার সঙ্গে রেটিংও। কোন ট্রেলর ক’টা স্টার পেল, তা নিয়েও শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা!

মার্কেটিংয়ের নতুন অস্ত্র

শুধু নান্দনিক বিষয় নয়, ট্রেলর এখনকার মার্কেটিংয়ের একটা বড় অস্ত্রও বটে, বলছেন রিলায়্যান্স এন্টারটেনমেন্টের চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার শিবাশিস সরকার। “হিন্দি ছবির ক্ষেত্রে তো ইউটিউবের ট্রেলর হিট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে অ্যানালাইজ করা হয়। সেই পরিসংখ্যান দেখে আমরা বুঝতে পারি ছবির কোন অংশের বেশি ডিম্যান্ড রয়েছে। শাহরুখের ছবির ট্রেলর হিট থেকে বোঝা যায় যে ওই ফিল্মের বিদেশে খুব ভাল চাহিদা আছে। ট্রেলর হিটের ডেটা স্টাডি করে আমরা ছবির মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিও ঠিক করি। যেখানে হিট কম, সেখানে নতুন কী উপায়ে ফিল্ম প্রোমোট করা হবে, সে দিকে নজর দিই,” বলছেন তিনি।

সিনেমাওয়ালাদের সবচেয়ে বড় সুবিধে হল ডিজিটালি ট্রেলর লঞ্চ করে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যায় দর্শকের কাছে। “আমাদের আগে মিডিয়ার উপর নির্ভর করতে হত। কে কবে কী লিখবে, সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হত। সিনেমা হলে ট্রেলর লঞ্চ করলে একমাত্র যাঁরা হলে যাচ্ছেন, তাঁদের কাছেই পৌঁছনো যেত। এখন আর তা হয় না,” বলছেন টি-সিরিজের কর্ণধার ভূষণ কুমার। তাই আজকাল তাঁর কোম্পানি মিউজিক লঞ্চের থেকেও বেশি জোর দিচ্ছেন ছবির ট্রেলর লঞ্চ অনুষ্ঠানে!

কারা বানান এই ট্রেলর

হলিউডে অবশ্য বহু দশক ধরেই ব্যাঙের ছাতার মতোই গজিয়ে উঠেছে ট্রেলর হাউস। হলিউড স্টুডিয়োগুলো এক-একটা ছবির জন্য বিভিন্ন ট্রেলর হাউসকে দিয়ে অনেক ক’টা করে ট্রেলর বানিয়ে নেন। কোনওটা ব্যবহার হয় ডোমেস্টিক মার্কেটে, কোনওটা চলে যায় আন্তর্জাতিক দর্শকদের জন্য। ছকে ফেলে ট্রেলর বানানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল ছবির ‘র’, আনএডিটেড ভার্সান থেকে তিন ধরনের দৃশ্য ছেঁকে বের করে নেওয়া বিগেস্ট ব্যাংস, হটেস্ট কিসেস আর গভীর নাটকীয় মুহূর্ত। আর সেগুলো এডিট করেই তৈরি হয় ৩ মিনিটের একটা জমাট পিস। কী ধরনের এবং কী রঙের ফন্ট ব্যবহার করা হবে, সেটাও ঠিক করে এই ট্রেলর হাউসগুলোই। অস্কারে পাঠানোর মতো ছবি হলে নাকি হলিউডের বেশি পছন্দ সোনালি রঙে ‘ট্রাজান প্রো’ বলে একটি ফন্ট!

পেশাদার বলিউডও

বলিউডও পিছিয়ে নেই এই বিষয়ে। এখন না কি প্রায় ৯০ শতাংশ হিন্দি ছবির ট্রেলর বানানো হয় সেই সব এজেন্সিতেই। প্রতিটি ট্রেলর বানাতে এক মাস মতো সময় লাগে। এক বার ট্রেলর বানানো হয়ে গেলে সেটা আবার প্রযোজক/পরিচালককে দেখানো হয়। কিছু দর্শককে আলাদা করে দেখিয়ে তাঁদের মতামতও নেওয়া হয়। এত সময় দেওয়ার কারণ একটাই। বড়জোর ১ মিনিট সময়। এক চান্সে পাত্রী পছন্দ হওয়ার মতোই কঠিন ব্যাপার। অর্থব্যয় করতেও অসুবিধে নেই প্রযোজকদের। প্রতি ট্রেলর পিছু আজকাল বলিউড খরচ করে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা! ট্রেলর লঞ্চ করার দু-তিন দিন আগেই তা বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের দেখিয়ে দেওয়া হয়। মতামত চাওয়া হয়। কারণ ট্রেলর হিট না করলে সিনেমা হিট করানোটাও প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ১৬ বছর ধরে মুম্বইয়ে ট্রেলর বানিয়ে চলেছেন রবি পাড্ডা। সম্প্রতি ‘ব্যাং ব্যাং’-এর ট্রেলারও তাঁর হাতেই তৈরি। বলছেন, “টিজার হল ছবির প্রথম লুক যেটা স্বল্প সময়ের মধ্যে তৈরি হয়। তার পর আসে ট্রেলর। হৃতিকের সব ছবির ট্রেলর আমার কোম্পানি ‘টেনট্যাকলস্’এর হাতে তৈরি। ৫৮ সেকেন্ডের ‘ব্যাং ব্যাং’-এর ট্রেলর বানাতে সময় লেগেছে ৪৫ দিন। দু-তিন বার হৃতিক নিজে এসেও মিটিং করেছেন ট্রেলর নিয়ে। ৪-টে ট্রেলর তৈরি করেছিলাম। তার মধ্যে এটাই পছন্দ হয়েছে সবার।” ‘ব্যাং ব্যাং’-এর অন্য একটা থিয়েট্রিকাল ট্রেলর মুক্তি পাবে আগামী মাসে। তার ডিউরেশন হবে ২ মিনিট ৫ সেকেন্ড। থাকবে হৃতিকের দুর্ধর্ষ সব অ্যাকশন দৃশ্য।

টলিউডও কম যায় না

শুধু বলিউড নয়, টলিউডও ইদানীং ট্রেলর লঞ্চের হুজুগে মেতেছে। হিন্দি ছবির ক্ষেত্রে যে সংখ্যাটা কোটিতে গিয়ে থামে, টলিউডে তা এখন লাখের মধ্যেই সীমিত থাকছে। তবে ট্রেলর হাউস নয়, ৯৯ শতাংশ বাংলা ছবির ট্রেলর আজও ফিল্ম এডিটর বা পরিচালকরাই তৈরি করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েছে দেব-শ্রাবন্তী-তনুশ্রী অভিনীত ‘বুনো হাঁস’-এর ট্রেলর। ট্রেলরটি তৈরি করেছেন পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। এখনও পর্যন্ত হিটের সংখ্যা ১,০২,৭১৬। ৮ মার্চ মুক্তি পেয়েছিল স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অভিনীত ‘টেক ওয়ান’-এর ট্রেলর। ছবির বিষয়বস্তু ছিল বিতর্কিত। আর সেই বিতর্ক নিয়েই ডকুমেন্টারি ধাঁচে এমন ট্রেলর তৈরি হয়েছিল যার মেকিংয়ের মধ্যেও ছিল নতুনত্বের ছোঁয়া। সে ট্রেলরের ভিউয়ের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ২,৮০,৯৪৬! গত বছর মাত্র ৫৮ লক্ষ টাকায় তৈরি ‘ফড়িং’-এর ট্রেলরের হিট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯১,০০০-য়ে। “তারকাদের ছবির ট্রেলরের হিট থাকাটা স্বাভাবিক। সেই তুলনায় ‘ফড়িং’য়ের মতো নন-স্টারার একটা ছবির ট্রেলরের গণমাধ্যমে এহেন জনপ্রিয়তা খুবই আশাব্যঞ্জক,” বলছেন ‘ফড়িং’য়ের পরিচালক ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী।

গ্রেস মার্কিংয়ের বিড়ম্বনা

ছিদ্রান্বেষীরা অবশ্য এই ট্রেলর-হাইপ সম্পর্কে একটা প্রশ্ন তুলছেন। যে ভাবে ফেসবুক-এ যে কোনও পোস্টকে অর্থের বিনিময়ে প্রোমোট করে তার ‘লাইক’য়ের সংখ্যা বাড়ানো যায়, ইউটিউব-এ কি একই ভাবে ভিউয়ারশিপও বাড়ানো সম্ভব? অনলাইন নানা ধরনের ফেক ওয়েবসাইট পাওয়া যায়, যেখানে ডলারের বিনিময়ে ফেক কমেন্টস আর ভিউজ বাড়িয়ে দেওয়া হয়! প্রযোজক হিমাংশু ধানুকা বলছেন, ফেক ভিউয়ারশিপ আতঙ্কের জন্য আজকাল ইউটিউব ভীষণ তৎপর হয়ে পড়েছে। “এই তো সে দিন একটা লেখা পড়লাম যেখানে ইউটিউব-এর তরফ থেকে বলা হয়েছে যে অথেনটিসিটি বাড়ানোর জন্য রেগুলারলি ভিউজগুলো অডিট করা শুরু করেছে। স্টিং অপারেশনও শুরু করেছে এগুলো আটকানোর জন্য।”

