Advertisement
E-Paper

এ বারে এ কোন অক্ষয় তৃতীয়া এল মৃত্যুর বুক চিরে?

এই উৎসব আমাদের মতো পরিবারভিত্তিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছে দুর্গাপুজোর চেয়ে কোনও অংশে কম ছিল না।

টোটা রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২০ ১৯:০০
অক্ষয় তৃতীয়া মানেই আমার কাছে মিষ্টি খাওয়া।

অক্ষয় তৃতীয়া মানেই আমার কাছে মিষ্টি খাওয়া।

বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের সব শো রুমে ধূপধুনো পুজোর গন্ধ। ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না হলেও কলেজে পড়ার সময় থেকে আমি বাধ্য ছেলের মতো অক্ষয় তৃতীয়ার দিন শো রুমে হাজির।

এই উৎসব আমাদের মতো পরিবারভিত্তিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছে দুর্গাপুজোর চেয়ে কোনও অংশে কম ছিল না। বাবা-কাকাদের কাছেই শোনা, বৈদিক বিশ্বাসানুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোনও শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। সেই বিশ্বাসে আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রথম হালখাতা খোলা হত, সারা বছরের কল্যাণের আশায়।

এই উৎসব বাড়ি নয়, শো রুম ঘিরেই চলত। বাবা-কাকারা বিভিন্ন শোরুমে ঘুরতেন।প্রচুর অতিথি আসতেন সে দিন। তাঁদের তো ডিসকাউন্ট দেওয়া হতই, তা ছাড়া আমাদের পুরনো কাস্টমারদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হত। দেখতে গেলে বেশ জমজমাট ব্যাপার। সে দিন আমাদের দোকানের কর্মীদের জন্য থাকত স্পেশাল লাঞ্চ। আর অনেক রাত অবধি শো রুম খোলা থাকত বলে দেখেছি মহিলা কর্মীদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হত।

এই দিনে আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রথম হালখাতা খোলা হত, সারা বছরের কল্যাণের আশায়

পুজোপার্বণে বরাবর আমাদের বাড়িতে নিরামিষ রান্নার চল। তাই ওই দিন শুধু রকমারি মিষ্টিই আমার উদরকে আনন্দ দিতে পারত। সে সময়ে খুব মিষ্টি খেতে ভালবাসতাম।অক্ষয় তৃতীয়া মানেই আমার কাছে মিষ্টি খাওয়া। সে দিন বাড়িতে নিরামিষ হলেও তার পরের রবিবার আমাদের জমায়েত হত বাড়িতে। সাত-আট রকমের বাঙালি পদ, মিষ্টি সহযোগে আমরা যৌথ পরিবারের সব্বাই উদরের অক্ষয়কে সুনিশ্চিত করতাম।

কিন্তু এ বার? সব শোরুম বন্ধ। আহা! যদি অক্ষয় তৃতীয়ার দিন পুজোটা করা যেত? ১৯৪৫সালে আমাদের প্রথম শোরুম তৈরি হয়। দেশ তখনও স্বাধীন হয়নি।তারপরেও তো দেশে মহামারি এসেছে, বিপর্যয়, প্রলয়...কই, অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো তো কোনওদিন বন্ধ হয়নি! এ বার বড্ড মন খারাপ করছে। ওই জোর করে মুখ বন্ধ করে দেওয়া শোরুমগুলো, যা এক সময় আমাদের পরিবারের সকলের কাছে বাড়ির চেয়েও প্রিয় ছিল। কত ঝলমলে সময় কাটিয়েছি আমরা! অথচ আজ চাইলেও সেখানে যেতে পারব না।

ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে মানুষ এ ভাবে নিজেদের শেষ করে দিচ্ছে? এ কোন অক্ষয় তৃতীয়া এল মৃত্যুর বুক চিরে?

Tota Roy Chowdhury Tollywood Akshaya Tritiya 2020 Halkhata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy