Advertisement
E-Paper

প্রেম-ঈর্ষার পারাপার

দুই নায়িকার দাপুটে অভিনয় দর্শক মনে রাখবেন। লিখছেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়।গ্রামের মানুষ গোপাল (ব্রাত্য বসু) গড়পড়তা জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে বড়লোক বন্ধুর দালালি করে, প্রোমোটারি ব্যবসায় কারচুপি চালিয়ে গ্রামের সব চেয়ে সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করে জানতে পারে যে সে মেয়ে আসলে তার বোন। ভেঙে যায় তার সংসার। জীবনে সব কিছুকেই বিকৃত করে দেখতে থাকে সে।

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০০
‘পারাপার’ ছবির একটি দৃশ্য।

‘পারাপার’ ছবির একটি দৃশ্য।

গ্রামের মানুষ গোপাল (ব্রাত্য বসু) গড়পড়তা জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে বড়লোক বন্ধুর দালালি করে, প্রোমোটারি ব্যবসায় কারচুপি চালিয়ে গ্রামের সব চেয়ে সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করে জানতে পারে যে সে মেয়ে আসলে তার বোন। ভেঙে যায় তার সংসার। জীবনে সব কিছুকেই বিকৃত করে দেখতে থাকে সে।

আর এক জন মানুষ রুদ্রনাথ (রুবেল) ধর্ষণ আর খুনের দায়ে চোদ্দো বছরের জেল খাটে। জেল ফেরত রুদ্রনাথ দেখে বদলে গিয়েছে তার স্ত্রীর মুখের ভাষা। ছেলে তাকে রেপিস্ট বলে। কিন্তু ছেলে নিজে বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে অশালীন আচরণ করে বেড়ায়। মেয়ে পথে নামে ধর্ষণবিরোধী মৌন মিছিলে। সত্যি কি খুন করেছিল সে? রুদ্রনাথ আর গোপালকে ঘিরে মতি নন্দীর ‘পুবের জানলা’ কাহিনি অবলম্বনে সঞ্জয় নাগ প্রেম-বিরোধ-ঈর্ষা এবং বন্ধুতার কথা বলেছেন তাঁর প্রথম বাংলা ছবি ‘পারাপার’এ।

ছবিতে দামিনী (ঋতুপর্ণা) আর ঊর্মিলার (পাওলি) দাপুটে অভিনয় দর্শকদের বহু দিন মনে থাকবে। কখনও অল্পবয়সি গ্রামের মেয়ে, কখনও বা ক্ষত ভরা, বিধ্বস্ত, ক্লান্ত ঊর্মিলা, পাওলির দক্ষ অভিনয়ে জীবন্ত হয়ে ওঠে। অন্য দিকে দামিনী চরিত্রে ঋতুপর্ণার পেলব, স্বাভাবিক অভিনয় ছবিটিকে বাস্তব করে তুলেছে। বাস্তব এবং স্বপ্নের দৃশ্যে ব্রাত্য বসু গোপালের চরিত্রটিকে তাঁর শরীরী ভাষা ও ভঙ্গিমায় যে ভাবে ভেঙেছেন তা এক কথায় অসাধারণ। ভাল লাগে সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়কে। ‘রুদ্র’-র চরিত্রে মানিয়ে গেলেও রোম্যান্টিক দৃশ্যে রুবেলকে খানিক আড়ষ্ট লাগে।

ছবিটা দেখতে দেখতে প্রশ্ন জমতে থাকে দর্শকদের মনেও। তবে কি ধর্ষণ হয়েছিল? নিজে একজন ধর্ষক হয়েও রুদ্রনাথ বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে অশালীন আচরণের জন্য নিজের ছেলের বিরুদ্ধে গেল কেন? ঊর্মিলাও জেল ফেরত রুদ্রনাথকে সহজে কেন মেনে নিল? আর গোপাল ছবির শুরুতে বিচারক হয়ে ফাঁসির হুকুম জানাল কেন? টানটান চিত্রনাট্যে খুলতে থাকে প্রশ্নের জাল।

সিনেমাটোগ্রাফার ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়ের কাজ নজর কাড়ে। বনেদি বাড়ির মরচে পড়া অন্ধকার থেকে নদী ঘেরা গ্রামীণ জীবন ছবির ভাঙা-গড়াকে ধরে রেখেছে। চিত্রনাট্যের দক্ষতায় ছবির সাসপেন্স জমে ওঠে। পরিচালক সঞ্জয় নাগকে এই জন্য সাধুবাদ। ছবিতে ‘প্রেমময় বনমালী’ গানটির ব্যবহার দুই সঙ্গীত পরিচালকের দক্ষতাকে প্রকাশ করে। সৌম্যজিত্‌ আর সৌরেন্দ্রর আবহ ছবির ঘটনায় নানা মোড় তৈরিতে সাহায্য করলেও কোথাও কোথাও মনে হচ্ছিল শ্রীজাতর শব্দে মোড়া গানগুলো যেন আলাদা করে, কেবল গান হিসেবে বেশি ভাল লাগছে।

ছবি জুড়ে ধর্ষণের নানা মন্তাজ দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল পরিচালক কি শুধুই ধর্ষণ বিরোধী ছবি তৈরি করতে চেয়েছিলেন? তাহলে ধর্ষকের স্ত্রী দামিনীর প্রতিক্রিয়া এ ছবিতে আরও বেশি প্রয়োজন ছিল। ধর্ষণ থাকলেই কি বাংলা ছবি বেশি চলে? এ ছবির বাণিজ্যিক হিসেবনিকেশ তো তেমন বলছে না।

srobonti bandopadhay Movie Reviews Parapaar Paoli Dam Rituparna Sengupta Bengali Movie
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy