শিঙাড়া-জিলিপি নিয়ে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণের বোর্ড লাগানোর খবর যে পুরোপুরি ঠিক নয়, তা জানিয়েছে কেন্দ্র। একটি নতুন বিবৃতি দিয়ে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, তারা শুধু চায়, দেশের মানুষ শিঙাড়া বা জিলিপির মতো খাবার থেকে কতখানি ফ্যাট বা কতটা চিনি শরীরে যাচ্ছে, তা জেনে খান। কেন্দ্র বলেছে, যেহেতু ভারতীয়দের মধ্যে স্থূলত্বের প্রবণতা বাড়ছে, তাই দেশহিতেই এই উদ্যোগ। শুনে বলিউডের তারকাদের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকরের পাল্টা প্রশ্ন, তাই যদি হবে, তবে যে সমস্ত বেশি-ফ্যাট এবং বেশি-চিনি যুক্ত খাবার প্যাকেটে মুড়ে দেশের দোকানে দোকানে বিক্রি হচ্ছে, সেগুলোকে আটকাচ্ছেন না কেন?
রুজুতা সরাসরিই জানতে চেয়েছেন, ‘‘শিঙাড়া-জিলিপি আপনাদের কোন পাকা ধানে মই দিয়েছে?’’ আলিয়া ভট্ট থেকে শুরু করে করিনা কপূর-সহ বহু বলিউড তারকা তাঁদের ফিটনেস এবং স্বাস্থ্যকর ডায়েটের জন্য ভরসা করেন রুজুতার উপর। সেই তিনি কার্যত প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রের ‘দেশহিতের’ এই উদ্যোগের যথার্থতা নিয়ে। তিনি বলছেন, ‘‘যদি আপনারা দেশের মানুষের স্বাস্থ্যরক্ষার ব্যাপারে এতটাই উদ্যোগী হন, তবে কোলা, চিপস, কুকিজ়-এর মতো খাবারে রাশ টানছেন না কেন?’’
প্যাকেটজাত খাবারই যে অধিকাংশ রোগের কারণ, তা এই প্রথম নয়, এর আগেও বহু বার বলেছেন রুজুতা। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘শিঙাড়া জিলিপি নয়, আগে কেলা-চিপস-কুকিজ়-এর বিক্রিবাটা নিয়ন্ত্রণ করুন। ওই সব খাবারের উপর বেশি করে কর বসান। তাতে কাজের কাজ হতে পারে।’’
গত ২১ জুন কেন্দ্রীয় সরকারর পরিবার এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রকের একটি নির্দেশিকা নিয়ে গোটা দেশে বিতর্ক দানা বাঁধে। খবর ছড়ায়, ধূমপানে ক্ষতির কথা জানিয়ে যেমন সতর্কীকরণ বার্তা দেওয়া হয়, ঠিক সে ভাবেই সতর্কীকরণ বোর্ড লাগানো হবে সরকারি দফতর, স্কুল-কলেজের ক্যাফেটেরিয়া কিংবা খাওয়ার জায়গায়। পরে অবশ্য কেন্দ্র জানায়, কোনও সতর্কীকরণ বোর্ড নয়, তারা তেল এবং চিনির পরিমাণ উল্লেখ করা বোর্ড লাগানোর কথা বলেছে। তাতে যেমন শিঙাড়া-জিলিপিতে থাকা ফ্যাট এবং চিনির পরিমাণ লেখা থাকবে, তেমনই লেখা থাকবে বার্গারের মতো খাবারের কথাও। কেন?
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বক্তব্য ছিল, 'ল্যানসেট' জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী ২৫ বছরে ভারতীয়দের মধ্যে স্থূলত্বের মাত্রা প্রায় তিন গুণের কাছাকাছি বৃদ্ধি পেতে চলেছে। তাই এই ব্যবস্থা। কিন্তু কেন্দ্রের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন রুজুতা।