ট্রেলর আর যৌনতা

ইন্টারনেট এমন একটা মিডিয়াম যেখানে যৌনতা সম্পর্কিত বিষয়ের কাটতি বেশি। ট্রেলরে উত্তেজক দৃশ্য থাকলে তার জনপ্রিয়তা এমনিতেই বাড়তে থাকে। তবে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য দিয়ে হিট ট্রেলর তৈরি করলেই বক্স অফিসে সাফল্যের গ্যারান্টি নেই। একই ট্রেলরের বিভিন্ন ভার্সান তৈরি করা হয় টেলিভিশন, থিয়েটার আর ইন্টারনেটের জন্য। ইন্টারনেটে রেসট্রিকশন কম। তাই ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রাখতে অসুবিধে নেই। কিন্তু ভাল ট্রেলর হলে সেখানে এক মিনিট ধরে শুধুমাত্র যৌনদৃশ্য থাকলেই চলবে না। দর্শকের উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে হবে। ঠিক যে ভাবে ‘ফিফ্টি শেডস্ অব গ্রে’তে করা হয়েছে। ইরোটিক নভেলের অনুপ্রেরণায় ছবি। কিন্তু ঘনিষ্ঠ দৃশ্যগুলো অনেকটা ঠিক শেষ পাতে চাটনির মতো পরিবেশন করেছেন ট্রেলরে। “সানি লিওনের ‘রাগিনি এমএমএস ২’য়ের ট্রেলর বানিয়েছিলাম আমরা। ছবিতে যৌনতা থাকলেই সব ট্রেলর ভর্তি শুধু সেক্স দৃশ্য ব্যবহার করিনি। এমন একটা ব্যালেন্স আনা দরকার যা কনটেন্টের সঙ্গে মিলে যায়,” বলছেন রবি।

সংখ্যা শেষ কথা নয়

তবে পরিসংখ্যান যা-ই হোক না কেন, শুধু কত লাখ পেরলো তা দেখলেই চলবে না। তিন কোটি টাকার ছবির ট্রেলর যদি এক লাখ ভিউজ পেরিয়ে যায় তা হলে তা নিঃসন্দেহে ৬ কোটি টাকার ফিল্ম ট্রেলরের দেড় লাখ ভিউয়ারশিপের থেকে তারিফযোগ্য। ইনভেস্টমেন্টের ভিত্তিতে যে ভাবে বক্সঅফিস সাফল্যের হিসেব করাটা দরকার সেই পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত ট্রেলর ভিউয়ের রেকর্ড যাচাইয়ে।

এটাও ঠিক যে, ট্রেলর হিট হয়েও ছবি বক্স অফিসে ভাল করতে পারেনি। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ কোমল নাহাতা জানাচ্ছেন, ট্রেলর হিটকে এখনই ফিল্মের হিটের মাপকাঠি হিসেবে ধরতে রাজি নন। বলছেন, “পরিচালকরা আগের থেকে অনেক বেশি জোর দিচ্ছেন ট্রেলরের উপর। কত জন ট্রেলর দেখছেন তা দিয়ে বুঝতে পারি একটা ছবি কী ধরনের ওপেনিং নেবে, ছবিটার সম্পর্কে কী ধরনের আগ্রহ রয়েছে।”

হোমি অবশ্য মনে করেন, ট্রেলরের থেকে মিউজিক প্রোমোতে বেশি আকর্ষণ দর্শকের। দু’বছর আগে হোমি-র পরিচালিত ‘ককটেল’য়ের ট্রেলর দেখেছিল ৫১ লাখ দর্শক।

কিন্তু সে ছবির ‘তুমহি হো বন্ধু’র ভিডিয়োটা দেখেছিল দেড় কোটির বেশি মানুষ।

হোমির সঙ্গে গলা মিলিয়ে ফিল্ম দুনিয়ার অনেকেই বলেছেন যে ওপেনিং উইকএন্ডের পরে একটা ছবি কনটেন্টের জোরেই চলে। যত জনপ্রিয় ট্রেলর বা গানের ভিডিয়ো হোক না কেন সেখানে দর্শক টানতে

গেলে একটাই ‘কিক’ প্রয়োজন। তা হল ছবির দম।

নেট লাভ

• ‘টেক ওয়ান’

২,৮০,৯৪৬ হিটস

• ‘চাঁদের পাহাড়’

১,১১,৫৩৯ হিটস

• ‘মিশর রহস্য’

১,৬৮,৫৭৪ হিটস

•‘গয়নার বাক্স’

৩,১৮,৪৩৬ হিটস

• ‘মেঘে ঢাকা তারা’

১,৩১,২৪৫ হিটস

•‘বস’

৪,০৪,৯৮৯ হিটস

•‘অলীক সুখ’

১,৫৭,৪৪৪ হিটস

(২৬ জুলাই, সন্ধে ৭টা পর্যন্ত)

internet trailer priyanka dasgupta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy