বাতের ব্যথা এখন আর বয়স হলেই হয় না। আর্থ্রারাইটিস বা বাতের সমস্যায় ভুগছেন কমবয়সিরাও। সেই আর্থ্রারাইটিসের একটি ধরন হল গাউট। যা এক ধরনের প্রদাহজনিত বাত। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘ইনফ্লেমেটারি আর্থ্রারাইটিস’। আর এটি হয় শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে।
আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ আর্থ্রারাইটিস অ্যান্ড মাস্কিউলোস্কেলিটাল ডিজ়িজ এই গাউটের একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারা বলছে, গাউট বা গেঁটে বাত তখনই হয়, যখন শরীরের বিভিন্ন অংশে ইউরিক অ্যাসিডে থাকা এক ধরনের নুন, যাকে ইউরেট বলা হয়, তা সরু স্ফটিকের আকারে জমা হতে থাকে। এই ধরনের ইউরেটের স্ফটিক জমা হয় মূলত অস্থিসন্ধির চারপাশেই। আর তা থেকে গাঁট বা অস্থিসন্ধির চারপাশে তৈরি হয় প্রদাহ। যা থেকে ব্যথা হয়।
গাউটের সমস্যা হলে পায়ের পাতার বুড়ো আঙুলের অস্থিসন্ধি ফুলে যেতে পারে, সেখানে মারাত্মক ব্যথা হতে পারে। পাশাপাশি, যন্ত্রণা হতে পারে অন্যান্য অস্থিসন্ধিতেও। তবে, গাউটের সমস্যা পায়েই হয় বেশি। ইউরিক অ্যাসিড থেকে হওয়া এই সমস্যা আগে থেকে সতর্ক হলে আটকানো সম্ভব। বিশেষ করে এনআইএএমএস বলছে, ইউরিক অ্যাসিড জমতে শুরু করলেই যে শরীরে গেঁটে বাত দেখা দেবে তা নয়। অনেক সময় দীর্ঘ দিন ধরে জমতে জমতে এই সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আগে থেকে জানা গেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। কিন্তু ইউরিক অ্যাসিড বাড়ছে কি না, বুঝবেন কী ভাবে?
১। অস্থিসন্ধি
শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধি, যেমন হাত এবং পায়ের গাঁটে কিংবা হাঁটুতে ব্যথা হতে থাকলে এবং তা সহজে না সারলে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা উচিত। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে এমনটা হয়ে থাকে।
২। প্রস্রাবের রং
ঘোলাটে অথবা গাঢ় রঙের প্রস্রাবও হতে পারে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে।
৩। কিডনি
ইউরিক অ্যাসিড জমতে পারে কিডনিতেও। সে ক্ষেত্রে কোমরে ব্যথা, পেট অথবা পিঠের দু’পাশে ব্যথা, পেটে ব্যথাও হতে পারে। এই ধরনের ব্যথা কিডনি স্টোনের কারণেও হতে পারে। আর কিডনিতে পাথর জমার কারণও হতে পারে ইউরিক অ্যাসিড।
৪। হাইপার টেনশন, ক্লান্তি, জ্বর
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অনেকটা বেড়ে গেল উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে। যা থেকে কিডনি অচল হয়ে যেতে পারে। রক্তজালিকাগুলি নষ্ট হতে পারে। এমনকি, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকলে জ্বরও আসতে পারে। থাকতে পারে টানা ক্লান্তিবোধ।
৫। ত্বকের সমস্যা
ত্বকে খসখসে ভাব দেখা দিতে পারে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে। প্রদাহের কারণে ত্বকে জ্বালা ভাব, র্যাশ, চামড়া উঠে আসা, চুলকানির মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।