শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা— শরীর সুস্থ রাখতে জলই ভরসা। আসলে জল শুধু তেষ্টা মেটায় না শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শরীরে জলের মাত্রা কমে গেলে বিপদ হতে পারে মারাত্মক।
আরও পড়ুন:
জল খাওয়া জরুরি, তাই নিয়ম করেই জল খাচ্ছেন। কিন্তু জল খাওয়ায় কোনও ভুল হচ্ছে না তো?
সকালে উঠেই ২-৩ গ্লাস জল: ঘুম থেকে উঠে প্রস্রাব করা জরুরি। একই সঙ্গে জল খাওয়াও। পুষ্টিবিদেরা বলেন, জল খেলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায়। ভাল হয়, যদি হালকা গরম জল খাওয়া যায়। কিন্তু কতটা? চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ঘুম থেকে এক গ্লাস জলই যথেষ্ট। তেষ্টা না মিটলে আরও আধ বা এক গ্লাস। কিন্তু অনেকেরই ধারণা, ঘুম থেকে উঠে ২-৩ গ্লাস জল ঢকঢক করে খেয়ে ফেললেই বুঝি শরীর ভাল থাকে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, মোটেই তা নয়। জল খাওয়া দরকার আধ বা এক ঘণ্টা অন্তর, এক বা আধ গ্লাস।
গরম জল: ঠান্ডা নয়, গরম জলে মধু দিয়ে খাচ্ছেন? কিংবা মেথির জল। চিকিৎসকেরা মনে করাচ্ছেন, গরম জল মানে ঠিক গরম নয়, ঘরের তাপমাত্রার থেকে তা হবে সামান্যই গরম। যাকে বলে ঈষদুষ্ণ। অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম জল— কোনওটাই শরীরের পক্ষে ভাল নয়। তা ছাড়া সকাল সকাল জল-মধু সকলের শরীরের পক্ষে স্বস্তিদায়ক না-ও হতে পারে। ডায়াবিটিসের ওষুধ খেলেও নিয়মিত মেথি ভিজোনো জল খাওয়া চলবে কি না, চিকিৎসকের কাছে জেনে নেওয়া দরকার।
প্লাস্টিকের বোতল: ব্যবহারের সুবিধার জন্য এখন ঘরে ঘরে প্লাস্টিকের বোতল। বোতল সুদৃশ্য হতে পারে, তবে তা স্বাস্থ্যকর নয়। হয় আগেকার দিনের মতো স্টিলের গ্লাসে বালতি থেকে নিয়ে জল খান, না হলে কাচের জগ বা গ্লাস, তামার গ্লাস ব্যবহার করুন। বোতল থেকে জল খেতে গেলে কখনও কখনও গলায় আটকে যেতে পারে। তার চেয়ে চুমুক দিয়ে গ্লাসে জল খান।
খাওয়ার মাঝে জল: এক গ্রাস ভাতের পরই এক চুমুক জল। অনেক সময় সন্তানকে এমন অভ্যাস করিয়ে ফেলেন অভিভাবকেরা। কিন্তু চেষ্টা করা দরকার, জল যেন খাওয়ার খানিক আগে বা পরে খাওয়া হয়। খাওয়ার সময় বেশি জল খেলে পেট ভরে যাবে। তা ছাড়া, হজমের সমস্যাও হতে পারে। তবে খেতে বসে যে একেবারে জল খাওয়া যাবে না, তা নয়। যদি গলায় খাবার আটকে যায় বা খেতে গিয়ে তেষ্টা পায়, এক চুমুক জল খেতেই হবে।