শীত পড়ার আগের এই সময়টায় বাজারে পানিফল পাওয়া যায়। মিষ্টি স্বাদের এই ফল হয় মূলত জলা জায়গায়। হয়তো সে জন্যই নামেও রয়েছে ‘জল'। সারা বছর এই ফল মেলে না। তবে মরসুমে হাতের কাছে পেলে এই ফল ছাড়া উচিত নয়। কারণ, এ ফলের উপকারিতা অনেক।
জলে হওয়ায় পানিফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। প্রতি ১০০ গ্রামে ৫৮৪ মিলিগ্রাম। এ ছাড়া রয়েছে শরীরের জন্য জরুরি অনেক রকমের পুষ্টিগুণ। প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬, ম্যাঙ্গানিজ় এবং কপারও। এই সমস্ত পুষ্টিগুণের জন্য এই ফল শরীরের নানা জটিল রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ লিমা মহাজন প্রায়ই তাঁর মতামত জানিয়ে থাকেন সমাজমাধ্যমে। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন পানিফল খেলে কী কী উপকার হতে পারে।
১। হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে:এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এবং রক্তনালী শিথিল করতে সাহায্য করে। বাইরে তেলমশলা জাতীয় খাবার খেয়ে শরীরে যে অতিরিক্ত মাত্রায় সোডিয়াম যায়, যা হার্টের রোগের কারণ হতে পারে, তার প্রভাব কমাতে পারে পটাশিয়াম। ফলে পানিফল খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো মারণ রোগের ঝুঁকি কমে।
২। প্রদাহ হ্রাস করে: পানিফল ফেরুলিক অ্যাসিড, ফাইসেটিনেপরের মতো অ্যান্টি- অক্সিড্যান্টে ভরপুর, যা ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত করে এবং শরীরের প্রদাহ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩। ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: এটি কম ক্যালোরি এবং বেশি ফাইবারযুক্ত ফল। তাই এটি খেলে পেট দীর্ঘ সময় ভরা থাকে এবং বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।
৪। জলের ঘাটতি মেটায়: এতে জলের পরিমাণ অনেক বেশি, যা শরীরের জলীয় ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
৫। হজম ক্ষমতা উন্নত করে: এর ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে ভাল রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
৬। লিভার ভাল রাখে: এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট লিভারকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করে। যা লিভারের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। সেই সঙ্গে লিভারের স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
৭। টিউমার বাড়তে দেয় না: এতে থাকা ফেরুলিক অ্যাসিড কিছু বিশেষ ধরনের ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির হার মন্থর করতে পারে বলেও জানাচ্ছেন লিমা। তবে তিনি বলছেন, এই বিষয়টি এখনও গবেষণাধীন।