Advertisement
E-Paper

গিয়ান-ব্যারেতে প্রথম মৃত্যু মুম্বইয়ে, দুই পা অসাড় হয়ে গিয়েছিল ব্যক্তির, কতটা বিপজ্জনক হতে পারে রোগ?

মুম্বইয়ে প্রথম গিয়ান-ব্যারে ধরা পড়ে ৬৪ বছরের এক বৃদ্ধার শরীরে। জ্বর এবং ডায়েরিয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি। পরে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন ওই বৃদ্ধা। মহারাষ্ট্রের নানা জায়গায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ১৯২ জনের শরীরে গিয়ান-ব্যারের উপসর্গ রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৫০
53-year-old Mumbai man dies of Guillain-Barre Syndrome, First GBS fatality in Mumbai

গিয়ান-ব্যারে রোগের কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে? ফাইল চিত্র।

গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোমে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটল মুম্বইয়ে। ওয়াডালা এলাকার ৫৩ বছরের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ওই বিরল স্নায়ুর রোগে। মহারাষ্ট্রে এই নিয়ে গিয়ান-ব্যারেতে মৃতের সংখ্যা পৌঁছল সাত জনে। মুম্বইয়ে এই প্রথম।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তি ওয়াডালা এলাকার বাসিন্দা। গত ২৩ জানুয়ারি তাঁকে নায়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। জ্বর ও দুই পায়ে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। প্রথমে বোঝা যায়নি, তিনি গিয়ান-ব্যারেতে আক্রান্ত। পরে ধীরে ধীরে উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির দুই পা ক্রমশই অসাড় হয়ে যাচ্ছিল। পাশাপাশি, শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখতে হয়। শেষ পর্যন্ত শরীরের নিম্নভাগ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে ওই ব্যক্তির। গতকাল তাঁর মৃত্যু হয়। মুম্বইতে প্রথম গিয়ান-ব্যারে ধরা পড়ে ৬৪ বছরের এক বৃদ্ধার শরীরে। জ্বর এবং ডায়েরিয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি। পরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। রাজ্যের নানা জায়গায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ১৯২ জনের শরীরে গিয়ান-ব্যারের উপসর্গ রয়েছে বলে সন্দেহ। মনে করা হচ্ছে, তাঁরাও ওই স্নায়ুর বিরল রোগেই আক্রান্ত। রোগীদের রক্ত ও লালার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া-জনিত যে কোনও সংক্রামক রোগ হলে তা থেকে গিয়ান-ব্যারে হতে পারে। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগ অথবা অন্ত্র বা খাদ্যনালির সংক্রমণ হলে তা থেকেও গিয়ান-ব্যারের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এই রোগ হলে মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড— দুই জায়গার স্নায়ুই দুর্বল হতে শুরু করে। রোগে আক্রান্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে শুরু করে। রোগীর মুখ দিয়ে অনবরত লালা ঝরতে থাকে, মুখ বেঁকে যায় এবং রোগের বাড়াবাড়ি হলে রেসপিরেটারি প্যারালিসিস বা শ্বাসযন্ত্র পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়। তখন অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হয় রোগীকে।

ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি নামক ব্যাক্টেরিয়া তো বটেই, সাইটোমেগালোভাইরাস নামে আরও একটি ভাইরাস গিয়ান-ব্যারের জন্য দায়ী। তা ছাড়া আক্রান্তদের শরীরে নোরোভাইরাসও পাওয়া গিয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগীদের শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা বা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তা ছাড়া হাত ও পায়ের আঙুলে ব্যথা, হাত নাড়াতে কষ্ট, পায়ের পেশিতে টান ধরা, হাঁটাচলা করতে না পারার মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ধীরে ধীরে শরীরের নিম্নভাগ অসাড় হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, গিয়ান-ব্যারে গোড়াতেই ধরা পড়লে তার চিকিৎসা ‘ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন’ (আইভিআইজি) ও প্লাজ়মা থেরাপিতে করা সম্ভব। তবে রোগ সারতে অনেক দেরি হয়। বহু জনের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়ায় অনুমান করা হচ্ছে, বাসি-পচা খাবার, রাস্তার জল-শরবত বা যে কোনও পানীয় থেকে রোগ ছড়াচ্ছে। দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য থেকেও ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া ছড়াতে পারে। তাই পনির, চিজ়, মাখন কেনার সময়েও সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকেরা।

Mumbai Guillain-Barré syndrome Maharashtra autoimmune disorders Rare Disease Nervous System
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy