‘বাংলা শেখা, নয় মুখের কথা।’—এই বাক্যটি যেন শুধু একটি কথা নয়, একটি সত্য। বাংলা ভাষা শিখতে যেমন দরকার মনোযোগ ও অধ্যবসায়, তেমনই প্রয়োজন ভালবাসা ও যত্ন। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, প্রযুক্তির জগতে বাংলা শেখার সুযোগ যেমন বেড়েছে, তেমনই চ্যালেঞ্জও বেড়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ভদ্রেশ্বর ধর্মতলা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহশিক্ষিকা মনামী সরকার দাস বলেছেন, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (বাংলা মিডিয়াম) শিক্ষকতা করার সুবাদে, প্রায়শই কিছু মনে রাখার মতো ঘটনার সাক্ষী হতে হয়। বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীই অবাঙালি এবং দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারী জুট মিল শ্রমিক পরিবার থেকে আসে। কখনও, প্রাক্ প্রাথমিকের ছোট্ট আসিফা বাংলা শব্দ লিখতে না পেরে দু’চোখ ভরা জল নিয়ে বলে, আমার এটা আসে না, মাম্মি না শিখায়ি...তো।”
“আবার কখনও চতুর্থ শ্রেণীর ওড়িয়া মেয়ে আইশা লিখে নিয়ে আসে, কাল সকালো যখন ইস্কুলে আসছিলু। চ্যালেঞ্জটা তখন নিয়েই ফেলি। ওরা আপ্রাণ চেষ্টা করে শিখতে, আর আমি চেষ্টা করি শেখাতে। তবে শুধু ওরাই নয়, বাঙালি পরিবারের মেয়েরাও কিছু কম যায় না। বাংলা ভাষার এমন এক নড়বড়ে ভিত নিয়ে ওরা আমাদের কাছে আসে, তখন সেই ভিতকে আবার নতুন করে মজবুত ভাবে গড়ে তোলাই হয় আমাদের প্রথম কাজ।”
“তাই যখন বাঙালি মেয়ে সবিতা অজস্রবার বলার পর ঠিক করে লিখে আনে, আমি লাল জামা পরে, পড়তে যাব বা আসিফা হাসি হাসি মুখে ন দিয়ে দুটো শব্দ লিখে এনে দেখায়, আর আইশা যখন আমার জন্মদিনে ছয় লাইনের পরিষ্কার বাংলায় লেখা মিষ্টি একটা কবিতা উপহার দেয়, তখন নিজেকে মনে হয় সেরার সেরা! অসাধ্য সাধন না হলেও, অনেকখানি কঠিন একটা চ্যালেঞ্জ জিততে পেরেছি। আমার মাতৃভাষা আর কাজের প্রতি এভাবেই আমার কর্তব্য পালন করে চলি।”
পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি জেলার ২৫০টিরও বেশি স্কুলে আনন্দবাজার ডট কম আয়োজিত ‘শব্দ-জব্দ ২০২৫’ শুরু হয়েছে। এই প্রচেষ্টায় আমাদের সহযোগিতা করছে আনন্দবাজার ডট কম আয়োজিত ‘শব্দ-জব্দ ২০২৫’-এর পার্টনাররাও। এই উদ্যোগ সফল করার পেছনে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। ‘প্রেজ়েন্টিং পার্টনার’ ইআইআইএলএম কলকাতা। ‘পাওয়ার্ড বাই পার্টনার’ ট্রেন্ডস এবং সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি। এ ছাড়াও, ‘স্ন্যাকস্ পার্টনার’ কিকু নুডুলস্, ‘ফুড পার্টনার’ মনজিনিস এবং ‘নলেজ পার্টনার’ শব্দবাজি।