Advertisement
E-Paper

খাওয়ার পরে কী ভাবে শুচ্ছেন, তার উপরেও কি নির্ভর করে রক্তে শর্করার ওঠাপড়া!

খাওয়ার পরে কী ভাবে শুচ্ছেন বা বিশ্রাম নিচ্ছেন, তার উপরে কি রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠাপড়া করতে পারে। যা পরোক্ষে প্রভাব ফেলতে পারে হার্ট, কিডনি, লিভার এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যে?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৯:৫৮

গ্রাফিক— আনন্দবাজার ডট কম।

পেট ভরে খাওয়ার পরে একটু বিছানায় গড়িয়ে নেওয়ার সুখ কী, তা বাঙালি ছাড়া আর কে জানে! বাইরে যখন ঝমঝমে বৃষ্টি, তখন দুপুরের খাওয়াদাওয়া সেরে সুযোগমতো বালিশ জড়িয়ে ভাতঘুম অনেকের কাছেই আরামের শেষ কথা। কেউ আবার দিনশেষে ক্লান্ত শরীরে রাতের খাবার খেয়েই টানটান হন বিছানায়। ঘুমোনোর আগে নানা আরামদায়ক ভঙ্গিমায় বিশ্রাম নেন।

আধশোয়া হয়ে মোবাইলে চোখ রাখেন কেউ, কেউ আবার সোফায় হেলান দেওয়ার মতো করে হেলান দিয়ে পা দু’টি ছড়িয়ে রাখেন টানটান করে। কিন্তু খাওয়ার পরে বিশ্রাম নেওয়ার এই যে নানা ভঙ্গি, তার প্রভাব কি রক্তের শর্করার মাত্রায় পড়ে?

সম্প্রতি ইন্টারনেটে বেশ কিছু ভিডিয়োয় দাবি করা হয়েছে, খাওয়ার পরে বিশ্রামের ভঙ্গি রক্তে শর্করার মাত্রায় প্রভাব ফেলে। এমনকি, এক ধাপ এগিয়ে কেউ কেউ এমনও দাবি করেছেন যে, খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি বিশ্রাম নিতেই হয়, তবে পুরোপুরি না শুয়ে শরীরের ঊর্ধ্বাঙ্গ যদি ৩০-৪৫ ডিগ্রি কোণে উঁচু করে রাখেন তবে রক্তে শর্করার মাত্রা ঝপ করে বাড়বে না!

এই দাবি কতটা সত্যি? চিকিৎসকেরা কী বলছেন?

১। নিষ্ক্রিয়তার আবার ভঙ্গি কী!

ডায়াবিটিস বিষয়ক এবং ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক অমিতাভ সাহা মনে করেন, শোওয়ার ভঙ্গির সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি স্পষ্টই বলছেন, “এতে ব্লাড সুগারে কোনও প্রভাব পড়ে না।” তিনি বলছেন, “খাওয়ার পরে যে কোনও সেডেন্টারি বিহেভিয়ার বা শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাই সমস্যা তৈরি করতে পারে। কেউ যদি খাওয়ার পরেই শুয়ে পড়েন, তা সে যে ভাবেই শোন না কেন, তবে রক্তে শর্করা বাড়তে পারে। কারণ তাতে খাবারের শর্করা ভাঙার স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।”

২। ঘুরপথে অঙ্কে মিল!

অমিতাভের সঙ্গে কিছুটা একই মত জেনারেল মেডিসিনের চিকিৎসক শ্রীনিবাস চারি-র। তিনি বলছেন, “বিশ্রামের ভঙ্গিভেদে রক্তে শর্করা বৃদ্ধির কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তবে চাইলে দু’টি বিষয়ের মধ্যে একটি সম্পর্ক খুঁজে বার করা যেতেই পারে।” সেটা কী ভাবে সম্ভব, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন চিকিৎসক। তাঁর কথায়, “পুরোপুরি শুয়ে পড়ার থেকে কেউ যদি ৩০-৪৫ ডিগ্রি কোণে হেলে বসে থাকেন, তবে খাবার পাকস্থলি থেকে অন্ত্রে দ্রুত পৌঁছোতে পারে। তাতে খাবার থেকে পুষ্টি আহরণের মাত্রা বাড়বে। আর খাবারের সমস্ত ভিটামিন, খনিজ আর ফাইবার শরীরে ঠিক পরিমাণে গেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অকস্মাৎ না-ও বাড়তে পারে।” অর্থাৎ অঙ্কের ফল হয়তো মিলবে, কিন্তু ঘুরপথে।

৩। অ্যাসিড কমলে ঘুম বাড়বে, তার পরে?

ইন্টারনাল মেডিসিনের আরও এক চিকিৎসক মনীষা অরোরা অবশ্য মনে করেন, ঘুরপথে হলেও বিশ্রামের ভঙ্গির প্রভাব পড়ে শর্করার মাত্রায়। তিনি বলছেন, “পুরোপুরি শুয়ে বিশ্রাম না নিয়ে যদি শরীরের ঊর্ধ্বাঙ্গ অল্প হেলিয়ে বিশ্রাম নেওয়া যায়, তবে যাঁদের অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা আছে, তাঁদের ওই সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি কমবে। ফলে ঘুম ভাল হবে। ঘুম ভাল হলে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকলে বিপাকক্রিয়া ভাল হবে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা থাকবে নিয়ন্ত্রণে।” বিষয়টি দীর্ঘসূত্রী নিঃসন্দেহে। তবে একেবারে এড়ানোও যায় না।

আসলে রক্তে শর্করার মাত্রার অকস্মাৎ ওঠানামার নানা ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে শরীরে। বিশেষত হার্ট, কিডনি, লিভার, এমনকি চোখেরও ক্ষতি হতে পারে।

ক্ষতি এড়াতে কী করবেন?

ডায়াবিটিসের চিকিৎসক অমিতাভ বলছেন, নিশ্চিন্ত হতে খাওয়ার পরে আধ ঘণ্টা শুয়ে বা বসে বিশ্রাম না নেওয়াই ভাল। বদলে হালকা হাঁটাহাটি করুন মিনিট তিরিশ। বা ঘরের মধ্যেই কোনো এ জায়গায় বিশ্রাম না নিয়ে এ দিক ও দিক ঘুরতে পারেন। আধ ঘণ্টা পরে বসে বিশ্রাম নিন। অন্তত এক ঘণ্টা পরে শোওয়া উচিত।

Effect of Sleeping Position Blood Sugar Spike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy